×

মুক্তচিন্তা

পাক-ভারত যুদ্ধের শিক্ষা যুদ্ধের ময়দানেও মানবতার ছোঁয়া

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:২০ পিএম

প্রাচীর ভেঙে বের হওয়া মানুষের মমত্ববোধ ছেয়ে যাক আমাদের মানবতার পরিমণ্ডলকে, ছুঁয়ে যাক আমাদের ভেতরে পোষা দানবতাকে। পাকিস্তান ভারতের শত্রু ছিল, কিন্তু যুদ্ধবন্দি মেহেদী ভারতের পানাগের রক্ষিত আমানত ছিল। তার এই দায়িত্ববোধ এসেছিল মানবতার সিঁড়ি বেয়ে। এই মানবতাকেই আমি আহ্বান করছি যুদ্ধের সব ময়দানে। যুদ্ধকে ঘৃণা করা যায়, কিন্তু যুদ্ধে অংশ নেয়া মানুষকে মানবতা দিয়ে জয় করা যায়।

ভারতের প্রতিরক্ষা জার্নালের জানুয়ারি ২০১৯ সংখ্যাটি নানাভাবে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তার মধ্যে বিশেষ একটি লেখা আমাকে নতুন করে আলোকিত করে আমাদের স্বাধীনতার এত বছর পরও। ভারতের একজন ব্যাংকার কানাডার একটি ব্যাংকে কর্মরত আছেন। তিনিই আমাকে এই জার্নালটি উপহার দেন। তার মনে হয়েছিল, এটি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম একটি দলিল বটে।

এই সংখ্যায় ১৯৭২ সালের তৎকালীন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল (পরবর্তী সময় ফিল্ড মার্শাল) স্যাম মানেকশ এবং পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল টিক্কা খানের মধ্যে অনুষ্ঠিত ১৯৭১ সালের যুদ্ধশেষের সামরিক সমঝোতার বিষয়ে একটি কৌতূহলী এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রবাহ ছিল।

বিষয়টি ভারত এবং পাকিস্তান নিয়ে হলেও বাংলাদেশ ছিল তাদের আলোচনার এবং সমঝোতার কেন্দ্রবিন্দু উপাখ্যান। সামরিক এবং রাজনৈতিকভাবে সেই সমঝোতা ভারত এবং পাকিস্তানের জন্য যতটাই না গুরুত্বপূর্ণ ছিল, ততটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। কিন্তু পাকিস্তানের অনীহার কারণে সেই সমঝোতা সভায় কখনো বাংলাদেশের প্রতিনিধিকে আহ্বান করা হয়নি।

পাঠকের সুবিধার জন্য শুরু থেকেই বর্ণনা করছি। ২৯ নভেম্বর ১৯৭২। ভারতের জেনারেল মানেকশ ভারতের এয়ার ফোর্সের টিইউ-১২৪ ভিআইপি বিমানে চড়ে উড়ে গেলেন পাকিস্তানের লাহোরে। মানেকশকে লাহোর বিমানবন্দরে ডার্ক কালো চশমা পরিহিত পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল টিক্কা খান অভ্যর্থনা জানালেন।

যাত্রাকালে মানেকশ একই বিমানে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে আহত এবং বন্দিকৃত দুই পাকিস্তানি অফিসারকে সঙ্গী করেছিলেন বন্দি বিনিময়ের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে। দুজন এয়ার ফোর্স অফিসারের একজন ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার আমজাদ আলী খান। তার এফ-১০৪ বিমানটি তৎকালীন যুদ্ধের সময় (৫ ডিসেম্বর ১৯৭১) ভারত কর্তৃক ভূপাতিত করলে আমজাদ খান ভারতের সৈনিকদের হাতে বন্দি হন।

এই আমজাদ খান পরবর্তী সময় পাকিস্তানে এয়ার ভাইস মার্শাল হিসেবে অবসরে যান। অন্য অফিসার ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ওয়াজেদ আলী খান। তার এফ-৬ বিমানটি ভারত কর্তৃক ভূপাতিত করা হয় এবং ওয়াজেদ আলী খান ভারতীয় সৈন্য কর্তৃক ধরা পড়ে। এরপর ওয়াজেদ আলী খান পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের চাকরি ছেড়ে দিয়ে কানাডা চলে যান অভিবাসন নিয়ে এবং সেখানে ২০০৪-০৯ পর্যন্ত কানাডার এমপি নিযুক্ত হন।

যাই হোক, যে কথায় ছিলাম। অভ্যর্থনা দিয়ে ভারতের সেনাপ্রধানকে পাকিস্তান সেনাপ্রধানের সাত আসনবিশিষ্ট আমেরিকান লিমোজিন গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। টিক্কা খান এবং মানেকশ গাড়ির পিছন সিটে পাশাপাশি বসেন। মানেকশর এডিসি বেহরাম (পরবর্তী সময় ব্রিগেডিয়ার হিসেবে ভারত সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন) ড্রাইভারের পাশে বসেন এবং টিক্কা খানের এডিসি তার ছেলে ক্যাপ্টেন তারিক মাহমুদ পিছনের ফলো-আপ গাড়িটি চালিয়ে যান।

কয়েক মিনিট গাড়িতে সুনসান নীরবতা- কারো কণ্ঠে কোনো শব্দ নেই। কিন্তু এভাবে বেশিক্ষণ চলতে দিলেন না মানেকশ। নীরবতা ভেঙে তিনি হাসতে হাসতে টিক্কা খানকে বললেন, টিক্কা আপনি মদ্যপান করেন না, ধূমপান করেন না, অন্য কোনো বদভ্যাসও নেই; তারপরও কেন আপনি গাঢ় কালো চশমা পরে আছেন? এটাতো আমার পরার কথা ছিল। তার এই রসিকতায় পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে বদলে গিয়ে আবহাওয়া হালকা হয়ে দাঁড়াল।

পাঞ্জাব গভর্নর গোলাম মোস্তফা তার বাসভবনে ডেলিগেটদের মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেন। মধ্যাহ্ন ভোজের আগে চমৎকার আতিথেয়তায় দেশি-বিদেশি মদ পরিবেশন করা হয়। মানেকশর মিলিটারি সেক্রেটারি লে. কর্নেল (পরবর্তী সময় লে. জেনারেল) ডিপেন্দর সিং বারবয়ের কাছে গিয়ে অনুরোধ জানায় তাকে পাকিস্তানের নিজস্ব বিখ্যাত মোরি বিয়ার পরিবেশন করতে।

বারবয় উপস্থিত সবাইকে অবাক করে দিয়ে বলে ওঠে- স্যার অনেক ছিল, কিন্তু সবই ঢাকাতে রয়ে গিয়েছে। ভারতের ডেলিগেশন রাতের আগেই লাহোর ছাড়ে; কেননা তাদের পাকিস্তানে রাত কাটানোর অনুমোদন ভারত সরকার দেয়নি।

৭ ডিসেম্বর ১৯৭২। ভারতের ডেলিগেশন দ্বিতীয় রাউন্ড আলোচনার জন্য পুনরায় লাহোরে আসেন এবং সেদিন তারা বর্ডার নির্দিষ্ট করার জন্য সেটেলমেন্টে পৌঁছেন। সভায় এক পাশে বসেন জেনারেল মানেকশ, ভারতের ডিজিএমও লে. জেনারেল ইন্দ্রজিত সিং গিল এবং অন্য পাশে বসেন টিক্কা খান এবং লাহোর কোর কমান্ডার লে. জেনারেল আবদুল হামিদ খান।

দ্বিতীয় ভিজিটে আরো দুজন পাকিস্তানি অফিসার যারা ভারতে যুদ্ধবন্দি হিসেবে ধরা পড়েছিলেন, তারাও মুক্তি পেলেন। ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর পাকিস্তানের ফ্লাইং অফিসার খলিল আহমেদ যশোরে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। ভারতের আর্টিলারি সেলে তাদের এফ-৮৬ বিমান ভূপাতিত হয় এবং তিনি ভারতের কাছে যুদ্ধবন্দি হন। একইভাবে যশোরে ভূপাতিত হন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পারভেজ মেহেদী কোরেশি (তিনি পি কিউ মেহেদী নামে অধিক পরিচিত ছিলেন)।

