×

বিশেষ সংখ্যা

‘এবার ফিরাও মোরে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০২:৫২ পিএম

‘এবার ফিরাও মোরে’
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পরিবেশে, বাঙালির রাজনৈতিক অর্থনীতির আঙিনায় এখনো রবীন্দ্রনাথ প্রচণ্ডভাবে প্রাসঙ্গিক। পরাধীন ভারতবর্ষে স্বাধীকার ও স্বয়ম্ভর অর্জন আকাক্সক্ষায় সমকালে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অসম্ভব ধরনের অগ্রগামী। রবীন্দ্রভাবনায় বাঙালির আত্মশক্তির বিকাশ, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা লাভের উপায়, শিক্ষা স্বাস্থ্য সমবায় কৃষি ব্যবস্থাপনায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন উপলক্ষ বারবার ফিরে এসেছে । শিল্প বিপ্লবের বিপুল বিস্তারে গড়ে ওঠা নগর জীবন এর যান্ত্রিকতার বহরে পল্লী তার সকল শ্রী হারাতে বসেছে এটা দেখে তিনি বিচলিত হয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ অনুভব করেছিলেন কেবল এক শ্রেণির মানুষ অর্থনৈতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলে বা শহরকেন্দ্রিক উন্নয়ন হলে দেশের উন্নতি হয় না প্রয়োজন দেশের সামগ্রিক উন্নতির। পল্লীবাসীরা অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকলে দেশের যথাযথ উন্নতি হয়েছে বলে তিনি মানতেন না। ‘ছিন্নপত্র’র ৩৮ সংখ্যক চিঠিতে কবি লিখেছেন, ‘আমার বোধহয় কলকাতা ছেড়ে বেরিয়ে এলেই মানুষের নিজের স্থায়িত্ব এবং মহত্ত্বের ওপর বিশ্বাস অনেকটা হ্রাস হয়ে আসে। এখানে মানুষ কম এবং পৃথিবীটাই বেশি; চারদিকে এমন সব জিনিস দেখা যায় যা আজ তৈরি করে কাল মেরামত করে পরশু দিন বিক্রি করে ফেলার নয়, যা মানুষের জন্মমৃত্যু ক্রিয়াকলাপের মধ্যে চিরদিন অটলভাবে দাঁড়িয়ে আছে, প্রতিদিন সমানভাবে যাতায়াত করছে এবং চিরকাল অবিশ্রান্তভাবে প্রবাহিত হচ্ছে। পাড়াগাঁয়ে এলে আমি মানুষকে স্বতন্ত্রমানুষভাবে দেখিনে। যেমন নানা দেশ দিয়ে নদী চলেছে, মানুষের স্রোতও তেমনি কলরব সহকারে গাছপালা গ্রাম নগরের মধ্যে দিয়ে এঁকে বেঁকে চিরকাল ধরে চলেছে এ আর ফুরোয় না।’ শাহজাদপুর থেকে লেখা ছিন্নপত্রের ২৭ সংখ্যক চিঠিতে মানুষের সঙ্গে নদীর আবহমান সম্পর্কের কথা একই অনুভবে এসেছে রবীন্দ্রমানসের পল্লী প্রিয়তার প্রসঙ্গটি ‘ওপারে হাট, তাই খেয়া নৌকায় এত ভিড়। কেউ বা ঘাসের বোঝা, কেউ বা একটা চুপড়ি, কেউ বা একটা ব¯তা কাঁধে করে হাটে যাচ্ছে এবং হাট থেকে ফিরে আসছে, ছোট নদীটি এবং দুই পারের দুই ছোট গ্রামের মধ্যে নিস্তব্ধ দুপুরবেলায় এই একটুখানি কাজকর্ম, মনুষ্যজীবনের এই একটুখানি স্রোত অতি ধীরে ধীরে চলছে।’ নিস্তরঙ্গ গ্রাম জীবনের আলেখ্য কবির কলমে তার সুদৃষ্টির সীমায় সবাক হয়ে আছে। ১৮৯১ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে শাহজাদপুর থেকে লেখা আরেকটি চিঠিতে কত নিখুঁত নিরিখে বেদে বহরের উল্লেখ উঠে এসেছে : ‘ঠিক আমার জানালার সুমুখে, খালের ওপারে, একদল বেদে বাখারির ওপর খানকতক দর্মা এবং কাপড় টাঙিয়ে দিয়ে তারই মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। গুটিতিনেক খুব ছোট্ট ছোট্ট ছাউনি মাত্র-তার মধ্যে মানুষ দাঁড়াবার জো নেই। ঘরের মধ্যে ঘুমুতে যায়। বেদে জাতটাই এইরকম। কোথাও বাড়ি-ঘর নেই, কোনো জমিদারকে খাজনা দেয় না। একদল শুয়োর, গোটা দুয়েক কুকুর এবং কতকগুলো ছেলেমেয়ে নিয়ে যেখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ায়। পুলিশ সর্বদা এদের ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখে।’ ছিন্নপত্রের ৪৩ সংখ্যক চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ আরো আন্তরিকভাবে গ্রামীণ আটপৌরে জীবনের ছবি এঁকেছেন, আর রচনা করেছেন প্রকৃতির সঙ্গে, বিশেষ করে নদী ও নারীর মধ্যেকার সখ্যের সারমর্ম: ‘ঘাটে মেয়েরা কাপড় কাচছে, জল তুলছে, স্নান করছে এবং উচ্চৈঃস্বরে বাঙাল ভাষায় হাস্যালাপ করছে; যারা অল্পবয়সী মেয়ে তাদের জলক্রীড়া আর শেষ হয় না। একবার স্নান সেরে উপরে উঠছে, আবার ঝুপ করে জলে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তাদের নিশ্চিন্ত উচ্চহাস্য শুনতে বেশ লাগে। পুরুষরা গম্ভীরভাবে এসে গোটা কতক ডুব মেরে তাদের নিত্যকর্ম সমাপ্ত করে চলে যায়, কিন্তু মেয়েদের যেন জলের সঙ্গে বেশি ভাব। পরস্পরের যেন একটা সাদৃশ্য এবং সখিত্ব আছে। জল এবং মেয়ে উভয়েই বেশ সহজেই ছলছল জ্বলজ্বল করতে থাকে একটা বেশ সহজ গতি ছন্দ তরঙ্গ, দুঃখতাপে অল্পে অল্পে শুকিয়ে যেতে পারে, কিন্তু আঘাতে একেবারে জন্মের মতো দুখানা হয়ে ভেঙে যায় না। সব কঠিন পৃথিবীকে সে বাহুবন্ধনে আলিঙ্গন করে আছে, পৃথিবীটা অন্তরের গভীর রহস্য বুঝতে পারে না। সে নিজে শস্য উৎপাদন করে না, কিন্তু ভিতরে ভিতরে সে না থাকলে পৃথিবীতে একটি ঘাসও গজাতে পারতো না।’ ১০ মে ১৮৯৩ শিলাইদহ থেকে রবীন্দ্রনাথ একইভাবে দরিদ্র চাষিদের কথা বলেছেন ‘আমার এই দরিদ্র চাষি প্রজাগুলোকে দেখলে আমার ভারি মায়া করে, এরা যেন বিধাতার শিশু সন্তানের মতো নিরুপায়। তিনি এদের মুখে নিজের হাতে কিছু তুলে না দিলে এদের আর গতি নেই। পৃথিবীর স্তন যখন শুকিয়ে যায় তখন এরা কেবল কাঁদতে জানে কোনোমতে একটুখানি ক্ষুধা ভাঙলেই আবার তখনই সমস্ত ভুলে যায়। নাগর নদীর ঘাট কালিগ্রাম থেকে ৬ ডিসেম্বর ১৮৯৫ তারিখে লেখা ‘ছিন্নপত্রে’র শেষ চিঠিতে আমরা অবহিত হই এই ভূখণ্ডের প্রকৃতি ও মানুষ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ভাবনার অন্ত ছিল না। তিনি মানুষের সামাজিক অবস্থানের কথা ভেবেছেন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পটভ‚মিতে, রাষ্ট্রব্যবস্থার পটভ‚মিতে এবং একই সঙ্গে শাস্ত্রের পটভ‚মিতেও। ১৮৯৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দীঘাপতিয়ার জলপথে যাবার পথে দেখেন প্রবল বন্যায় ভেসে গেছে দেশ। দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। তিনি লিখেছেন ‘গৃহস্থের মেয়েরা ভিজে শাড়ি গায়ে জড়িয়ে বাদলার ঠান্ডা হাওয়ায় বৃষ্টির জলে ভিজতে ভিজতে হাঁটুর ওপর কাপড় তুলে জল ঠেলে ঠেলে সহিষ্ণুু জন্তুর মতো ঘরকন্নার নিত্যকর্ম করে যায় তখন সে দৃশ্য কোনো মতেই ভালো লাগে না। ঘরে ঘরে বাত ধরেছে, পা ফুলছে, সর্দি হচ্ছে, জ্বরে ধরেছে, পিলেওয়ালা ছেলেরা অবিশ্রাম কাঁদছে, কিছুতেই কেউ তাদের বাঁচাতে পারছে না এত অবহেলা অস্বাস্থ্য অসৌন্দর্য দারিদ্র্য মানুষের বাসস্থানে কি এক মুহূর্ত সহ্য হয়! সব রকম শক্তির কাছে আমরা হাল ছেড়ে দিয়ে বসে আছি। প্রকৃতি উপদ্রব করে তাও সয়ে থাকি, রাজা উপদ্রব করে তাও সই, শাস্ত্র চিরদিন ধরে যে সব উপদ্রব করে আসছে তার বিরুদ্ধে ও কথাটি বলতে সাহস হয় না।’ আমজনতার জন্য তার একাত্মতার অনুভব ‘যতদিন পল্লীনামে ছিলেম ততদিন তাকে তন্নতন্ন করে জানবার চেষ্টা আমার মনে ছিল। কাজের উপলক্ষে এক গ্রাম থেকে আর এক দূর গ্রামে যেতে হয়েছে, শিলাইদা থেকে পতিসর, নদীনালা বিলের মধ্য দিয়ে তখন গ্রামের বিচিত্র দৃশ্য দেখেছি। পল্লীবাসীদের দিনকৃত্য, তাদের জীবনযাত্রার বিচিত্র চিত্র দেখে প্রাণ ঔৎসুক্যে ভরে উঠত। আমি নগরে পালিত, এসে পড়লুম পল্লীর কোলে-মনে; আনন্দে কৌত‚হল মিটিয়ে দেখতে লাগলুম। ক্রমে এই পল্লীর লক্ষীর দুঃখ দৈন্য আমার কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠল, তার জন্য কিছু করব এই আকাক্সক্ষায় আমার মন ছটফট করে উঠেছিল। তখন আমি যে জমিদারি ব্যবসায় করি, নিজের আয় ব্যয় নিয়ে ব্যস্ত, কেবল বণিকবৃত্তি করে দিন কাটাই, এটা নিতান্তই লজ্জার বিষয় মনে হয়েছিল। তারপর থেকে চেষ্টা করতুম কী করলে এদের মনের উদ্বোধন হয়, আপনাদের দায়িত্ব এরা আপনি নিতে পারে। আমরা যদি বাইরে থেকে সাহায্য করি তাতে এদের অনিষ্টই হবে। কী করলে এদেও মধ্যে জীবনসঞ্চারণ হবে, এই প্রশ্নই তখন আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল।’ এ সব উপলব্ধির আলোকে আমজনতার উন্নয়নের জন্য অনেকগুলো উপায় উপলক্ষ আয়োজনের মধ্যে সমবায়ই গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চারের সর্বোত্তম উপায় হিসেবে প্রতিভাত হয় রবীন্দ্রনাথের কাছে। তিনি চেয়েছেন সবার সহযোগে সার্বিক উত্থান। কারো সম্পদ কেড়ে নিয়ে নয়, কাউকে ছোট করে নয়। তিনি মনে করতেন সেভাবে এগোলে বাস্তবে সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও ব্যবস্থাপনায় তাৎক্ষণিক সংকটের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠবে। অবকাঠামো যেখানে দুর্বল, প্রায় অস্তিত্বহীন, সেখানে একে অমূল্য বলা যায় না। তার আবেদন তাই স্থানীয় শিক্ষিত ও সম্পন্ন জনসমুদয়ের হৃদয়ানুভূতির কাছে তারা যেন আপন আপন গ্রাম থেকে মুখ ফিরিয়ে না রাখেন। সমবায় কাজে তাঁরাও যেন যোগ দেন। অর্থ-বৃত্ত চিত্ত দিয়ে তারা যেন উৎপাদন ও উন্নয়নমুখী প্রতিষ্ঠান করে গড়ে তোলেন। ধনবৈষম্য কে রবীন্দ্রনাথ কখনো প্রশ্রয় দেননি। ১৯৩৪ সালে শ্রীনিকেতনের বার্ষিক উৎসবে ‘উপেক্ষিত পল্লী’ শীর্ষক ভাষণে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, ‘বর্তমান সভ্যতায় দেখি এক জায়গায় একদল মানুষ উৎপাদনের চেষ্টায় নিজের সব শক্তি নিয়োগ করেছে, আর এক জায়গায় আর একদল মানুষ স্বতন্ত্র থেকে সেই অন্নে প্রাণ ধারণ করে। চাঁদের যেমন একপিঠে অন্ধকার, অন্য পিঠে আলো এ সেই রকম। একদিকে দৈন্য মানুষকে পঙ্গু করে রেখেছে, অন্যদিকে ধনের সন্ধান, ধন অভিযান, ভোগ বিলাস সাধনের প্রয়াসে মানুষ উন্মত্ত। অন্নের উৎপাদন হয় পল্লীতে আর অর্থের সংগ্রহ চলে নগরে। অর্থ উপার্জনের সুযোগ ও উপকরণ যেখানেই কেন্দ্রীভ‚ত স্বভাব সেখানেই আরাম আরোগ্য ও শিক্ষার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়ে অপেক্ষাকৃত অল্পসংখ্যক লোককে ঐশ্বর্যের আশ্রয় দান করে। পল্লীতে সেই ভোগের উচ্ছিষ্ট যা কিছু পৌঁছায়, তা যৎকিঞ্চিৎ। এই বিচ্ছেদের মধ্যে যে সভ্যতা বাসা বাঁধে তা বেশিদিন টিকতেই পারে না।’ তাইতো দেখি দ্বারিক বিশ্বাস নামের একজন দোষী প্রজার বিরুদ্ধে ম্যানেজার জানকীনাথ রায়ের শাস্তির প্রস্তাব বিষয়ে নমনীয় থাকার পরামর্শ দিয়ে কবি লিখেছেন, ‘স্বার্থরক্ষার জন প্রবল ব্যক্তিক স্বভাবত চাতুরী অবলম্বন করিয়া থাকে। সে স্থানে দুর্বল পক্ষের বেলায় চাতুরী দেখা গেলে আমরা যে রাগ করি যে চাতুরীর প্রতি রাগ নহে, দুর্বলের প্রতিই রাগ। কারণ এই দ্বারিক বিশ্বাসই চতুরতার দ্বারা আমাদের কোনো কাজ উদ্ধার করিলে প্রশংসা ও পুরস্কারের পাত্র হয়। এমন স্থলে নিজের স্বার্থসাধনের উদ্দেশ্যে চাতুরী প্রয়োগ দেখিলে আমাদের রাগ করিবার কারণ নাই। আমার প্রজারা নিজের বৈষয়িক স্বার্থরক্ষার জন্য যখন তখন চতুরতা করে আমার মনে তখন রাগ হয় না। তাহাদের বেদনা ও ব্যাকুলতা বুঝিবার আমি চেষ্টা করি। তোমরা যেটা কর্তব্য বোধ করিবে, তাহাই করিবে। কেবলমাত্র দণ্ড দিবার জন্য কিছুই করিবে না। দ্বারিক বিশ্বাস যদি প্রবল হইত তবে সে আমাকে দণ্ড দিবার চেষ্টা করিত। আমি দৈবক্রমে প্রবল হইয়াছি বলিয়াই যে ক্রোধ পরিতৃপ্তির জন্য তাহাকে দণ্ড দিব এবং সে তাহা অগত্যা বহন করিবে, এ আমি সঙ্গত মনে করি না।’ গ্রামীণ চাষিসমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধার নেয়া। চড়া সুদে এই ধার তাঁরা ফেরত দিতে না পেরে সর্বসান্ত হতো। এই সমস্যার হাত থেকে পরিত্রাণের জন্য কবি গ্রামীণ ব্যাংকও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, কিন্তু সীমিত মূলধনের সে ব্যাংক চাষিদের খুব বেশি ঋণ দিতে সক্ষম ছিল না। ১৯১৩ সালে নোবেল প্রাইজের এক লক্ষ আট হাজার টাকা পতিসর কৃষি-ব্যাংকে ডিপোজিট করা হয় শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ের নামে। এতে বিদ্যালয়েরও কিছু আর্থিক সুবিধা হলো আর কৃষিজীবীদের ঋণের পরিমাণও কিছুটা বেড়ে গেল। পরে অবশ্য রুরাল ইনডেটেড সংক্রান্ত আইন পাস হওয়ার পর প্রজাদের ধার দেয়া টাকা আদায়ের পথে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। কৃষি ব্যাংক নোবেল প্রাইজের আসল টাকা বিশ্বভারতীকে আর ফেরত দিতে পারেনি।’ ১৩০০ বঙ্গাবদের ২৩ ফালগুন রামপুর বোয়ালিয়ায় বসে রবীন্দ্রনাথ লিখলেন তার সেই অমর কবিতা ‘এবার ফিরাও মোরে’ যেখানে নগর সভ্যতার স্ফিতমেদ মাদকতার বিভ্রান্তি থেকে মূঢ় মলিন মুখ অবহেলিত আমজনতার কাতারে শামিল হওয়ার জন্য সেখানে ফিরে যাওয়ার তার আকুতি পেল প্রকাশ। ইচ্ছা প্রকাশের সেই কবিতা রচনার ১২১ বছর পর রবীন্দ্রনাথকে এখনো আমাদের চেতনায় আলোড়ন তোলার অবকাশে পাই এ জন্য যে সাধারণ আর অসাধারণে, নগর ও গ্রামীণ জীবনযাপনে সার্বিক দূরত্ব বাড়ছে বই কমছে না। শোষণ-বঞ্চনার অবসান প্রত্যাশা পূরণে প্রতিশ্রুতি ক্রিয়া প্রক্রিয়ায় প্রচুর পরিবর্তন এলেও ব্যবধান বিস্তৃত হয়েছে। ভেদ বুদ্ধির বিকারসমূহ শান্তির সুবাতাসকে বিষাক্ত করে তুলছে। অনেক উন্নতি সত্ত্বেও অবনতির খতিয়ান প্রসারিত হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App