×

বিশেষ সংখ্যা

স্বাধীন সাংবাদিকতা ও তার প্রতিপক্ষ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৪:৪৬ পিএম

স্বাধীন সাংবাদিকতা ও তার প্রতিপক্ষ
সাংবাদিকতার ব্যাপ্তি ও প্রভাব বিস্ময়করভাবে বিস্তৃত বর্তমান যুগে। মিডিয়া বা সংবাদপত্র আজ কেবলই ‘ইন্ডাস্ট্রি’ শিল্প নয় মিডিয়া আজ অসীমান্তিক যা সব জাতি, সমাজ ও বিশ্বপরিমণ্ডলকে প্রকাশ করে, প্রভাবিত করে। এই কিছুকাল আগেও সংবাদপত্রের প্রকাশনা ছাপাখানা কেন্দ্রিক ছিল; আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রগতিতে সে ব্যাপ্তি আজ রাষ্ট্রের সীমানাই কেবল ছাড়েনি সম্প্রসারিত হয়েছে অভ‚তপূর্ব; ছড়িয়েছে যুগের গতির সাথে পাল্লা দিয়ে গোলার্ধের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। দৈনিক ও সাপ্তাহিকের ‘অন-লাইন এডিশন’ আজ নতুন সংযোজন যা সংবাদপত্রের পাঠক সংখ্যা সারাবিশ্বে ছড়িয়েছে। এ ছাড়াও সংযোজিত হয়েছে স্যাটেলাইট টিভি, অন লাইন টিভি, এফএম রেডিও, কমিউিনিটি ও সিটিজেন রেডিও এবং সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারÑ যা তরিৎ গণযোগযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছে, একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের পূর্বেকার নিয়ন্ত্রণরীতি ও কণ্ঠরোধের পুরনো দৃষ্টান্তগুলোকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অসাড় প্রমাণিত করেছে। মোটকথা, উগ্র-ধর্মকেন্দ্রিক বা স্বৈরতন্ত্রী রাষ্ট্র ও অঞ্চল বাদে, সংবাদমাধ্যম আজ তুলনামূলকভাবে স্বাধীন, পূর্বেকার যে কোনো সময়ের চাইতে স্বাধীনতামুখী এবং সার্বভৌমত্ব প্রত্যাশি যা এক তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। তবে সংকট বা সীমাবদ্ধতা শেষ হয়েছে, নিগ্রহ-নিপীড়ন মুক্ত হয়ে সাংবাদিকতার পেশা রাহুমুক্ত হয়েছে এমনটি বলার অবকাশ নেই। অবশ্য পরিস্থিতির তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি স্বীকার করাই সঙ্গত হবে বলে মনে করি। এত সব সাফল্য বা অগ্রগতি তুলে ধরেও বর্তমান যুগের সাংবাদিকতার কয়েকটি সাম্প্রতিক ও নতুন প্রতিপক্ষকে আমি এ প্রবন্ধে তুলে ধরতে চাই। আমার বিশ্বাস স্বাধীন সাংবাদিকতার স্বার্থে এই আলোচনা প্রাসঙ্গিক। স্বাধীন সাংবাদিকতার মূল প্রতিপক্ষ এককালে ছিল রাষ্ট্র, এবং সেই রাষ্ট্র যারা তাদের সমালোচনা, অপকর্ম, দুর্নীতি বা অপশাসন উদঘাটন কিংবা অগণতান্ত্রিক বা অমানবিক কর্মকাণ্ডগুলোর প্রচার সইবার মানসিকতা রাখে না। অথচ স্বাধীন সাংবাদিকতা গণতান্ত্রিক স্বাধিকার ও উন্নয়নের স্বার্থে অপরিহার্য। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে মানুষের সার্বিক উন্নয়নের নিরিখে দেখেছেন; তাঁর মতে, তথ্য সরবরাহ করায় বাধা থাকলে তা সরকারকে একনায়কত্বের পথে ধাবিত করে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনেও সহায়ক হয় না। আমরা যদি কেবল দক্ষিণ এশিয় রাষ্ট্রগুলোর সাংবাদিকতার পরিস্থিতি বিবেচনা করি, দেখতে পাই, অনেক রাষ্ট্রই নিবর্তনমূলক আইন প্রবর্তন করেছে। কোনো কোনো রাষ্ট্র নিত্যনতুন আইন করে নানা সত্যকে ধামাচাঁপা দিতে স্বচেষ্ট হচ্ছে। সুখের বিষয় গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও সিভিল সোসাইটির ক্রমবর্ধমান বিকাশ, তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত এবং প্রায় অপ্রতিরুদ্ধ অগ্রযাত্রা এবং প্রতিটি জনগোষ্ঠীর মুক্তবুদ্ধিবৃত্তি ও