ভারতের ক্যাপ্টেন এইচএস পানাগ (পরবর্তী সময় লে. জেনারেল) ৪ শিখ রেজিমেন্টের এডজুটেন্ট ছিলেন, যারা সেই সময়ে যশোরে বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। পানাগ তার জিপে বসা থেকেই দেখতে পান, মেহেদী তার আহত প্লেন থেকে নেমে পড়েছেন এবং শিখ সৈন্যরা তাকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে প্রহার করছে।

লাজারস নামের ভারতীয় পাইলট মেহেদীর বিমানকে ভূপাতিত করেছিলেন। পানাগ কালবিলম্ব না করে, প্রাণের ভয় না করে দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসেন এবং মেহেদীকে উদ্ধার করেন। পানাগ মেহেদীকে চা পানের আহ্বান জানান। পানাগ এবং মেহেদীর এই মিলনকে ভারতের ৪ শিখ রেজিমেন্ট আজো তাদের মধুর স্মৃতি করে রেখেছে ছবি টানানোর মাধ্যমে।

আজো ওই রেজিমেন্টে প্রতি বছর এই দিনটি গভীরভাবে পালন করা হয় এবং ক্যাপ্টেন পানাগের সাহস ও মহানুভবতাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। এরপর মেহেদী পাকিস্তানের এয়ার ফোর্সে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি পাকিস্তানের এয়ার ফোর্স প্রধান হয়েছিলেন।

তার এয়ার চিফ পদোন্নতিতে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন ভারতের সেই পাইলট লাজারাস, যার গুলিতে তিনি ভূপাতিত হয়েছিলেন ১৯৭১-এর যুদ্ধে। প্রতিক্রিয়ায় মেহেদী জানিয়েছিলেন যে, তার এই পদোন্নতিতে তার কাছে লাজারাস এবং পানাগের অভিনন্দন ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং লোভনীয়।

অপর যুদ্ধবন্দি খলিল এরপর পাকিস্তান কাস্টমে চাকরি বদল করেন এবং একসময় যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এ সময়েই ঢাকার কাছে পাকিস্তানের উইং কমান্ডার এস এম আহমেদ তার বিমান নিয়ে ভূপাতিত হন এবং পরবর্তী সময় তাকে আর পাওয়া যায়নি। অনুমান করা হয়, তিনি বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কাছে ধরা পড়েন এবং মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অঘোষিত যুদ্ধ শুরু করলে এবং নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করলে এখানে মুক্তিবাহিনী প্রতিরোধ শুরু করে। ঠিক তখন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রায় ৪০ ভাগই ছিল বাঙালি। পাকিস্তানিরা সুকৌশলে এসব বাঙালি অফিসার ও সৈনিকদের গ্রাউন্ডেড করে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে সরিয়ে নেয়।

বহু বাঙালি অফিসার এবং সৈনিক পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ফলে এসব সৈনিক থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানের স্থাপনা এবং রণকৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে। ভারত যখন ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে সরাসরিভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, তখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ করার মতো যথেষ্ট প্রস্তুতি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছিল না।

এর আগেই মুক্তিবাহিনীর হাতে নাজেহাল হয়ে তাদের যুদ্ধক্ষমতা একেবারেই নিঃশেষের পথে ধাবিত হয়েছিল। সে সময় তেজগাঁও বিমানবন্দর তাদের এফ-৮৬ বিমান পরিচালনার একমাত্র অবলম্বন ছিল। ভারিতীয় সেনাবাহিনী তেজগাঁওকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারের জন্য অনুপযোগী করে ফেলে। পাকিস্তানের কোনো কোনো পাইলট তাদের বিমান নিয়ে বার্মা পালিয়ে যান। এক অভাবনীয় এবং অসম যুদ্ধে পরাজিত হয় পাকিস্তানি বাহিনী। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাঙালিদের হাতে আসে স্বাধীনতার পতাকা।

