×

অর্থনীতি

অব্যবস্থাপনা-ভোগান্তির পরও জমজমাট ছিল বাণিজ্যমেলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১১:২৭ এএম

অব্যবস্থাপনা-ভোগান্তির পরও জমজমাট ছিল বাণিজ্যমেলা
২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শেষ হচ্ছে আজ। রপ্তানি খাতের এই আয়োজন ছিল নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনায় ভরপুর। টিকেট বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রতিদিনই অভিযানের পরও ছিল হকারের উৎপাত। এ ছাড়া বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন বিদেশি প্যাভিলিয়নে বিদেশি পণ্যের নামে ফুটপাতের পণ্য বিক্রির বিস্তর অভিযোগ ছিল। এসব বিষয়ে প্রতিদিনই অভিযান চালিয়েছে মেলার আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর একটি টিম। মেলা শেষে এই টিম প্রতিবেদন জমা দেবে। পরবর্তীতে এই প্রতিবেদন অনুসারে ব্যবস্থা নেবে ইপিবি। এত কিছুর পরও জমজমাট ছিল বাণিজ্যমেলার এই আসর। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বাণিজ্যমেলার শুরু থেকেই একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে ফুটপাতের পণ্য বিদেশি বলে চালিয়ে দেয়ার বিস্তর অভিযোগ আসে মেলার আয়োজক সংস্থা ইপিবির কাছে। যদিও প্রতিনিয়ত অভিযান চালালেও অভিযান শেষে আবার সেই অবস্থা ছিল প্রায় প্রতিদিনই। মেলার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গত কয়েক দিনে অর্ধশতাধিক হকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও হকারদের উৎপাত থামেনি। এ ছাড়া অধিকাংশ স্টল প্যাভিলিয়নের পণ্যের মান নিয়ে ছিল বিস্তর অভিযোগ। বিশেষ করে বিদেশি স্টলগুলোতে চকবাজার গুলিস্তানের ফুটপাতের কসমেটিকস বিদেশি বলে গ্রাহকের সঙ্গেও প্রতারণার অভিযোগ করেছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। এখানেই শেষ নয়, বাণিজ্যমেলায় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভ্যাট ফাঁকির প্রবণতা ছিল। এদিকে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে বাণিজ্যমেলার কারণে মানুষের ভোগান্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। এ জন্য বাণিজ্যমেলা সরানোর দাবি বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির। গত বুধবার প্রতিষ্ঠানটি এক সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে, পৃথিবীর কোনো দেশে রাজধানীর কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হয় না। আগামী বছর থেকে বাণিজ্যমেলা রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রের বাইরে সরিয়ে নিতে হবে। মেলায় হকারের উৎপাত ও নি¤œমানের পণ্য বিক্রি করে গ্রাহক প্রতারণাসহ সার্বিক বিষয়ে ইপিবির পরিচালক ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব আবদুর রঊফ ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করেছি। এই জন্য একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছি। মেলা শেষে এই কমিটি আমাদের রিপোর্ট দেবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এসব অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাণিজ্যমেলার পণ্যের মানের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লিয়াকত হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, আমি গত ১৫ বছর ধরে ঢাকায় বসবাস করছি। প্রতিবার আমি এই মেলায় অনেক আনন্দের সঙ্গে আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অংশগ্রহণ করি এবং কেনাকাটা করি। অন্যবার মেলায় বিদেশি পণ্যের সমাহার দেখি যা আমার কাছে মেলার মূল আকর্ষণ মনে হয়। কিন্তু এবার তা দেখিনি। বিদেশি প্যাভিলিয়নে এক্সক্লুসিভ পণ্য বলতে তেমন কিছু ছিল না। তাছাড়া চকবাজার গুলিস্তানের পণ্য বিদেশি বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। যা হচ্ছে নিয়মিত গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা। এদিকে, মেলার অধিকাংশ ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার এক ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। অনেকেই একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে ভ্যাট দিয়ে ভ্যাট অফিস থেকে ছাড়পত্র নিতে চান। অনেকেই সেক্ষেত্রে ছোটখাট কম দামের পণ্যেও জন্য ক্যাশ মেমো দিতে চান না। সব মিলিয়ে ভ্যাট ফাঁকির প্রবণতা ছিল লক্ষণীয়। মেলায় অংশ নেয়া ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মেলার ৩০ দিনে ৩৭টি অভিযোগ পড়েছে অধিদপ্তরে। বাস্তবে এর সংখ্যা অনেকগুণ বেশি। এ ছাড়া অধিদপ্তরের নিজ উদ্যোগে মোট ৩০ দিনে ৪১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এবারের মেলায় অভিযোগের সংখ্যা তুলনামূলক কম।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App