তার মনোজাগতিক বিকাশ এই প্রবণতার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ নিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। সরকার ইচ্ছে করলেই সবকিছু করতে পারছে না। মুক্ত তথ্য প্রবাহ থেকে মানুষকে বঞ্চিত রাখা এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। বলাই বাহুল্য, তথ্য লাভের অধিকার একটি স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার যুগের দাবি যা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা যাবে না। প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের বাইরেও বর্তমান যুগে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে সামাজিক গণমাধ্যম, যা মানুষের হাতের নাগালে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তথ্যসমৃদ্ধ করে মানুষকে। সামাজিক গণমাধ্যমগুলোর ভালোমন্দ দিক বা কুপ্রভাব নিয়ে অবশ্যই বিতর্কের অবকাশ আছে। সহজলভ্য ও তথ্যের দ্রুত বিস্তার ঘটায় বলে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এর বিস্তর অপব্যবহার করে। আবার অনেক দেশেই সরকার থেকে এগুলোর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় বিশেষ প্রয়োজনের কথা বলে। কিন্তু এ সবের পরও সামাজিক গণমাধ্যমের প্রভাব ও বিস্তারকে অস্বীকার করার জো নেই। বলতেই হবে, যুগের বিবর্তনে রাষ্ট্রশক্তিই কেবল স্বাধীন সাংবাদিকতার একমাত্র প্রতিপক্ষ থাকেনি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বহুবিধ নতুন প্রতিপক্ষ যারা শক্তিধর এবং মুক্ত, স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করার ক্ষমতা রাখে, নিয়ন্ত্রণ বা বিধিনিষেধে আবদ্ধ করে। আজকের দিনে স্বাধীন সাংবাদিকতা, মুক্তচিন্তা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে যারা দণ্ডায়মান তারা (১) রাষ্ট্রক্ষমতার অবৈধ অবৈধ দখলদার বা অগণতান্ত্রিক শাসক, (২) উগ্রধর্মবাদী, অসহিষ্ণু আদর্শবাদী বা জঙ্গি, যারা ভয়ভীতি দেখিয়ে, এমনকি হত্যা করে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে, (৩) প্রতাবশালী কর্পোরেট পুঁজি বা ‘বিগ বিসনেস’, (৪) সুসংঘবদ্ধ চোরাচালানিচক্র, (৫) উগ্রবাণিজ্যবাদী চক্র। এ সব প্রতিপক্ষগুলো আগেকার দিনে এতটা স্পষ্ট ছিল না যা আজ। এ ছাড়াও আছে (৬) সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানের অবমূল্যায়ন বা মালিক-সম্পাদকের দুর্ভাগ্যজনক বিকাশ, যা স্বাধীন সাংবাদিকতার আরেক প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এ সবই একমাত্র নয়, মুক্ত ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার আরো একটি প্রতিপক্ষ আছে যা পাঠককে সত্য জানা থেকে বঞ্চিত করে। সেটি (৭) সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িতদের গোষ্ঠীস্বার্থ, ভিন্নধর্মী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও বিভেদ, যা আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটে স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার খুব ছোট প্রতিপক্ষ বলে বিবেচনা করা সঠিক হবে না। সংবাদমাধ্যম আজ বড় পুঁজির বড় শিল্প। রাশি রাশি টাকা ছাড়া কোনো টিভি স্টেশন বা সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা সম্ভব নয়। তবে পুঁজির পূজাতেই যদি সাংবাদিকতার নীতি নিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে তা হয় দুর্ভাগ্যজনক। ব্যবসা