×

জাতীয়

যশোর থেকে চার দেশে রপ্তানির টার্গেট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০২:২১ পিএম

যশোর থেকে চার দেশে রপ্তানির টার্গেট
৪ দেশে রপ্তানি বাজার ধরতে কন্ট্রাক ফার্মিয়ের মাধ্যমে যশোরে প্রায় ১৫ হাজার টন বাঁধাকপি (পাতাকপি) প্রস্তুত করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের কারিগরি সহায়তায় ও মাঠপর্যায়ের তদারকিতে যশোরে আন্তর্জাতিক মানের সবজি উৎপাদনের আওতায় এসেছেন ৫৮৬ জন কৃষক। এ অঞ্চলে বাঁধাকপির দাম কমে যাওয়ার মুহূর্তে এই রপ্তানি টার্গেট হাতে নেয়া হয়েছে। ঢাকার রিফাত এগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেডসহ দেশের ৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিদেশি বায়ারদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে। যশোরের জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও সলিডারিড্যাট বাংলাদেশ কৃষকদের গ্রæপ তৈরি করছেন। রপ্তানি টার্গেট অর্জিত হলে বাঁধাকপি থেকে যশোরের কৃষকরা প্রায় ৩ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবেন বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ। যশোর সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির শুরুতে নিরাপদ ও রপ্তানির জন্য মানসম্পন্ন বাঁধাকপি ৪ দেশ সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে পাঠানোর জন্য ১৫ হাজার টন বাঁধাকপি প্রস্তুত করা হয়েছে। শীতের শুরুতেই ওই ৪ দেশের সবজি ব্যবসায়ী ও বায়ারদের সঙ্গে সমন্বয় করছে ঢাকার রিফাত এগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেডসহ দেশের নামি-দামি ৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। যশোর কৃষি বিভাগের মাধ্যমে যশোরের চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের ৫৮৬ জন সবজি চাষির সঙ্গে চুক্তি করেছেন তারা। জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও সলিডারিড্যাট বাংলাদেশ কৃষকদের গ্রুপ তৈরি করেছে। সূত্রের তথ্যানুয়ায়ী, চলতি মাস ও আগামী মাস মিলিয়ে ৩০ লাখ পিসের মতো বাঁধাকপি রপ্তানির জন্য প্রস্তুত থাকছে। রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা কপির জন্য কৃষকদের পরিবহন ও প্রসেসিং খরচ কমিয়ে সরাসরি মাঠে চলে যাবে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি। যশোর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরি সহায়তায় উল্লিখিত দুটি স্বনামধন্য এনজিও চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের তৃণমূল পর্যায়ের কৃষককে ১০-২০ জনের গ্রুপে কন্ট্রাক ফার্মিংয়ের আওতায় এনেছে। উত্তম ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল নানা সাপোর্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বাঁধাকপি তৈরি করা হয়েছে। এক একটি কপির ওজন কমপক্ষে দেড় কেজি, যা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের চাহিদামাফিক ওজন। যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক মানের কপি উৎপাদন হয়েছে এ-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছেন। ঢাকার রিফাত এগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেডসহ ৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ওই প্রত্যয়নের আলোকে কপি সংগ্রহ করবে। গত দুই বছরের মতো চায়না বাঁধাকপির বাজার টপকে যশোরের বাঁধাকপি সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ানের বাজারে পৌঁছে গেলে কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখবে। উচ্চ মূল্যের ফসলের মধ্যে বাঁধাকপি হৈ চৈ ফেলে দেবে গোটা কৃষি সেক্টরে। রপ্তানিযোগ্য করতে প্যাকেজিংয়ের আগে যশোর সদরের আব্দুলপুরের কৃষিপণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কেন্দ্রসহ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টরিতে নিয়ে বাছাই ও প্যাকেটজাত করা হবে। জানুয়ারির শুরুতেই বাঁধাকপি ওই ৪ দেশে যাওয়ার প্রক্রিয়া তৈরি ছিল। কিন্তু চায়না বাঁধাকপি ওই দেশগুলোতে ঢুকে বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। এরপরও এবার ৩ কোটি টাকার বাঁধাকপি রপ্তানির টার্গেট রয়েছে। এ ব্যাপারে যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খালিদ সাইফুল্লাহ জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মানসম্মত সবজি তথা বাঁধাকপি উৎপাদন সরাসরি মনিটরিং করছে উপজেলা কৃষি অফিস। কারিগরি সহায়তায় উৎপাদন কাজ অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। উত্তম ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট শতভাগ সফল হচ্ছে। দেশের মধ্যে যশোর থেকেই বাণিজ্যিকভাবে কপি রপ্তানি গৌরবের ধরাবাহিকতা রক্ষায় বায়ারদের সঙ্গে সমন্বয় করছে ৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এ ধারা অব্যাহত থাকলে যশোর, তথা সারা দেশের বাঁধাকপি নিঃসন্দেহে উচ্চ মূল্যের সবজি হিসেবে সমধিক পরিচিতি পাবে। তিনি আরো জানান, বাঁধাকপি ছাড়াও বেগুন ও ফুলকপির চালান রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর একে একে টমেটো, শিম, করলা, উচ্ছে, পেঁপে, মাশরুম, মরিচ বীজ, কলা, লিচু, কুল, পেয়ারা, ভুট্টা, আমলকি, এলভেরা, পিপুল, কালমেগ, চুইঝাল, গাছ আলু, নারকেলসহ ২০ ধরনের উচ্চ মূল্যের ফসলও রপ্তানিতে প্রাধান্য পাবে। তবে কৃষি বিভাগের নানা সাফল্যকে ছাপিয়ে ধারাবাহিকভাবে সাফল্য আনছে বাঁধাকপি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App