নোয়াখালীর অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু, বাড়িতে আহাজারি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০২:০৫ পিএম
রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৭০ জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে সহোদরসহ নোয়াখালীর অন্তত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তাদের মধ্যে ৬ জনের পরিচয় মিলেছে এবং বেশির ভাগের বাড়ি সোনাইমুড়ী উপজেলায়।
স্বজনদের মৃত্যুর খবরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পরিবারের সদস্যদের আহাজারি করতে দেখা যায়। তাদের আহাজারি এবং গরম নিঃশ্বাসে ভারি হয়ে উঠেছে সেখানকার পরিবেশ। অনেকে পুরান ঢাকার মৃত্যুপুরীতে তার স্বজনদের মরদেহ সন্ধান করছেন। আবার অনেকে হাসপাতালেও খুঁজে ফিরছেন তার প্রিয় মানুষকে। তারা বেঁচে আছেন কি মারা গেছেন, স্বজনরা জানেন না। সোনাইমুড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক কামাল নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুরান ঢাকায় নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছে, তাদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। আসলে তারা কোথায় আছেন।
গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা মসজিদের সামনের সড়কে একটি পিকআপে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই
সেই ট্রাকের আগুন পাশের কেমিক্যাল গুদামে লেগে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়লে নারী-শিশুসহ কমপক্ষে ৭০ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আগুনে পুড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন আরো অনেক মানুষ।
ঘটনায় নিহত ও আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। চকবাজার থেকে সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর ইউনিয়নের ব্যবসায়ী মিলন জানান, ঘটনার সময় নিহতরা সবাই ভবনগুলোতে ছিলেন। আগুন লাগার পর তারা আর বের হতে পারেননি।
নিহত ১৫ জনের মধ্যে ৬ জনের নাম পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- সোনাইমুড়ীর নাটেশ^র ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামের মৃত মমিন উল্যাহর ছেলে শাহাদাত হোসেন হিরা (৩০), গাউছ মিয়ার ছেলে নাছির উদ্দিন (২৮), আবদুর রহিমের ছেলে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (৩৫), ঘোষকামতা গ্রামের সহোদর সাহাব উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা (৩৫) ও রাজু (২৮) এবং বারগাঁও ইউনিয়নের কৃষ্মপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৩০)। মৃতদেহগুলো পুড়ে অঙ্গার হওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
এদিকে ঘোষকামতা গ্রামের খাসের বাড়িতে একই পরিবারের দুই সহোদর মাসুদ রানা ও রাজুর মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের চাচা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তাদের লাশ শনাক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রামের বাড়িতে তাদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন খোকন জানান, নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আরো কয়েকজনের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।