×

জাতীয়

অনিয়মিতদের ভোটার করার পক্ষে উপাচার্য!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০১:০৭ পিএম

অনিয়মিতদের ভোটার করার পক্ষে উপাচার্য!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের ভোটার করার পক্ষে উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান। তবে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে কারা ভোটার ও প্রার্থী হবেন, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য এসব কথা জানান। বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত দীর্ঘ চার ঘণ্টার ওই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ১৪টি সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ^বিদ্যালয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। উপাচার্যের সভাপতিত্বে ডাকসুর গঠনতন্ত্র সংশোধন ও পরিমার্জনে গঠিত কমিটির পাঁচ সদস্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ব্রিফিংকালে উপাচার্য আরো বলেন, আলোচনায় মূলত দুটি বিষয় ছিল। নির্বাচনী আচরণবিধি আর ডাকসুর গঠনতন্ত্র এই দুই বিষয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা তাদের সুপারিশ বা বক্তব্য দিয়েছে। বেশিরভাগ ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা ভোটার হবেন, তারাই যেন প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পান। এই পয়েন্টে আমরা সবাই একমত। সভায় সহাবস্থান নিয়ে কথা হয়েছে, ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র কোথায় হবে, সে বিষয়েও কথা হয়েছে। গঠনতন্ত্রে যেভাবে বলা হবে, ভোটকেন্দ্র সেখানেই হবে। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে সিন্ডিকেটে। ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ভোটার ও প্রার্থী দুটোই হতে পারেন। তবে যারা এমফিল ও পিএইচডি করছেন, ভোট দেয়ার সুযোগ পেলেও তারা প্রার্থী হতে পারবেন না। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগে সান্ধ্যকালীন কোর্স বা অন্য কোনোভাবে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখা শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারবেন না। এ প্রেক্ষাপটে উপাচার্যের চাওয়া পূরণ করতে হলে ভোটের আগেই গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করতে হবে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও জাসদ ছাত্রলীগসহ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে হলের মধ্যে ভোটকেন্দ্র করার দাবি জানানো হয়। অন্যদিকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করার দাবি জানান ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশনসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা ভোটের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য ভোটকেন্দ্রগুলোকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনারও দাবি জানান। এ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনের ভোটার ও প্রার্থীদের বয়স নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে। দীর্ঘদিন ডাকসু নির্বাচন বন্ধ থাকায় বিশেষ বিবেচনায় প্রার্থীদের বয়সসীমা ত্রিশ বছরের মধ্যে রাখার দাবি জানান ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এখন ডিজিটাল যুগে দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম হল কেন্দ্রিক, তাই ভোটকেন্দ্র হলের মধ্যে করা হোক। তিনি আরো বলেন, ক্যাম্পাসে সহাবস্থান আছে কিন্তু ছাত্রদলকে ইতিবাচক ধারায় আসতে হবে। তাহলে তারা সহাবস্থান করতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, ছাত্রদল অন্তর্কোন্দলের কারণে ক্যাম্পাস ছেড়েছে। তাদের মধ্যে যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী তারা প্রভোস্টের মাধ্যমে হলে থাকলে আমাদের সমস্যা নেই। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসাইন বলেন, ছাত্রদলসহ সব ছাত্র সংগঠনের পক্ষে থেকে মধুর ক্যান্টিন, আবাসিক হলগুলোতে সহাবস্থানের দাবি করা হয়েছে। ভোটার এবং প্রার্থিতার ক্ষেত্রে যারা ডাকসুর ফি প্রদান করে সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। এখানে কোনো প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না। ভোটকেন্দ্র একাডেমিক ভবনে স্থানান্তরের জন্য গঠনতন্ত্র সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও বিশ্বাসযোগ্য করার দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দি বলেন, ভোটকেন্দ্র ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনে আনার জন্য প্রশাসনের কাছে অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন দাবি জানিয়েছে। আমরাও একই দাবি জানিয়েছি। একই সঙ্গে, যারা ডাকসু ও হল সংসদের জন্য ফি দেন তাদের ভোটার ও প্রার্থী করার দাবি জানানো হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App