×

অর্থনীতি

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয় না : তথ্যমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০২:৪৪ পিএম

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ  প্রয়োগ হয় না : তথ্যমন্ত্রী

‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অগ্রগতি, বাধা ও করণীয় : গ্যাটস ২০১৭-এর আলোকে একটি বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ -ভোরের কাগজ

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয় না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি গতকাল বুধবার ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে অগ্রগতি, বাধা ও করণীয় : গ্যাটস ২০১৭-এর আলোকে একটি বিশ্লেষণ’ শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন। প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) যৌথভাবে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সহায়তায় এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন রয়েছে। কিন্তু সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয় না। তবে গত একদশকে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহার কমেছে। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তামাকের ক্ষতিকারক দিকের প্রচারণা চালানোর ওপরে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. আসাদুল ইসলাম, সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. মাহফুজ কবীর, রিসার্চ ডিরেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আব্দুস সালাম মিয়া, গ্রান্টস ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস, মর্তুজা হায়দার লিটন, কনভেনর অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা) এবং এ বি এম জুবায়ের, নির্বাহী পরিচালক, প্রজ্ঞা। সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়; ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস; বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা; ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসসহ তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এটিএন বাংলার প্রধান প্রতিবেদক ও এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স- আত্মা’র কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন প্রজ্ঞা’র কো-অর্ডিনেটর মো. হাসান শাহরিয়ার। অনুষ্ঠানে জানানো হয় সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭-এর ফলাফল অনুযায়ী, ১৫ বছর এবং তদূর্ধ্ব জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাকের ব্যবহার ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে ১৮.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই অগ্রগতি প্রশংসনীয় তবে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের জন্য যথেষ্ট নয়। গ্যাটস ২০১৭-এর ফলাফল অনুযায়ী, বাংলাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী বিশেষত দরিদ্র এবং অতিদরিদ্র জনগণের মধ্যে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। নারীদের মধ্যে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের উচ্চহার পরিলক্ষিত হয়েছে। এ ছাড়া সার্বিকভাবে শহরের তুলনায় গ্রামে তামাক ব্যবহারের হার অনেক বেশি। কার্যকর তামাককর ও মূল্য পদক্ষেপের অভাবে সস্তা তামাকপণ্য, তামাকপণ্যের সহজলভ্যতা, বিদ্যমান আইনের দুর্বল বাস্তবায়ন, তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ এবং আইনি দুর্বলতা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের পথে প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, গ্যাটসের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আমাদের বেশকিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছে, সে আলোকে ভবিষ্যৎ তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সাজাতে হবে। তিনি আরো বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে মিডিয়ার ভূমিকা অনবদ্য। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, তামাকের দাম এখনো অনেক সস্তা, দাম বাড়িয়ে এসব পণ্য দরিদ্র মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে হবে। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে পরবর্তী পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়েছে, সেখানে তামাক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আরো বিস্তৃত পরিসরে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App