×

জাতীয়

তৃণমূলেও নতুন নেতৃত্ব!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৫১ এএম

তৃণমূলেও নতুন নেতৃত্ব!
তৃণমূলেও নতুন নেতৃত্ব!
অক্টোবরেই শেষ হচ্ছে আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ। এরপরই অনুষ্ঠিত হবে দলটির ২১তম জাতীয় সম্মেলন। এরই মধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সম্মেলনের আগেই দলটি শেষ করতে চায় তৃণমূলের সব ইউনিটের সম্মেলন। এ নিয়ে কাজও শুরু করেছেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরপরই তৃণমূল সফর করবেন তারা। প্রতিটি জেলা, মহানগর ও উপজেলায় কর্মিসভা এবং বর্ধিত সভা করবেন। এরপরই শুরু হবে সম্মেলন প্রক্রিয়া। প্রয়োজনীয় সব ইউনিটে হবে নতুন কমিটি। নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানো হবে তৃণমূলকে। সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে ত্যাগী, নির্যাতিত ও পরীক্ষিতদের আনা হবে নেতৃত্বে। যারা বাদ পড়বেন বয়সের ক্রমানুসারে তাদের রাখা হবে স্ব স্ব জেলা-উপজেলায় উপদেষ্টা পরিষদে। নতুন নেতৃত্বকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়াই হবে তাদের কাজ। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আওয়ামী লীগও এগিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাচন শেষে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় বর্ধিতসভা ও কর্মিসভা হবে। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী সম্মেলন হবে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সংগঠনের স্বার্থে যা করা দরকার বঙ্গবন্ধু কন্যা সেটাই করেন। এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সার্বিক বিষয় ও প্রার্থী চ‚ড়ান্ত নিয়ে আলোচনার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গণভবনে যান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় সদস্য এস কামাল ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামান। প্রায় ২ ঘণ্টা দলীয় সভাপতির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তারা। এ সময় ডাকসুর প্রার্থী নির্বাচনে বেশকিছু বিষয়ে নেতাদের দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতেও নির্দেশ দেন তিনি। মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন কমিটিরও সম্মেলনের নির্দেশনা দেন তিনি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হবে। পুরনো বা মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো কমিটিই বহাল থাকবে না। নবীনদের দিয়ে দল সাজানো হবে। প্রবীণদেরও দলের কাজে লাগানো হবে। সম্মেলনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২১তম জাতীয় সম্মেলনে বড় ধরনের চমক থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এদিকে সম্মেলনকে সামনে রেখে নতুন করে সরগরম হতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র ও তৃণমূল। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে যারা এত দিন দলীয় পদ-পদবি পাননি, তারা এখন অনেকটাই চাঙ্গা। কেন্দ্রীয় নেতারাও দলের প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার পাশাপাশি আড্ডা জমাচ্ছেন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়েও ভিড় করছেন তারা। একই অবস্থা আওয়ামী লীগের তৃণমূলেও। তৃণমূল নেতারা এখন থেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের পিছু ছুটছেন। তাদের প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতেই অংশ নিচ্ছেন। স্থানীয় মন্ত্রী-এমপিদেরও দিচ্ছেন নিয়মিত প্রটোকল। প্রতিটি জেলা-উপজেলায় দলীয় কার্যালয়ে শুরু করেছেন রাজনৈতিক আড্ডা। তৃণমূলের কর্মীরাও চান নেতৃত্বের পরিবর্তন। কেননা, কিছু কিছু জেলা ও উপজেলা কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩০ বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ফলে অনেকেই এক প্রকার স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করায় দলের মধ্যে পরিবারতন্ত্রও গড়ে তুলেছেন কেউ কেউ। বঞ্চিত হয়েছেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা। ফলে তৃণমূলে সম্মেলনের খবরে এখন উচ্ছ¡সিত তারা। সম্মেলনের মাধ্যমে এবার অবসান হতে যাচ্ছে তাদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার। আসবে নতুন নেতৃত্ব। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নবগঠিত মন্ত্রিপরিষদ গঠনে যে রকম চমক ছিল। একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের অনেক সাংসদ মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই পেয়েছেন। একইভাবে আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় সম্মেলন থেকে শুরু করে তৃণমূলের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পর্যায়েও নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা রয়েছে। অভিজ্ঞদের সঙ্গে ব্যাপকহারে নবীনদের দায়িত্বে আনা হবে। সে ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সাবেক ত্যাগী, নির্যাতিত ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা থাকবেন। সূদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনা থেকেই এমনটা করা হবে বলেও জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App