×

বিনোদন

ভিনদেশি ভিলেনের আমদানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৩:২৯ পিএম

ভিনদেশি ভিলেনের আমদানি
গত দুই দশকে বলিউডে যে ক’জন ভিলেন দর্শক-সমালোচকদের নজর ও কদর দুটোই কুড়িয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম যশপাল শর্মা। উল্লেখ করার মতো অনেক ছবি তার ঝুলিতে থাকলেও ‘গঙ্গাজল’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি সবচেয়ে বেশি নাম কামিয়েছেন। এ ছবিতে অভিনয় করে তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হোন। ‘লাগান’ ছবির ক্রিকেট টিম একাদশেও তার উপস্থিতি দর্শকদের চোখে লেগে আছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফাগুন হাওয়ায়’ তার প্রথম বাংলা ছবি। সরাসরি বাংলাদেশি কোনো ছবি দিয়েই তার বাংলা ছবিতে শুভযাত্রা হয়েছে। আর প্রথম বাংলা ছবিতেই তিনি প্রশংসা পেয়েছেন। পাকিস্তানি পুলিশ অফিসার মোহাম্মদ জামশেদ খানের চরিত্রে তার অভিনয় দর্শকরা প্রাণভরে উপভোগ করেছেন। গত বছর তিনি তৌকীর আহমেদের নির্দেশনায় শুটিংয়ে অংশ নিতে বাংলাদেশে আসেন। খুব বেশি হৈচৈ তাকে নিয়ে না হলেও ‘ফাগুন হাওয়ায়’ মুক্তির পর ছবিতে তার এই অভিনেতার অনিবার্যতা নিয়ে সবাই সংকোচমুক্ত। যশপাল শর্মাই প্রথম নয়, ভারতীয় ভিলেনদের অনেকেরই পদধূলি পড়েছে ঢালিউডে। কেউ কেউ এসেছেন যৌথ প্রযোজনার মোড়কে। কেউ কেউ সরাসরিই অভিনয় করেছেন এ দেশের ছবিতে। তাদেরই উল্লেখযোগ্য কয়েকজনের কথা থাকছে এই প্রতিবেদনে...। উৎপল দত্ত ১৯৮৫ সালে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের তারকাদের নিয়ে জনপ্রিয় ছবি ‘অবিচার’ নির্মিত হয়। সৈয়দ হাসান ইমাম এবং বোম্বের শক্তি সামন্ত ছবিটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন। ‘অবিচারে’ হিন্দি ভাষায় গোটা ভারতে প্রদর্শিত হয়। হিন্দিতে ‘আরপার’ নামে মুক্তি পায় ‘অবিচার’। পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় ‘অন্যায় অবিচার’ নামে। মিঠুন, রোজিনা, নূতন, আহমেদ শরীফ অভিনীত ছবিটিতে বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন ভারত কাঁপানো অভিনেতা উৎপল দত্ত। এক গ্রাম্য জোতদারের চরিত্রে তার অসাধারণ অভিনয় দর্শকরা দারুণ উপভোগ করেছিলেন। প্রেম চোপড়া ১৯৮৮ সালে ভারতের প্রমোদ চক্রবর্তী পরিচালনা করেন ‘বিরোধ’। যা ‘শত্রæ’ নামে হিন্দি ভাষায় বোম্বেতে মুক্তি পায়। সুপারস্টার রাজেশ খান্না ও বাংলাদেশের শাবানা এ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবির খলনায়কের চরিত্রটি বরাদ্দ ছিল প্রেম চোপড়ার জন্য। প্রেম তখন বোম্বের প্রভাবশালী ভিলেন। তার বিশেষ ঢংয়ের অভিনয় ভিডিওর মাধ্যমে দেখে এ দেশের দর্শকরাও ভক্ত বনে গিয়েছিলেন। ‘বিরোধ’ ছবিতে প্রেম চোপড়া এক কালোবাজারির ভ‚মিকায় দারুণ অভিনয় করেন। পুলিশ অফিসার রাজেশ খান্নার সঙ্গে প্রেম চোপড়ার দ্ব›দ্ব