বা তেজারতি সংবাদমাধ্যমের মূল লক্ষ্য হলে সাংবাদিকতার বৃন্তচ্যুত, লক্ষ্যচ্যুত হয়। এ প্রবণতা সৎ সাংবাদিকতার এক বড় প্রতিপক্ষ। সংবাদপত্র বা সংবাদমাধ্যম সঠিক তথ্য সরবরাহে মানুষকে ‘ইনফর্ম’ করে, ‘এন্টারটেইন’ করে, ‘এজুুকেট’ করে। কিন্তু ব্যবসা বা গোষ্ঠী স্বার্থে এ সব করা হলে তা হয় দুর্ভাগ্যজনক। সাংবাদিকতা সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে। সামাজিক দায়বদ্ধতা, মানবাধিকার সংরক্ষণ, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধাচারণ, দুর্বল জনগোষ্ঠীর পক্ষধারণসহ নৈতিকতার ভিত্তি আছে বলে এ পেশা সমাজকে এগিয়ে নেয়, গণতন্ত্রকে বিকশিত করে, অনুপ্রাণীত করে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় দেশগুলোতে মানুষে মানুষে, গোত্রে গোত্রে, বর্ণে বর্ণে, ধর্মে ধর্মে বিভেদকারীর সংখ্যা নগন্য নয়। দুর্ভাগ্য যে, কারও কারও কাছে এ বিভেদ তেজারতি বা রাজনীতি। এ বিভেদ কখনো ইতিহাস আশ্রিত, কখনো ভূখণ্ডগত, ধর্মগত কখনো আবার লিঙ্গ ও ভাষাগত। অথচ আমরা কে না জানি, এ বিভেদ যত বাড়ে ততই ব্যক্তিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিক প্রগতি বিনষ্ট হয় মানবতা ততই তার প্রার্থিত প্রগতি থেকে পিছিয়ে পড়ে। আমার বিশ্বাস, বস্তুনিষ্ঠ শান্তিবাদী সাংবাদিকতা এ প্রেক্ষাপটে যোগ্য ভ‚মিকা রাখতে পারে। কারণ নৈতিকতা সম্পন্ন বলিষ্ঠ সাংবাদিকতা একদিকে যেমন বিশ্বাসযোগ্য তথ্য সরবরাহ করে, নেতিবাচক বিষয়েই কেবল সীমাবদ্ধ থাকে না, থাকতে হয় তাকে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এবং নিরপেক্ষ পর্যালোচনায় সমাজকে শিক্ষিত ও দায়িত্ববান করার দায়িত্বেও। অন্য সব পেশা থেকে সাংবাদিকতার স্বাতন্ত্র্য এখানেই। যা সত্য, তাই সুন্দর, হতে পারে তা কারও কারও কাছে বিব্রতকর। সৎ সাংবাদিকতা সত্যের আরাধনা করে। সত্যবিরোধী অবস্থান নিলে; পুঁজি, রাজনীতি, ব্যবসা বা যে কোনো কোটারি স্বার্থের নামেই অবস্থান হোক না কেন যথার্থই তা সত্য, সুন্দর ও মঙ্গলের বিপরীতে দাঁড়ায়। এতে সমাজ প্রতারিত হয়, বিভাজিত হয়, সংকট দীর্ঘায়িত হয় এবং উন্নয়ন ও অগ্রগতি ব্যাহত হয়। সমাজ ও রাষ্ট্র পদ্ধতিতে উদার গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও অসাম্প্রদায়িক ব্যবস্থা সর্বজন স্বীকৃত। সৎ ও স্বাধীন সাংবাদিকতা তাই কেবল এসবের পরিপূরক নয় পৃষ্ঠপোষকও। রাষ্ট্রশক্তি বা রাষ্ট্রক্ষমতা প্রত্যাশী রাজনৈতিক শক্তির সমালোচনা, সামাজিক অপশক্তিগুলোর দুস্কর্ম, দুর্নীতিসহ নানাবিধ অনিয়মতান্ত্রিকতা জনসম্মুখে প্রকাশ বা দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রচার করা সাংবাদিকতার আরাধ্য দায়িত্ব। কিন্তু এ সব করতে গিয়ে অনৈতিকতার অভিযোগ বর্তালে তা পেশার মহত্ব ও গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। পাশ্চাত্যে ‘পিস জার্নালিজম’ বা শান্তিবাদী সাংবাদিকতার বিষয়টি আলোচিত হয়ে আসছে। যুদ্ধ, সংঘাত, দ্বন্দ্বে সাংবাদিকতা সত্য ও শান্তির পক্ষে কতটা ভ‚মিকা রাখতে পারে সে নিয়েই এই আলোচনা। পক্ষ-বিপক্ষের নানা মত সত্ত্বেও, আমি লক্ষ করেছি, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সংঘাত নিরসনে সাংবাদিকতার প্রার্থিত ভ‚মিকার পক্ষে মতবাদ ক্রমশই জোরদার হচ্ছে। যুদ্ধবাজ বা সংঘাতবাজ নয়, মানুষ শান্তি ও সৌহার্দবাদী হবে মানব সভ্যতার এটিই স্বাভাবিক প্রত্যাশা। কাজেই যে