×

জাতীয়

ডিএসসিসির সিইও ও মেয়রের পিএসের গাড়ি বিলাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:৪২ এএম

ডিএসসিসির সিইও ও মেয়রের পিএসের গাড়ি বিলাস
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোস্তাফিজুর রহমান ও মেয়রের একান্ত সচিব (পিএস) মোস্তফা কামাল মজুমদার নিয়ম ভঙ্গ করে গাড়ি সুবিধা নিচ্ছেন। প্রেষণে আসা দুই কর্মকর্তাকে সংস্থাটির পক্ষ থেকে নিজেদের যাতায়াতের জন্য একটি করে গাড়ি দেয়া হলেও তারা পরিবার-পরিজনের ব্যবহারের জন্য আরেকটি করে দামি গাড়ি ব্যবহার করছেন। যা সিটি করপোরেশনের গাড়ি ব্যবহার নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। শুধু তাই নয়, এসব গাড়ির জ্বালানি হিসেবেও শত শত লিটার পেট্রোল খরচ করা হচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে। তা ছাড়া ওই দুটি গাড়ির চালকও সংস্থাটির বেতনভুক্ত কর্মচারী। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে ডিএসসিসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হলেও পদস্থ দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলছেন না। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। পরে এ প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়ে ম্যাসেজ পাঠানো হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। অনুসন্ধানে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মোস্তাফিজুর রহমান নিজে ব্যবহারের জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে একটি গাড়ি সুবিধা পাবেন। সেই অনুযায়ী ঢাকা মেট্রো-গ-১৫-৫১৬৪ গাড়িটি তিনি ব্যবহার করছেন। কিন্তু তিনি এ সংস্থায় যোগদানের পর থেকেই সরকারি আরেকটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-১৮-০২০৭) পরিবারের জন্য সার্বক্ষণিক ব্যবহার করছেন। এ গাড়িটির জন্য ডিএসসিসির কোষাগার থেকে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ লিটার পেট্রোলও বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। একইভাবে মেয়রের একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) মোস্তফা কামাল মজুমদারও একটি গাড়ি নিজে ব্যবহার করছেন। এর পাশাপাশি তার পরিবারের ব্যবহারের জন্য নিয়েছেন আরেকটি গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-গ-১৮-০২০৫)। এ গাড়ির জন্যও ডিএসসিসির পক্ষ থেকে দৈনিক ২০-২৫ লিটার পেট্রোল বরাদ্দ করা হচ্ছে। এ হিসেবে ডিএসসিরি পক্ষ থেকে প্রতি মাসে একেক জনের পরিবারের গাড়ি জ্বালানি বাবদ কমপক্ষে ৭৫ হাজার টাকা গুণতে হচ্ছে। এ ছাড়া এসব গাড়ির জন্য একজন করে চালকও নিয়োজিত রয়েছেন। তাদের বেতনও করপোরেশন থেকে দেয়া হয়। অথচ তারা ওই দুই কর্মকর্তার বাসাবাড়িতে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, সরকারি গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা প্রগতি থেকে একটি পাজারো স্পোর্টস কেনা হয়েছে। ডিএসসিসির কোষাগার থেকে সেই অনুযায়ী সব অর্থ পরিশোধ করা হলেও গাড়িটি চলে যায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায়। সেখান থেকে একদিনের জন্যও নগর ভবনে আসেনি। সংস্থার পক্ষ থেকে শুধু গাড়ির খরচ বহন করা হচ্ছে। বিষয়টি সর্বোচ্চ পর্যায় (মেয়র) পর্যন্ত অবগত থাকলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তারা আরো জানান, মেয়রের পিএস হিসেবে চলতি দায়িত্বে আছেন মোস্তফা কামাল মজুমদার। তিনি একইসঙ্গে প্রধান ক্রয় ও ভাণ্ডার কর্মকর্তা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধান ভাণ্ডার কর্মকর্তা হিসেবে এর আগে কোনো যুগ্ম সচিবের দায়িত্ব পালনের নজির নেই। তিনি নিজের ক্ষমতা আর অনৈতিক সুবিধা নিতেই একসঙ্গে দুটি পদ ধরে রেখেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়রের পিএস মোস্তফা কামাল মজুমদার ভোরের কাগজকে বলেন, আমার কাছে দুটি গাড়ি থাকে না। একটি নিয়মিত থাকে আর অন্যটি মাঝে মধ্যে নিয়ে থাকি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App