×

মুক্তচিন্তা

পিলখানা ট্র্যাজেডির দশ বছর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:১০ পিএম

পিলখানায় স্মরণকালের জঘন্যতম সেনা হত্যাযজ্ঞের দিন আজ। ওইদিন বিডিআর বিদ্রোহীরা তথাকথিত দাবিদাওয়া আদায়ের নামে ৫৭ জন মেধাবী ও চৌকস সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। একসঙ্গে এত সেনা কর্মকর্তা প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও নিহত হওয়ার নজির নেই।

নিষ্ঠুরতা, বর্বরতা, অমানবিকতার যত হীন দৃষ্টান্ত বিশ্বে স্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর কাতারে ফেলা যায় এ ঘটনাকে। এদিকে, দশ বছর পূর্ণ হলেও পিলখানা ট্র্যাজেডির বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনরা। সরকারের প্রতিশ্রুতির অন্যান্য সুবিধা পেলেও দীর্ঘদিনে দোষীদের ফাঁসি কার্যকর না হওয়ার আক্ষেপ তাদের।

দিনটিকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন তারা। জঘন্যতম বিডিআর বিদ্রোহ হয় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। ঘটনার দিন সকালে বিডিআরের বার্ষিক দরবার চলাকালে সেখানে ঢুকে পড়ে একদল বিদ্রোহী সৈনিক। তারা তৎকালীন মহাপরিচালকের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে। এরপরই ঘটে যায় সেই নৃশংস ঘটনা।

বিদ্রোহী সৈনিকরা হাতিয়ার নিয়ে সেনা কর্মকর্তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুরো পিলখানায় এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। চারটি প্রবেশ গেট নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আশপাশের এলাকায় গুলি ছুড়তে থাকে তারা। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়।

পরে বিডিআর কম্পাউন্ডে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ কর্মকর্তা, একজন সৈনিক, ২ কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ বিডিআর সদস্য ও ৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হন। ইতিহাসের কলঙ্কজনক এ ঘটনার ফৌজদারি মামলার তদন্ত কাজটাও সহজ ছিল না।

মামলার আলামত মুছে ফেলতে লাশ পুড়িয়ে দেয়া, গণকবর, ম্যানহোলে ফেলে দেয়াসহ নেয়া হয়েছিল বিভিন্ন পদক্ষেপ। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জন বিডিআর সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন বিচারিক আদালত। ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স এবং আপিলের ওপর হাইকোর্ট ২০১৭ সালের নভেম্বরের ২৬ ও ২৭ তারিখে রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এর মধ্যে ১ জন মারা গেছেন। বাকি ১২ জনের মধ্যে ৮ জনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন ও অন্য চারজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। দশ বছর আগে সৃষ্ট বিডিআরের ইতিহাসের ভয়ঙ্কর এ ক্ষত এতদিনে হয়তো অনেকটাই মিলিয়ে এসেছে।

আমরা পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ সেনা অফিসারদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। সেইসঙ্গে দোষীদের দণ্ড দ্রুত কার্যকর হবে বলে আশা রাখছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App