×

মুক্তচিন্তা

বিশ্ব ইজতেমা ও ভ্রাতৃত্ববোধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:০৬ পিএম

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে গতকাল শেষ হয়েছে ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। শুক্রবার টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয় ইজতেমার প্রথম পর্ব। রবিবার শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব। কয়েক বছর ধরে সময়ের ব্যবধান রেখে দুই পর্বের ইজতেমা হলেও এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। তাবলিগের দুপক্ষের বিরোধের প্রেক্ষাপটে দুপক্ষ পৃথকভাবে দুই পর্বে অংশ নিয়েছে।

প্রতিবারের মতো এবারো বিশ্বের বড় বড় ইসলামি পণ্ডিতরা বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের মাঝে ধর্মীয় বয়ান করেন। আলেমরা তাদের বয়ানে ইসলামের মর্মবাণী তথা মানবিক আদর্শ ও ভ্রাতৃত্ববোধের দিকগুলো তুলে ধরেন। তিরিশের দশকে হজরত মওলানা ইলিয়াস (রহ.) যে তাবলিগ জামাতের সূচনা করেন পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশেও এর বিস্তার ঘটে।

এ পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্ব ইজতেমার উদ্ভব হয়। বাংলাদেশে প্রথম ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালে বর্তমান কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন মাঠে। এরপর ১৯৪৮ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর হাজি ক্যাম্প সংলগ্ন মাঠে। ১৯৫৮ সালে তৃতীয় বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে।

এরপর থেকে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বর্তমান জায়গায়ই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই মহতী সমাবেশ এখন মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য ভূমিকা পালন করছে। ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেয়া একটি বিশেষ ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

বিগত সময়ে দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা ও দেশের বিশিষ্টজনরা আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেন। আমরা দেখছি, অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে এ সমাবেশটি প্রতি বছর সম্পন্ন হয়ে আসছে।

লাখ লাখ মুসল্লির ইজতেমায় যাতায়াত নিয়ে কিছু ভোগান্তি থেকে যায়। কয়েক বছর ধরে সরকারের পক্ষ থেকে ইজতেমা স্থলে যাতায়াতে বিশেষ যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবারো তার ব্যতিক্রম নয়। এবার বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনে অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় প্রায় সব ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছিল।

ইজতেমা মাঠ ঘিরে নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষায় সক্রিয় ছিলেন। দু’পর্ব মিলে ইজতেমার সার্বিক আয়োজনকে এক কথায় সুষ্ঠু বলা যায়।

তাবলিগ দুই ভাগে বিভক্ত হলেও ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। পক্ষ-বিপক্ষের ভিত্তিতে দুই পর্বের আয়োজনের কারণেই বিরোধের প্রকাশ ঘটেনি। তবে ইজতেমায় বিভক্তি কাম্য নয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App