চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৪:৫১ পিএম
পুরান ঢাকার চকবাজারের পাঁচটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৭৮ জনে। অগ্নিকাণ্ডস্থলে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সর্বশেষ তথ্যমতে ৭৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আগুনে দগ্ধ বা আহত হয়ে এখন পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অনেক।
পাত হওয়ার নয় ঘণ্টা পরও তা পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর ৩৭টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। সকালে হেলিকপ্টারে করে উপর থেকে পানি ছিটানোর পর আগুন আর দেখা যাচ্ছে না।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) এ কে এম শাকিল নেওয়াজ ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও ভেতরে এখনও জ্বলছে। রাসায়নিকসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন পুরো নেভাতে অনেক সময় লাগবে।
চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ওই ভবনগুলোতে অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ভোরের দিকেও দগ্ধ অবস্থায় লোকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ বলেন, উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর হতাহতের সঠিক তথ্য জানা যাবে।
বুধবার রাতে ১০টা ৩৮ মিনিটে চকবাজারের নন্দ কুমার দত্ত রোডের শেষ মাথায় মসজিদের পাশে ৬৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওয়াহিদ ম্যানসনে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এলাকাবাসী বলছে, ওই ভবনের কারখানা থেকে আগুন ছড়িয়েছে। কারও কারও মতে, বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়ায়। ওয়াহিদ ম্যানসনের নিচতলায় প্লাস্টিকের গোডাউন ছিল। ওপরে ছিল পারফিউমের গোডাউন।
এ আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাত ৩টার দিকে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বলেন, এখানে আসার রাস্তাটির দু’পাশই সরু। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সহজে ঢুকতে পারেনি। তবে শেষ পর্যন্ত কয়েকঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছি।
তিনি বলেন, ভবনে দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মোট পাঁচটি ভবনে আগুন লেগে যায়। এখনো আমাদের কাজ চলছে। আমরা কাজ শেষে সার্চ করবো। সার্চ করার পর জানতে পারবো কোনো মরদেহ আছে কি-না।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান বলেন, এখানে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বানায়। বডি স্প্রেও এখানে বানানো হয়। বডি স্প্রে তৈরির দাহ্য পদার্থে আগুন বেশি ছড়িয়েছে।
গ্যাস সিলিন্ডার নাকি ট্রান্সমিটার বিস্ফোরণ, নাকি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকনের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হচ্ছে। তদন্ত করলেই বোঝা যাবে।