×

অর্থনীতি

নানা অব্যবস্থাপনার পরও জমজমাট বাণিজ্যমেলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৩:০৩ পিএম

নানা অব্যবস্থাপনার পরও  জমজমাট বাণিজ্যমেলা
নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনার পরও জমজমাট ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। প্রতিদিনিই ভোক্তা অধিদপ্তর ও ইপিবির অভিযানের পরও হকার এবং অবৈধ দোকানিদের সরাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। অভিযানের পরপরই ফের আগের জায়গায় বসছেন পণ্যের পসরা সাজিয়ে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা হলেও লোকাল স্টাইলে চলছে। ২২টি দেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের মেলা হলেও মিলছে না প্রত্যাশা অনুযায়ী রপ্তানি আদেশ। বাণিজ্যমেলায় এমন চিত্র দেখা গেছে। গতকাল বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলার ২৫তম দিনেও বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মেলায় অবৈধ স্থাপনা, দোকান ও হকারদের উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। অভিযানে ১০টিরও বেশি অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ ও তাদের মালামাল জব্দ করা হয়। উচ্ছেদ অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই মেলা ঘুরে দেখা যায়, হকার ও অবৈধ দোকানের উপস্থিতি আগের মতোই। এটা শুধু গতকালই নয়, ইপিবির মেলায় প্রতিদিন সকাল-বিকেল নিয়ম করে দুবার উচ্ছেদ অভিযান চালালেও অবৈধ দোকান ও হকারদের উপস্থিতি শেষ হয় না। মেলায় অবৈধ স্থাপনা ও দোকান উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী (ইপিবি) উপপরিচালক জানান, আমরা চেষ্টা করি অবৈধ দোকানপাট ও হকারদের উচ্ছেদ করতে। তবে এত বড় আয়োজন, কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকেই। তারপরও আমরা চেষ্টা করি উচ্ছেদ করতে। এদিকে নগরীর ফুটপাতের মতো মেলা প্রাঙ্গণের রাস্তাগুলোতেও বসেছে হকারের পসরা। কেবল অবৈধভাবে বসা স্টলের সামনের দোকানগুলোই নয়, ক্রেতা আকর্ষণের এমন আহবান আসছে নামিদামি স্টলগুলো থেকেও। এ ছাড়া বিদেশি প্যাভিলিয়নগুলোর পণ্যের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বিদেশি প্যাভিলিয়নের বহু স্টলে দেশি পণ্য বিক্রি হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও মেলা কর্তৃপক্ষ। রপ্তানি বাড়ানোই মেলার প্রধান লক্ষ্য হলেও নেই কোনো বিদেশি ক্রেতা। বিক্রেতা ও উদ্যোক্তারা বলছেন, মেলা প্রায় শেষ হতে চললেও বিদেশি কোনো ক্রেতা চোখে পড়েনি। এত বড় আয়োজনের মেলায় নেই কোনো সভা-সেমিনারের আয়োজনও। আন্তর্জাতিক মেলায় দেশীয় পণ্যের বিভিন্ন আইটেম তুলে ধরতে এ ব্যবস্থা না থাকায় প্রশ্ন তুলেছেন কোনো কোনো দর্শনার্থী। এদিকে বাণিজ্যমেলা প্রায় শেষ লগ্নে। প্রতিদিনই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলায় দর্শনার্থীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। দুপুরের আগেই আগত দর্শনার্থীদের ভিড়ে জনস্রোতে রূপ নেয় পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। প্রতিটি স্টলের সামনেই পর্যাপ্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা ছিল কেনাকাটায় ব্যস্ত। প্রতিদিনের মতো এ দিন সকাল থেকেই মেলায় কসমেটিক্স, গার্মেন্টস, ফ্যাশন, জুয়েলারি, ফার্নিচার ও ক্রোকারিজ স্টলগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। উত্তরা থেকে মেলায় এসেছেন রিনা নামে এক দর্শনার্থী। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, মেলা প্রায় শেষের দিকে কাজের ব্যস্ততায় মেলায় আসা হয়নি। তাই কেনাকাটা করতে মেলায় আসলাম। মুনিয়া নামের অপর এক দর্শনার্থী বলেন, এর আগে মেলায় ঘুরতে এসেছি। আজ কেনাকাটার ইচ্ছা আছে। দেখি কী কেনা যায়। এ ছাড়া মেলায় অনেক পণ্য আছে, তাই যাচাই করেই পণ্য কিনব। তবে মেলায় খাবারের মান আর মূল্য নিয়ে বিতর্ক থাকায় বিক্রি কমেছে আগের চেয়ে। কেন বিক্রি কমেছে এমন প্রশ্নের জবাবে নান্না বিরিয়ানি এন্ড কাবাব হাউসের পরিচালক শান্ত বলেন, প্রথম দিকে অনেক স্টলে মূল্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। এর প্রভাব এখনো আছে, লোকসানে চলছে ব্যবসা। তবে আগামীতে বিক্রি বাড়বে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার পর্দা নামবে। মেলার গেট ও বিভিন্ন স্টল প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। এবারই প্রথম মেলার টিকেট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। মেলায় প্যাভিলিয়ন, মিনি-প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৬০৫টি। এর মধ্যে রয়েছে প্যাভিলিয়ন ১১০টি, মিনি-প্যাভিলিয়ন ৮৩টি ও রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য স্টল ৪১২টি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App