×

জাতীয়

২০ বছরেও বাসযোগ্য হলো না ‘ঝিলমিল’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০২:১৯ পিএম

২০ বছরেও বাসযোগ্য হলো না ‘ঝিলমিল’

২০ বছরেও বাসযোগ্য হয়নি রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্প। কেরানীগঞ্জের এ প্রকল্পের কাজ ১৯৯৭ সালে শুরু হলেও বর্তমান চিত্র এটি। সম্প্রতি তোলা ছবি -ভোরের কাগজ

রাজধানীর অদূরে কেরানীগঞ্জে ১৯৯৭ সালে ঝিলমিল আবাসন প্রকল্প হাতে নেয় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। দফায় দফায় সময় বাড়িয়েও সব কাজ শেষ করতে পারেনি সংস্থাটি। এরইমধ্যে নিজেরদের কাঁধ থেকে বদনাম ঘোচাতে মাঝপথে এসে প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিদের কাগজপত্রে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে দখল। যদিও সেখানে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস আর বিভিন্ন সেবা সার্ভিস এখনো অপ্রতুল। এ ছাড়া বাড়িঘর তৈরি করতে এখনো নকশা অনুমোদনের ব্যাপারটিও রাজউকের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে রাজউক দাবি করেছে বিদ্যুৎ আর পানির লাইনের সংযোগের কাজ শুরু হয়েছে। বেশ কিছু বরাদ্দ গ্রহীতাকেও প্লট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। শতাধিক ব্যক্তি নকশাও অনুমোদন করে নিয়েছেন। জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, ‘রাজউকের ঝিলমিল ল্যান্ড প্রকল্পটি আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সম্প্রতি সমাপ্ত করেছি। এরপর বিদ্যুৎ আর পানি সংযোগের কাজটি আলাদা ডিপিপি করে করা হচ্ছে। সেই কাজও আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ঝিলমিল প্রকল্পে এখনো পর্যন্ত শতাধিক প্লট গ্রহীতা নকশা অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। তারা চাইলে সেখানে ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করতে পারেন।’ সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালে শুরু হওয়া ঝিলিমিল প্রকল্প কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে সম্প্রতি শেষ করা হয়েছে। সেখানে ইতোমধ্যে কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে জমিও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পাসপোর্ট অফিস ছাড়া কেউ এখনো স্থাপনা তৈরি করেননি। প্রকল্প এলাকায় ভেতর ও বাইরে রাস্তা, কালভার্টসহ ভ‚মি ও অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সেবা সার্ভিসের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা ও পল্লী বিদ্যুৎ তাদের কাজ শুরু করেছে। এ কাজ আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রায় ১৭৭৪টি প্লট গ্রহীতার মধ্যে ৮৫০টি প্লট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে শতাধিক প্লটের বিপরীতে ভবন তৈরির জন্য নকশাও অনুমোদন করিয়েছেন কেউ কেউ। এরমধ্যে একটি প্লটে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। রাজউক আরো জানায়, কেরানীগঞ্জে ৩৮১ দশমিক ১১ একর ভ‚মিতে রাজউকের নতুন স্যাটেলাইট শহর ঝিলমিল প্রকল্পটি যে কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন হাউজিং প্রকল্প থেকে নাগরিক সুযোগ সুবিধা বেশি। ঢাকা-মাওয়া সড়কের পাশে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সেতুর ২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এ প্রকল্পে সব ধরনের নাগরিক সুবিধা রাখা হয়েছে। এতে ৪৯ দশমিক ৫০ একর জমিতে এক হাজার ৭৪০টি প্লট রয়েছে, যাতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য সাড়ে ৯ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুরো প্রকল্প এলাকার রাস্তা-ঘাটের কাজ অনেকাংশে শেষ হলেও এখানো অনেক সার্ভিস সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। সেখানে এখনো ওয়াসার পানির লাইন, ড্রেনেজ-সুয়্যারেজ লাইন উন্নয়ন কাজ হয়নি। তবে, বেশ কিছু এলাকায় ওয়াসার পানির লাইন উন্নয়নের কাজ চোখে পড়েছে। ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে দুটি গভীর নলক‚প বসানোর কাজও শেষ করা হয়েছে। স্কুল, কলেজ আর হাসপাতালের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়া হলেও সেখানে তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান এখনো গড়ে ওঠেনি। শুধু একজন প্লট গ্রহীতা একটি বাড়ি নির্মাণ করতে দেখা গেছে। পুরো প্রকল্প এলাকাজুড়ে উন্নয়ন কাজের জন্য খুঁড়ে রাখা মাটির ফলে ধুলো আর ধুলো। এর অন্যতম কারণ হলো ঢাকা মাওয়া চার লেন রাস্তা ও ফ্লাইওভারের কাজে নিয়োজিত সব ধরনের যানবাহন চলে এ প্রকল্পের রাস্তার ওপর দিয়ে। এ প্রকল্পের কাজের ফলে ঝিলমিল প্রকল্পের রাস্তাও ভেঙে গেছে। ফলে ঢাকা মাওয়া চার লেনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ এখানে কেউ চাইলেও বসবাস শুরু করতে পারবে না। এ বিষয়ে রাজউকের প্রকল্প পরিচালক (ঝিলমিল) প্রকৌশলী আবদুল হেলালী ভোরের কাগজকে বলেন, ‘প্রকল্পের প্রথম অংশের কাজ শেষ করা হয়েছে। সেখানে প্রকল্পের রাস্তাগুলোর পুরো নেটওয়ার্কিং করা হয়েছে। এরপরও কিছু কাজ বাকি ছিল তা আমরা শুরু করেছি। কিন্তু ঢাকা-মাওয়া ফোর লেনের কাজে নিয়োজিত যানবাহনগুলো চলাচল করেছ প্রকল্প এলাকার রাস্তা দিয়ে। ফলে সেখানে রাস্তার অবস্থা কিছুটা অবনতি হয়েছে। তাই ফোর লেনের কাজ শেষ হলে আমরা এ রাস্তাগুলো ভালোভাবে মেরামত করব।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App