×

মুক্তচিন্তা

জঙ্গিবাদ দমনে প্রয়োজন সামাজিক প্রতিরোধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:২৫ পিএম

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাঠোর অবস্থানের মধ্যেও জঙ্গি তৎপরতা থেমে নেই। জঙ্গিরা নানাভাবে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। দেশের লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক হত্যার পরিকল্পনা করছে। তবে আশার কথা, জঙ্গিদের অঘটন পরিকল্পনা আগেই নস্যাৎ করা যাচ্ছে, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বড় সাফল্য।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) চার সদস্যকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিরা একটি জাতীয় দৈনিকে বিয়ে নিয়ে প্রকাশিত লেখাকে আপত্তিকর মনে করে ওই দৈনিকের সম্পাদককে হত্যার চেষ্টা করছিল।

এ ছাড়া আনসারুল্লাহর শীর্ষ নেতা জসিমউদ্দিন রহমানীকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে কারাগারে হামলার প্রস্তুত নিচ্ছে সংগঠনটি। গত শুক্রবার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় র‌্যাব। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছরের মাঝামাঝি দেশের স্বনামধন্য একটি জাতীয় দৈনিকে বিয়ে সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।

ওই নিবন্ধে হাদিস নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে এমন দাবি করে তারা ওই পত্রিকার সম্পাদককে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ জন্য তারা গোপনে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিল। তবে চেষ্টা সফল হওয়ার আগেই র‌্যাব সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।

২০১৫ সালে গ্রন্থমেলার সময় লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাসহ কয়েকটি জঙ্গি হামলা ও হত্যার পেছনে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম জড়িত বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের দাবি। ওই বছর মে মাসে সরকার এ জঙ্গি দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের তৎপরতার খবর প্রথম আসে

২০১৩ সালে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যাকাণ্ডের পর। সংগঠনটির আমির মুফতি জসিমউদ্দিন রাহমানী ওই মামলার রায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাভোগ করছেন। আনসারুল্লাহ নিষিদ্ধ হওয়ার পর এ দলের সদস্যরা আনসার আল ইসলাম নামে তৎপরতা শুরু করে বলে সে সময় খবর দেন গোয়েন্দারা।

পরে ২০১৭ সালের মার্চে আনসার আল ইসলামকেও সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বর্তমান সরকার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। বলা যায় দেশে জঙ্গি তৎপরতা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগাম তথ্য নিয়ে বেশকিছু জঙ্গি আস্তানায় সফল অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে।  এই তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে।

জঙ্গি ধরপাকড়ের সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করতে হবে নতুন করে জঙ্গিবাদে যুক্ত হওয়ার ধারাও। পাশাপাশি জঙ্গি দমন অভিযান ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত থাকা অবস্থায় নব্য জেএমবি বা অন্য জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর গোপন তৎপরতা কীভাবে ও কিসের জোরে চলতে পারছে, তা গভীরভাবে জানার চেষ্টা করা দরকার।

জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন কখনোই পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, তাদের জনবল সংকটও কখনো স্থায়ী হয়নি। আমরা মনে করি, জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হলে এদের তৎপরতাও কমে যাবে। জঙ্গিদের যে অর্থ তা খুব একটা দেশের বাইরে থেকে আসে না। অভ্যন্তরীণ লেনদেনের মাধ্যমেই জঙ্গিদের হাতে অর্থ যায়। এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App