সাংবাদিকতা সমাজের প্রভ‚ত প্রভাব বিস্তার করে, যা মানুষকে নানা তথ্যে সমৃদ্ধ করে, শিক্ষিত করে তার শান্তিবাদী ভ‚মিকা গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করাই সঙ্গত। পাশ্চাত্যের কেউ কেউ শান্তিবাদী সাংবাদিকতার ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন এভাবে Peace Journalism is when editors and reporters make choices - of what to report, and how to report it- that create opportunities for society at large to consider and value non-violent responses to conflict. কেউ আবার বলার চেষ্টা করেছেন The Peace Journalism approach provides a new road map tracing the connections between journalists, their sources, the stories they cover and the consequences of their reporting- the ethics of journalistic intervention. মন্তব্যগুলো শান্তিবাদী সাংবাদিকতার পদ্ধতিগত ব্যাখ্যা। পদ্ধতি যাই হোক না কেন প্রয়োগই মূল কথা। বস্তুনিষ্ঠতা যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি সত্যানুুসন্ধান, মূল উদঘাটন এবং তার নিরপেক্ষ প্রচার যাতে মানুষ বিভ্রান্ত না হয়, বিভক্ত না হয়, সংকট বা সংঘাত প্রলম্বিত না হয়, সহনশীলতার সংস্কৃতি তৈরি হয়। আর এ কাজটি কার্যকরভাবে সম্পাদন করতে গিয়ে প্রয়োজন সংবাদমাধ্যমের নিজস্ব তথ্যসম্ভার, গবেষণা এবং প্রয়োজনীয় ‘রেফারেন্স’। এগুলো নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ যা আমাদের মতো দেশে প্রায়সই উপেক্ষিত থাকে। আরও একটি প্রসঙ্গ আলোচনার দাবি রাখে। দেশপ্রেম, জাতিপ্রেম মানুষের অধিকার এবং গর্ব। রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে, গোত্রে গোত্রে, সংঘাত-সংঘর্ষ বা যুদ্ধে নাগরিক দেশ বা গোত্রভ‚ত্র হবেন এটিই স্বাভাবিক প্রবণতা। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে যে সাংবাদিকতা মানুষকে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন করে, যা বিবেক জাগ্রত করে, সঠিক সত্য উপস্থাপিত করে সে সাংবাদিকতা নিছক ‘দেশ ও জাতিপ্রেমিকতার আবেগ’এ আবদ্ধ হলে, পক্ষভুক্ত হলে সত্যানুসন্ধান ও শান্তির স্বার্থে তা কতটা ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম? কাজেই সাংবাদিকতার দায়বদ্ধতা এবং পরিধি, দেশকালপাত্র নির্বিশেষে, নিরূপণের সুযোগ আছে। আমাদের দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের অন্যতম প্রধান সংঘাতমুখর অঞ্চল। এ অঞ্চলের দেশে-দেশে, গোত্রে-গোত্রে, ধর্মে-ধর্মে, বর্ণে-বর্ণে, উগ্র জাতীয়তা, উগ্র ধর্ম ও রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং সাংস্কৃতিক বিভাজনে নিরন্তর যে যুদ্ধ তার মূল ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। সত্য, শান্তি ও সমঝোতা এখানে প্রায় পরাভ‚ত। যুগের পর যুগ এই যেন এ অঞ্চলের প্রায় অমোচনীয় বিধিলিপি! আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সত্য, শান্তি, সৌহার্দ ও মানবাধিকারের স্বার্থে সাংবাদিকতার যোগ্য ভ‚মিকা নিরূপণের যে সুযোগ বিদ্যমান তার উপযুক্ত ব্যবহার প্রয়োজন। আমরা কে কতটা পারবো বা পারবো না তা তাদের নিজস্ব চেতনা ও সামর্থ্যরে ব্যাপার। কিন্তু এ সত্য কখনোই অনস্বীকার্য নয় যে, সাংবাদিকতা সত্য ও শান্তির স্বার্থে ভূমিকা রাখার উপযুক্ত বাহন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App