×

মুক্তচিন্তা

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:২১ পিএম

সুরের মায়া কাটিয়ে চিরবিদায় নিলেন স্বদেশের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ কিংবদন্তি শিল্পী আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি একাধারে বীর মুক্তিযোদ্ধা, সুরকার, গীতিকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। গত মঙ্গলবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রাজধানীর নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।

এই গুণী শিল্পীর মৃত্যুর খবরে সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তার মৃত্যুতে আমরাও শোকাহত। অনেক দিন থেকেই অসুস্থ ছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। প্রধানমন্ত্রী হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হলেও দেশপ্রেমিক এই শিল্পী দেশেই চিকিৎসা নিয়েছেন।

১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। কৈশোরেই সঙ্গীতের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। ১৯৭০ সালের শেষ প্রান্ত থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্রসহ অডিও অঙ্গনে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করে গেছেন তিনি।

১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর টানা দেড় দশক শুধু দেশাত্মবোধক গান তৈরি করেছেন তিনি।

শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন ‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সেই রেললাইনের ধারে, সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’, ‘ও মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’ ‘আমার সারা দেহ খেয়গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যিখানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’, ‘আমি তোমারি প্রেমও ভিখারি’, ‘একাত্তরের মা জননী কোথায় তোমার মুক্তিসেনার দলের’ মতো কালজয়ী সব গান।

সঙ্গীতে অবদানের জন্য আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। শিল্পী হিসেবে দেশের প্রতি তার ছিল ভালোবাসা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসালমীর সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

২০১২ সালের আগস্টে বুলবুল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেয়ার পরের বছর খুন হন তার ছোট ভাই আহমেদ মিরাজ। তিনি ভাইয়ের এমন নির্মম মৃত্যু সহজে মেনে নিতে পারেননি। সঙ্গীত ভুবনে তার অবদান চির অম্লান হয়ে থাকবে। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App