×

জাতীয়

স্বজন খুঁজতে আসা মানুষের আর্তনাদে ভারাক্রান্ত ঢামেক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৩:০৩ পিএম

স্বজন খুঁজতে আসা মানুষের আর্তনাদে ভারাক্রান্ত ঢামেক
পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ৪র্থ সেমিস্টারের ছাত্র তানজিল হাসান রোহানের পুড়ে কয়লা হওয়া একটুখানি দেহাবশেষ খুঁজে পেতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে হাজির হন হাসান খান দম্পতি। ছেলের ছবি নিয়ে আহাজারি করছিলেন তারা। ছেলে হারা এই বাবা-মায়ের আর্তনাদ দেখে সে সময় পুরো মর্গের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। শুধু হাসান খান দম্পতিই নন, পরিচয় শনাক্ত না হওয়াদের পরিবারের আহজারিতে গতকাল শুক্রবার ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে ঢামেক মর্গ। রোহানের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলার মতো পরিস্থিতি না থাকায় কথা হয় চাচা আলমগীর খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৪ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় ছিল রোহান। বাবা হাসান খান বঙ্গবাজারে কাপড়ের ব্যবসা করেন। তাদের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার শেখদি গ্রামে। পুরান ঢাকার আব্দুল হাদি লেনের ৩৯/২ নম্বর ভাড়া বাসায় থাকত তারা। রাতে নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চুড়িহাট্টা ওয়াহিদ মনজিলের সামনে গিয়েছিল। তবে সেখান থেকে আর বাসায় ফিরতে পারেনি সে। এ কথা বলতে বলতেই চোখের পানি ছেড়ে দেন চাচা আলমগীর। তিনি আরো বলেন, মোটরসাইকেলসহ আমার বাবা পুড়ে মারা গেছে। এমনভাবে পুড়েছে যে এখন আমার বাবার লাশটাও চিনতে পারছি না। মরার আগে কত কষ্টই না হয়েছে ওর। একইভাবে অসুস্থ মেয়ের জন্য স্যালাইন আনতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে নিহত হন বিবি হালিমা আক্তার শীলা (২৪)। পাঁচ বছর বয়সী সানিন মায়ের পরিচয় শনাক্ত করতে ডিএনএন নমুনা দিতে আসে মামার সঙ্গে। সে সময় সিআইডি বুথে বসেও মায়ের কথা মামা ইসরাফিলকে বারবার বলছিল সানিন। মামা আম্মু কোথায়? কিন্তু ইসরাফিল শুধু অঝোরে কেঁদেছেন, উত্তর দিতে পারেননি। ছোট্ট সানিন তখনো জানে না তার মুখ থেকে নেয়া নালা থেকেই তার মায়ের পরিচয় খুঁজে বের করা হবে। ওই দিনের নির্মম অগ্নিকাণ্ডের পুড়ে কয়লা হন নাসরিন জাহান ও সালেহ মোহাম্মদ দম্পতি এবং তাদের ৮ বছর বয়সী দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়–য়া একমাত্র ছেলে আফতাহি। চকবাজারেই এমপি হাজী সেলিমের মালিকানাধীন আসিক টাওয়ারের হিসাব রক্ষক হিসেবে কাজ করতেন নাসরিন। ঘটনার সময় ছেলেসহ স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় ফেরার পথেই আগুনে পুড়ে কয়লা হন ৩ জন। রাত সাড়ে ১০টা বাজার ৬ মিনিট আগে তারা বাসার উদ্দেশে রওনা দিলে চুড়িহাট্টা মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত এই দম্পতির স্বজন ইসমাইল হোসেন ইসমাইল এসব তথ্য বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এমন অবস্থা দগ্ধ দুলাল কর্মকার (৩৫), নুরুল হক (৩৫), ফয়সাল সারোয়ার (৫০), নাসরিন জাহান (৩২), মো. জাফর (৪৩), আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (৪০) ও মো. শাহীনের পরিবারের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App