×

জাতীয়

পুলিশ পদকের ছড়াছড়ি নিয়ে নানা প্রশ্ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৫৪ পিএম

পুলিশ পদকের ছড়াছড়ি নিয়ে নানা প্রশ্ন
গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত কর্মকর্তা ও সদস্যরা সম্মানসূচক পদক পেয়ে আসছেন। এই পদক পেশাগতভাবে যেমন সম্মানজনক তেমনি এর অর্থমানও রয়েছে। প্রতি বছর পুলিশ সপ্তাহে পদক দেয়া হলেও এবারের বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম-সেবা) ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকের (পিপিএম-সেবা) দীর্ঘ তালিকা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে। বিশেষ করে পুলিশ সুপার থেকে অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার অনেক কর্মকর্তার বারংবার একই পদক প্রাপ্তি ও অনেকে পদক বঞ্চিত হওয়ায় এর ‘গুরুত্ব নিয়ে’ খোদ পুলিশের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। যদিও পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশের জনবল ও কর্মপরিধি বেড়েছে। ফলে বেড়েছে সাফল্যও। তাই সব মিলিয়ে বেড়েছে পুরস্কারের তালিকা। এ বছর পদকের জন্য সহস্রাধিক আবেদন পুলিশ সদর দপ্তরে জমা পড়ে। এগুলো যাচাই-বাছাই শেষে সদর দপ্তর থেকে তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ৩৪৯ নাম চ‚ড়ান্ত করে গত মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে। পদকের জন্য নির্বাচিত করতে পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) প্রশাসনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তারা তার কর্মস্থলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ওই কমিটি প্রধানের কাছে ভালো কাজের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে আবেদন করেন। পরে তা যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে তা যায় বঙ্গভবনে। এরপরই তা চ‚ড়ান্ত রূপ পায়। পুলিশ সদর দপ্তরের ইন্টেলিজেন্স এন্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগ সব কিছু তদারকি করে থাকে। এবার পদকপ্রাপ্ত ৩৪৯ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ১০৪ জন বিপিএম-সেবা ও ১৪৩ জন পিপিএম-সেবা পদকে ভ‚ষিত হয়েছেন। এ ছাড়া আইজিপি এক্সপ্লোরারি গুড সার্ভিস (আইজিপি ব্যাজ) পাচ্ছেন ৫০১ জন। আগামীকাল সোমবার সকালে পুলিশ সপ্তাহের শুরুতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপিএম-পিপিএম পদক হস্তান্তর করবেন। তবে এবার পদকের সংখ্যা অতীতের তুলনায় বেশি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কয়েকজন সদস্য ও কর্মকর্তার মাঝে পদক হস্তান্তরের পর অন্যদের পদক আইজিপির কাছে তুলে দেবেন বলে জানা গেছে। এবারের পুলিশ সপ্তাহে জঙ্গি ও মাদক নির্মূলকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এবার পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘পুলিশ-জনতা ঐক্য গড়ি, জঙ্গি-মাদক নির্মূল করি’। পুলিশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশের সব রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও সব জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়নের অধিনায়করা পদক পাচ্ছেন। পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে দুজন মরণোত্তর বিপিএম পদক পাচ্ছেন। তারা হচ্ছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক পরিদর্শক জালাল উদ্দিন ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কনস্টেবল শামীম মিয়া। জানা গেছে, বিপিএম ও পিপিএম পদকপ্রাপ্তরা এককালীন ১ লাখ টাকা ও পরবর্তীতে বেতন-ভাতার সঙ্গে বাড়তি দেড় হাজার টাকা করে পাবেন। আইজিপি ব্যাজপ্রাপ্তরা আগে শুধু সম্মানজনক ব্যাজ পেলেও গত বছর থেকে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন। গত বছর বিপিএম ও পিপিএম পদকের জন্য সারা দেশ থেকে প্রায় ৬০০ আবেদন জমা পড়েছিল। ১৮২ জন পদকের জন্য বিবেচিত হন। এবার তার চেয়ে ১৬৭ জন বেড়েছে। ২০১৭ সালের ১৩২ জন, ২০১৬ সালে ১০২ জন, ২০১৫ সালে ৮৬ জনকে বিপিএম ও পিপিএম দেয়া হয়। ২০১৪ সালের পুলিশ সপ্তাহে ২০ জনকে বিপিএম এবং ৪০ জনকে পিপিএম পদক দেয়া হয়েছিল। এদিকে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা বিধান, জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড, মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, জনমুখী পুলিশিং, সরকারি ও ব্যক্তিগত কাজের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি বাড়ানোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবদানের ভিত্তিতে আইজি ব্যাজ পদকের জন্য ৫০১ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘আইজিপি এক্সেমপ্লারি গুড সার্ভিস ব্যাজ’। মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে দেয়া হচ্ছে পুরস্কার। এবার ৫০১ জনের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ১৪৩ জন, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ১৫৯, ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ৮৩ জন, ‘ডি’ ক্যাটাগরিতে ১৫ জন, ‘ই’ ক্যাটাগরিতে ৬৫ জন ও ‘এফ’ ক্যাটাগরিতে ৩৬ জন পুলিশ সদস্য এই পুরস্কার পাবেন। ২০১৭ সালের পুলিশ সপ্তাহে ২৮৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য আইজি ব্যাজ পুরস্কার পান। গত বছর আইজিপি ব্যাজ পেয়েছেন ৩২৯ জন। এবার তা ১৭২ জন বেড়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App