১৯৭২ সালে দুদফায় সমঝোতা বৈঠকে দুদেশ ভারত এবং পাকিস্তান ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরবর্তী সমঝোতায় বসলেও তখনো পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকার করে নেয়নি এবং যুদ্ধের কোনো পক্ষ করে সমঝোতা বৈঠকে যোগ দিতে বলেনি। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে। তখনো পাকিস্তানের যুদ্ধবন্দি সৈনিকরা ভারতে অবস্থান করছে। এ সংখ্যা ছিল অনেক।

যেহেতু ভারত ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল, তাই তারা সব যুদ্ধবন্দিকে তাদের কর্তৃত্বে ভারতে নিয়ে গিয়েছিল। যুদ্ধবন্দিদের চাপটি পাকিস্তানের জন্য খুব বড় একটি ইস্যু ছিল। তাই তারা ভারতের চাপে এবং তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর বিশ্ব জনমত সৃষ্টির ফলে বিশ্বনেতাদের চাপে নতি স্বীকার করে বাংলাদেশের নেতাকে নিঃশর্তে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল।

কৌশলগত কারণেই পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থিত পাকিস্তানের সেনা অংশ ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। তাই পরবর্তী সময় যুদ্ধবন্দি বিনিময় এবং বর্ডার সীমা নির্ধারণের মতো গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পাকিস্তান শুধু ভারতের সঙ্গেই বসতে চেয়েছিল।

আমার লেখার উদ্দেশ্য অন্য একটি জায়গায়। পাকিস্তান নিয়ে আমার কোনো কৌতূহল ছিল না এবং এখনো নেই। যে পাকিস্তান বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করতে পারে, যে পাকিস্তান বাঙালি মা-বোনের সম্মানহানি করতে পারে, যে পাকিস্তান বাঙালিকে কোনোদিন মানুষ হিসেবে মূল্য দেয়নি- সেই পাকিস্তানের কাছে কোনো প্রত্যাশা আমার থাকার কথা নয়।

পাকিস্তান সব সময়ই আমার কাছে ডেড ইস্যু। কিন্তু আমি দেখেছি যুদ্ধক্ষেত্রেও অন্য একটি মানবতা। যুদ্ধে পরাজিত সৈনিক যখন যুদ্ধবন্দি হয়েছে, ভারতের সেনাবাহিনী তার সঙ্গে সেই যে সম্মানজনক একটি সম্পর্ক স্থাপন করেছে তা আমার চোখে অমূল্য হয়ে ধরা দিয়েছে। পাকিস্তানের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পারভেজ মেহেদী কোরেশি তার বিমান নিয়ে ভূপাতিত হয়েছিলেন।

ভারতের ক্যাপ্টেন এইচ এস পানাগ তাকে শুধু সম্মানই জানাননি, রীতিমতো অতিথির মতো চা পানের আহ্বান করেছেন। সেই মেহেদী যখন পাকিস্তানের এয়ার প্রধান, তখন অভিনন্দনের বার্তা নিয়ে সেই ভারতীয় পাইলট এগিয়ে এসেছিলেন যার গুলিতেই মেহেদীর বিমানটি ভূপাতিত হয়েছিল।

যুদ্ধের দামামায় মানবতার এই যে নিদর্শন, তা কি আমাদের হৃদয়কে ভ্রাতৃত্ববোধে ছুঁয়ে যায় না? যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার বাইরে গিয়ে মানুষের প্রতি মানুষের এই যে সহজাত দরদ, তা কি কম মূল্য বহন করে? প্রাচীর ভেঙে বের হওয়া মানুষের মমত্ববোধ ছেয়ে যাক আমাদের মানবতার পরিমণ্ডলকে, ছুঁয়ে যাক আমাদের ভেতরে পোষা দানবতাকে।

পাকিস্তান ভারতের শত্রু ছিল, কিন্তু যুদ্ধবন্দি মেহেদী ভারতের পানাগের রক্ষিত আমানত ছিল। তার এই দায়িত্ববোধ এসেছিল মানবতার সিঁড়ি বেয়ে। এই মানবতাকেই আমি আহ্বান করছি যুদ্ধের সব ময়দানে। যুদ্ধকে ঘৃণা করা যায়, কিন্তু যুদ্ধে অংশ নেয়া মানুষকে মানবতা দিয়ে জয় করা যায়।

মেজর (অব.) সুধীর সাহা : কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App