×

মুক্তচিন্তা

কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ কার্যকর হোক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৯:২৭ পিএম

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। পরীক্ষার আগে প্রশ্নফাঁস রোধে নানা উদ্যোগ দেখা যায়। এবারো ব্যতিক্রম নয়। এবার প্রশ্ন পাঠানো হবে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ফয়েল পেপারের বিশেষ নিরাপত্তা প্যাকেটে। এই প্যাকেট ট্রেজারি বা ব্যাংকের ভল্ট থেকে কেন্দ্রে নেয়ার পথে কেউ খুললে সহজেই ধরা পড়ে যাবে। আর পরীক্ষা সামনে রেখে আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে এক মাস বন্ধ থাকছে দেশের সব কোচিং সেন্টার। প্রশ্নফাঁস রোধে সতর্কতামূলক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গত রবিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। আপাতদৃষ্টিতে উদ্যোগগুলো ইতিবাচক মনে হলেও কতটুকু কার্যকর হবে সেটা দেখার বিষয়। এবারের পরীক্ষায় সর্বমোট ২১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬০ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে দাখিলে অংশ নিচ্ছে ৩ লাখ ১০ হাজার ১৭২ জন। এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭২ জন। আর সারাদেশে মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯২টি।

দেশে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন সাধারণ ঘটনা। বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষায় এর ভয়াবহতা বেশি দেখা যায়। গত বছর অবশ্য উল্লেখ করার মতো ঘটনা ঘটেনি। এটি ইতিবাচক দিক। এর আগে প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি-জেডিসি, এসএসসি ও এইচএসসি এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা এবং চাকরির পরীক্ষার ক্ষেত্রেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসরোধে সরকারিভাবে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। তা সত্ত্বেও প্রতিবারই প্রতি পরীক্ষায় নতুন নতুন কৌশলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। উদ্বেগের সবচেয়ে বড় কারণ এখানেই।

পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে পরীক্ষার্থীদের ওপর, এমনকি তাদের অভিভাবকদের ওপর। শিক্ষিত মানুষই দেশ-জাতির নেতৃত্ব দেয়। অথচ শিক্ষার মতো একটি মৌলিক বিষয় বাংলাদেশে বিপর্যস্ত। প্রশ্নফাঁস, ভর্তি বাণিজ্য, দুর্নীতিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত আমাদের পরীক্ষা ব্যবস্থা। আকাশ-সংস্কৃতির কল্যাণে জেএসসি, এসএসসি-এইচএসসিসহ সব পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন আজ ফাঁস হয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় জীবনে গভীর অন্ধকার বয়ে আনছে।

এটা বাংলাদেশের জন্য এক অশনি সংকেত। সন্তানদের উচ্চ রেজাল্টের আশায় প্রশ্নফাঁসকারী দুর্বৃত্তদের খপ্পরে পড়েন এক শ্রেণির নৈতিকতাহীন অভিভাবকও। এই ক্ষেত্রে কিছু অভিভাবকের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আমরা মনে করি, সরকার আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হলে প্রশ্নফাঁস ঠেকানো সম্ভব। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নীতি-নৈতিকতা ও শুদ্ধাচার বিষয়ে শিখন ও প্রশিক্ষণ জোরদার করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App