খুবই উপভোগ করেছিলেন দর্শকরা। শক্তি কাপুর ২০০০ সালে এফডিসিতে আসেন আশির দশকের তুখোড় ভিলেন শক্তি কাপুর। নব্বই দশকে যিনি কমেডিয়ান হিসেবেও মুম্বাই কাঁপিয়ে তোলেন। শক্তি ঢাকার দুটি ছবিতে অভিনয় করেন। আজমল হুদা মিঠু পরিচালিত ‘এরই নাম দোস্তী’ এবং রায়হান মুজিব পরিচালিত ‘জামিন নাই’ ছবির মূল ভিলেন ছিলেন শক্তি কাপুর। সরাসরি বাংলাদেশি ছবিতে এত দাপুটে কোনো ভিনদেশি ভিলেনের আগমন সেবারই প্রথম। তাকে নিয়ে তখন মিডিয়া প্রচণ্ড আগ্রহী হয়েছিল। রজতাভ দত্ত ২০১৪ সালে প্রচারণাহীনভাবে মুক্তি লাভ করে স্বপন সাহা ও দেওয়ান নাজমুলের পরিচালনায় ‘সীমারেখা’। পশ্চিমবঙ্গের রজতাভ দত্ত ও বাংলাদেশের ববিতা এতে অভিনয় করেন। পরে ববিতা এ ছবিতে তার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন। অনেকটা এ ছবিতে অভিনয়ের ঘটনাটিকে চেপে গিয়ে রজতাভ দত্তর প্রথম ছবি বলে দাবি করা হয় ‘অঙ্গার’কে। মূলত এটি রজতাভের দ্বিতীয় যৌথ প্রযোজনা। যৌথ প্রযোজনার ‘ব্ল্যাক’ ছবিতেও তিনি অভিনয় করেন। আর সম্পূর্ণ বাংলাদেশি প্রযোজনায় তিনি প্রথম অভিনয় করেন ‘বসগিরি’ ছবিতে। আশিষ বিদ্যার্থী বাংলা ছবিতে আরো বছর দশেক আগে অভিনয় করলেও দুই বাংলার কোনো ছবিতে আশিষ বিদ্যার্থী প্রথম অভিনয় করেন ২০১৫ সালে। ‘অগ্নি টু’ ছবিটিই তার প্রথম যৌথ প্রযোজনার ছবি। যৌথ প্রযোজনার ‘অঙ্গার’, ‘ব্ল্যাক‘, ‘রক্ত’ ছবিতেও তিনি অভিনয় করেছেন। গত বছর তিনি অভিনয় করেছেন দেশিয় প্রযোজনা ‘ক্যাপ্টেন খান’ ছবিতে। আশিষ বিদ্যার্থী মূলত মুম্বাইয়ের ভিলেন। কিন্তু তিনি ভারতের প্রায় সমস্ত আঞ্চলিক চলচ্চিত্র শিল্পের ছবিতে অভিনয় করেছেন। তারই পথ ধরে তিনি বাংলাদেশি কিংবা জয়েন্ট ভেঞ্চার ছবিতে অভিনয় করেন। আশিষ ভিলেন হিসেবে এখনো চাহিদাসম্পন্ন। অভিনীত ছবিতে উচ্চপারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন উপমহাদেশের এই পরিচিত মুখ। রাহুল দেব রাহুল দেব বলিউডের ভিলেন। বেশ পরিচিত। ‘দম’সহ অনেক ছবিতেই তিনি প্রধান ভিলেনের চরিত্রে দাপুটে অভিনয় করেছেন। তিনি দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতেও পা ফেলেছেন। চুটিয়ে তামিল-তেলেগু ছবি করেছেন। তাকে যৌথ প্রযোজনার ছবিতে প্রথম অভিনয় করতে দেখা যায় জয়দীপ মুখার্জি পরিচালিত ‘শিকারী’ ছবিতে। এ ছবিটি ২০১৬ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়ে মারকাটারি ব্যবসা করেছে বাংলাদেশে। প্রদীপ রাওয়াত প্রদীপ রাওয়াতেরও বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ যৌথ প্রযোজনার হাত ধরে। যদিও তিনি বাংলাদেশে শুটিং করেননি। ‘হিরো ৪২০’ তার অভিনীত প্রথম বাংলা ছবি। তবে স্যাটেলাইটের কারণে প্রদীপ অত্যন্ত পরিচিত অভিনেতা বাংলাদেশি দর্শকদের কাছে। প্রদীপ মূলত দক্ষিণী ছবিতে শক্তিশালী ভিলেন হিসেবে জোরালো অবস্থান তৈরি করেছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App