×

মুক্তচিন্তা

এই অভিযান অব্যাহত থাকুক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৫৫ পিএম

দেশের নদীগুলোর অবস্থা যে শোচনীয় তা নদীর সার্বিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করলেই বোঝা যায়। এর পেছনে দখলদারিত্ব থেকে শুরু করে নানা অনিয়ম জড়িত। বিশেষ করে ঢাকার চারপাশের শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ ও বালু- এই চার নদীর দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়ে ওঠে দখল ও দূষণের মহোৎসব।

ভূমিদস্যুদের দখলবাজি, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্লিপ্ততা এবং নাগরিক সচেতনতার অভাবে নদীগুলোতে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। অথচ একটি নদীমাতৃক দেশে এই অবস্থা হওয়ার কথা ছিল না। দূষণ ও দখলের এ উৎসব বন্ধে সরকার কঠোর না হলে প্রতিটি নদী মানুষের জন্য এক সময় অভিশাপের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

আমরা মাঝে মাঝে দেখি উচ্ছেদ অভিযানের খবর। তবে এই অভিযান টেকসই নয়। বুড়িগঙ্গা ও তুরাগের অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আজ থেকে বড় ধরনের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ার কথা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উদ্যোগে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এ অভিযানে ৫৬টি বহুতল ভবনসহ প্রায় ৬শ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

এখন দেখার বিষয় এই উচ্ছেদ অভিযান কতটা সফল হতে পারে। ঢাকা ও আশপাশের নদী অবৈধ দখল এবং দূষণমুক্ত করতে উচ্চ আদালত বেশ কয়েকবার নির্দেশ দিয়েছেন; কিন্তু দখল বা দূষণ কোনোটাই বন্ধ হয়নি। কার্যকর হচ্ছে না সঠিক স্থানে সীমানা পিলার স্থাপন ও উচ্ছেদ অভিযান।

ফলে ঢাকাকে ঘিরে থাকা চার নদীর অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। নদী বাঁচাতে তীরবর্তী জায়গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ ১২ দফা নির্দেশনা দেন আদালত। নির্দেশনা অনুযায়ী নদীর অবৈধ জায়গা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দখলমুক্ত করার কথা বলা হয়। নদীকে দূষণমুক্ত করতে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। নদীর পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, বনায়ন, পাড় বাঁধানো এবং সর্বোপরি নদীর সীমানা নির্ধারণ করতে পিলার স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়।

এসব কাজ দ্রুত করার জন্য বিআইডব্লিউটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর, ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু নদী দখল ও দূষণ থেমে নেই। প্রায় প্রতিদিনই নদীদূষণ ও দখলের খবর পত্রিকায় আসে। নদীদূষণ ও দখল এখন নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এভাবে নদী দখল ও দূষিত করে মানুষ পরিবেশের ক্ষতি তো করছেই, সেই সঙ্গে নিজেদের বিপদও ডেকে আনছে।

আমরা মনে করি, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নদী নিয়ে যে সমস্যাগুলো আছে তা সমাধানে সরকারকে কাজ করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক স্বার্থের কাছে নদীর যে কোনো ধরনের উন্নয়ন ব্যাহত হোক এমনটা প্রত্যাশিত নয়। নদী দূষণমুক্ত করা ও দখল প্রক্রিয়া বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীরও নির্দেশ রয়েছে। যেভাবেই হোক দ্রুত কাজ শুরু করে নদীগুলোকে দখল ও দূষণমুক্ত করতে হবে। কারণ নদী বাঁচলে পরিবেশ বাঁচবে। পরিবেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App