×

মুক্তচিন্তা

অমর একুশে গ্রন্থমেলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৭:৫৩ পিএম

১৯৫২ সালের এই মাসে মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল বাঙালি। সেই ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের সূচনা এবং পরিণতিতে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। ফেব্রুয়ারি তাই আমাদের জাতীয় চেতনার উন্মেষের স্মারক একটি মাস।

এই মাসটি এলে আমরা অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হই, ভাষা-সংস্কৃতির প্রতি আবেগে আপ্লুত হই এবং অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, উদার চেতনায় নতুন করে উজ্জীবিত হই। এ মাসে নানা উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা তা ফুটিয়ে তোলারও চেষ্টা করি। ফেব্রুয়ারি মাসে অমর একুশে গ্রন্থমেলা আমাদের তেমনি একটি জাতীয় কৃত্যের অংশ হয়ে গেছে।

বলা যায়, বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের চাঞ্চল্য অনেকটাই একুশে গ্রন্থমেলাকেন্দ্রিক। গতকাল ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিনে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফেব্রুয়ারির এই এক মাস রাজধানীর বাংলা একাডেমি ও তৎসংলগ্ন মেলা প্রাঙ্গণ থাকবে পাঠক-লেখক, ক্রেতা-দর্শক নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের পদচারণায় মুখর।

বাংলা একাডেমি থেকে জানানো হয়েছে, এবারের গ্রন্থমেলার প্রতিপাদ্য ‘বিজয় : বায়ান্ন থেকে একাত্তর (নবপর্যায়)’। একই সঙ্গে ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের যাত্রাও শুরু হবে এই মেলা থেকে।

মেলার মূল অংশ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণটির নামকরণ করা হয়েছে ভাষাশহীদ বরকতের নামে। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণকে চারটি ভাগ করে উৎসর্গ করা হয়েছে ভাষাশহীদ সালাম, রফিক, জব্বার ও শফিউরের নামে। গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশ নেয়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে।

একটি উদ্বেগের ব্যাপার যে, একুশে গ্রন্থমেলায় প্রতি বছরই নতুন বই আসার হার বাড়ছে, কিন্তু মানসম্মত বইয়ের সংখ্যা তেমন বাড়ছে না। যেনতেনভাবে নতুন বই মেলায় আনার প্রবণতায় মানহীন বই, তথ্য ও মুদ্রণত্রুটিযুক্ত বইয়ে বাজার ভরে যাচ্ছে। তাই মেলাকেন্দ্রিকতা থেকে বের হয়ে বছরজুড়ে নতুন বই প্রকাশ অব্যাহত রাখলে লেখক-প্রকাশকরা মেলার সময়ের বাড়তি চাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন এবং প্রকাশনার প্রতি যথাযথ মনোযোগী ও যত্নশীল হওয়ার সুযোগ পাবেন।

পাশাপাশি অমর একুশে গ্রন্থমেলা চলাকালীন সংলগ্ন এলাকায় কোনো রকম নিরাপত্তা ঘাটতি ও ব্যবস্থাপনাজনিত দুর্বলতা যাতে না থাকে সেটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

শুধু পর্যাপ্ত র‌্যাব-পুলিশ মোতায়েনই যথেষ্ট নয়, তাদের সার্বক্ষণিক ও ত্বরিত তৎপরতা নিশ্চিত করতে হবে। লেখক, পাঠক ও প্রকাশকদের নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশাসন সতর্ক থাকবে- উৎসবমুখর হবে গ্রন্থমেলা, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App