×

সাহিত্য

‘ভালোবাসি’ বলার দিন আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৪৪ এএম

‘ভালোবাসি’ বলার দিন আজ
বসন্তবরণের রেশ এখনো কাটেনি। বাসি হয়নি ফাল্গুনের আগুন লাগা পলাশ, শিমুল আর গাঁদা ফুলের সুবাস। এরই মধ্যে ভালোবাসার আবেশ ছড়ায় লাল গোলাপ। উৎসবপ্রিয় বাঙালি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশকে কেন্দ্র করে মেতে ওঠে আরেক উৎসবে। উৎসবে মাতলেও ‘ভালোবাসা’ কী- এ নিয়ে অনেকের মনে আছে প্রশ্ন। তাই কবির জিজ্ঞাসা ‘সখী ভালোবাসা কারে কয়?’ ভালোবাসার সংজ্ঞা নিয়ে আছে বিতর্ক। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্লভ ও কাক্সিক্ষত একটি আবেদন যে ‘ভালোবাসা’- এ কথা সর্বজন স্বীকৃত। পৃথিবীতে সবচেয়ে দামি ও শক্তিশালী শব্দ ভালোবাসা। আবার সবচেয়ে দুর্বল শব্দও এটি। তাই বলে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হবে না? ভালোবাসার মানুষের জন্য মনের কোণে জমে থাকা না বলা কথাটি অপকটে বলার দিন আজ। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে’। বিশে^র কোটি কোটি প্রেমিক যুগলের জন্য পরম আকাক্সিক্ষত একটি দিন। শুধু তরুণ-তরুণী নয়, নানা বয়সের মানুষের ভালোবাসার বহুমাত্রিক রূপ প্রকাশেরও আনুষ্ঠানিক দিন আজ। এ ভালোবাসা যেমন মা-বাবার প্রতি সন্তানের, তেমনি মানুষে-মানুষে ভালোবাসাবাসির দিনও এটি। অনেকের মতে, ভালোবাসা প্রকাশের জন্য আবার দিবসের প্রয়োজন হবে কেন? প্রতিটি দিনই ভালোবাসা দিবস। এ প্রশ্নে কবি নির্মলেন্দু গুণের জবাব, ‘ভালোবাসা একটি বিশেষ দিনের জন্য নয়। সারা বছর, সারা দিন ভালোবাসার। তবে আজকের এ দিনটি ভালোবাসা দিবস হিসেবে বেছে নিয়েছে মানুষ।’ ফিরে দেখা : গ্রিক ও রোমান উপকথার মতোই ভালোবাসা দিবসের উৎপত্তি নিয়ে আরো গল্প-কাহিনী ছড়িয়ে আছে ভুবনজুড়ে। কে এই ভ্যালেন্টাইন তাও রহস্যাবৃত। ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া অনুসারে আমরা তিনজন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন বা ভ্যালেন্টিনাসের সন্ধান পাই। তারা সবাই ১৪ ফেব্রুয়ারি আত্মদান করেন। তবে ভালোবাসা দিবসের সবচেয়ে প্রচলিত গল্পটির শুরু ২৬৯ খ্রিস্টাব্দে। রোমের চিকিৎসক তরুণ যাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের চিকিৎসায় দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিল নগর জেলারের দুহিতা। পরে দুজনের মধ্যে মন দেয়া-নেয়া হয়। সেই থেকে জন্ম নিয়েছিল তাদের ভালোবাসার অমর গাঁথা। বলা হয়, ভালোবাসার অপরাধে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে ফাঁসিতে ঝুলতে হয় ফেব্রুয়ারি এই ১৪ তারিখে। দুই শতাব্দী পর ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে রোমের রাজা পপ জেলুসিয়াস দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দেশে দেশে ভালোবাসা দিবস : উনিশ শতকেই উত্তর আমেরিকায় ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হয় ব্রিটিশ অভিবাসীদের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকহারে ভ্যালেন্টাইন কার্ড বিনিময় শুরু হয় ১৮৪৭ সালে ম্যাসাচুসেটসের অরকেস্টারে। ইতিহাসবিদদের ভাষায়, দুুটি প্রাচীন রোমান প্রথা থেকে এই উৎসবের সূত্রপাত। চীনে ভালোবাসা প্রকাশের সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের আগে তারা বছরের দুই দিন ভালোবাসা দিবস পালন করত। এখন তো চীনে ব্যাপকহারে দিবসটি পালিত হয়। পশ্চিমা ধাঁচে ১৪ ফেব্রুয়ারিই তারা ভালোবাসা দিবস পালন করে। ইউরোপের সব দেশেই মহাসমারোহে তরুণ-তরুণীরা এ দিবস পালন করে। মার্কিনিদের মধ্যে ভ্যালেন্টাইন ডে পালনের হার বেশি। ভারতেও ভালোবাসা দিবস পালিত হয় উৎসবের আমেজে। আমাদের দেশে ১৯৯৪ সাল থেকে দিবসটি বেশ ঘটা করে পালিত হয়ে আসছে। তবে আমাদের দেশের মতো ভারতেও মূলত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দিবসটি নিয়ে বেশি আগ্রহ দেখা যায়। আজ ভালোবাসার উৎসবে মুখর হবে রাজধানী। এ উৎসবের ছোঁয়া লাগবে গ্রাম-বাংলার জনজীবনেও। লাল রঙা শাড়ি, চুলে লাল গোলাপ, হাতে লাল রেশমি চুড়িতে সাজবে তরুণীরা। তরুণরা পড়বে লাল পাঞ্জাবি। দিনভর চলবে ভালোবাসার আদান-প্রদান। বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা, রমনা পার্ক, শাহবাগ, চারুকলা, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, রবীন্দ্র সরোবরসহ বিভিন্ন পার্ক, দর্শনীয় স্থানে আজ ভিড় করবে তরুণ-তরুণীরা। এ ছাড়া মোবাইলে মেসেজ, ই-মেইল অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলবে প্রেমকথার আদান-প্রদান। চকোলেট, ক্যান্ডি, পারফিউম, গ্রিটিংস কার্ড, আংটি, প্রিয় পোশাক, বই, গোলাপ ফুল হয়ে উঠবে উপহারের অনুষঙ্গ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App