×

জাতীয়

বগুড়ার শেরপুরে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:০৫ পিএম

বগুড়ার শেরপুরে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা

চন্ডিজান সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়ে শিক্ষক পরিচয়দান কারী রিনা রানী

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষায় চলছে নানা নৈরাজ্য ও অনিয়ম। চলছে বেহাল অবস্থা। অথচ যেন দেখার কেউ নেই। অভিযোগ উঠেছে, শেরপুর উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাশ নেন না। স্কুল ফাঁকি দিয়ে তারা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাদের পরিবর্তে ক্লাশ নেন ভাড়াটে শিক্ষক। এর তদারকি করার দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা শিক্ষা অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না ফলে ভেঙ্গে পড়েছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা তো দুরের কথা শিক্ষা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সরেজমিন গত মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের চন্ডিজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখাগেছে বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক নেই। এই সময় বিদ্যালয়ের বারান্দায় থাকা রিনা রানী নিজেকে প্রথমে স্কুলের শিক্ষক পরিচয় দিয়ে বলেন, হেড মাষ্টার ও অনিতা ম্যাডাম বিদ্যালয়ের কাজে উপজেলা সদরে গেছেন। আর মিশকাতুল ম্যাডাম গেছেন শিশু জরিপে। আর আমি বাচ্চাদের দেখা শোনা করছি। আপনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক কিনা এ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, না আমি একজন শিক্ষকের পরিবর্তে ক্লাস নেই। কিভাবে নেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি দেলোয়ার স্যারের অনুরোধে স্কুলে ১ মাস যাবত ক্লাশ নেই। তিনিই টাকা দেন। এ সময় বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা করছিল তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। আধা ঘন্টা পর মিশকাতুল ম্যাডাম স্কুলে এসে বলেন, আমি শিশু জরিপে গিয়েছিলাম। বিদ্যালয়ের সর্বমোট তিন জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মাঝে প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ও অনিতা সংগীত প্রতিযোগিতার জন্য ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শহরে গেছেন। তাহলে রিনা রানী কে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওতো শিক্ষক নয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন জানান, আমি অফিসের কাজে বাইরে ছিলাম। রিনা রানী মাঝে মাঝে স্কুলে যান বলে তিনি স্বীকার করেন। শুধু চন্ডিজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নয় এই চিত্র উপজেলার গ্রামে গঞ্জের অধিকাংশ বিদ্যালয়ের। উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় নতুন জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয় সহ সর্বমোট ১৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এতে শিক্ষক রয়েছেন ৭৫২ জন। কিছু কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটও রয়েছে। অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়গুলো নিয়মিতভাবে পরিদর্শন না করে খাতাপত্র ঠিক ঠাক করায় দিন দিন শিক্ষক অনুপস্থিতির হার বৃদ্ধি পাচ্ছে শিক্ষার মান হচ্ছে নিন্মমুখী। কোন কোন স্কুলে শিক্ষকেরা নিজেরা না গিয়ে নৈশপ্রহরী কাম দপ্তরী ও ভাড়াটে শিক্ষকদের দিয়েই ক্লাশ চালান। বিদ্যালয়ে সময়মত আসা যাওয়া না করেই কর্মকর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে চলাচল করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাইয়ুমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App