×

জাতীয়

দিনাজপুরে আলুর বাম্পার ফলন : ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:১২ পিএম

দিনাজপুরে আলুর বাম্পার ফলন : ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা
দিনাজপুরে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। অতীতের চেয়ে এবার আলু উৎপাদন অনেক বেশি হলেও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আলু চাষিরা। সিন্ডিকেটের বেড়াজালেই আটকে আছে আলুর মূল্য। ফলে কৃষকের চেয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরাই লাভবান হচ্ছেন বেশি। একাধিক আলু চাষি বলেন, আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে আলু চাষ করলেও কাক্সিক্ষত লাভের মুখ দেখতে পাই না। এবার আলু চাষের মৌসুমের শুরু থেকে অনুক‚ল আবহাওয়া, কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ, রাসায়নিক সার, বীজ ও কীটনাশক সঠিকভাবে প্রয়োগ করায় উঁচু-নিচু সব ধরনের চাষযোগ্য জমিতে আলু চাষ করেন চাষিরা। মৌসুমের শুরুতেই গেলেনা, কার্ডিনাল, ডায়মন্ড, স্টারিজ, ক্যারেজ, লেডিরোসেডা, পেটনিস জাতের আলু বেশি চাষ করা হয়েছে। এসব জাতের আলুর ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকদের আলুর বীজ রোপণ করতে উৎসাহ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। দিনাজপুরে ৪৮ হাজার ৯১৪ হেক্টর জমিতে এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত আলু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। জেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ৪৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। উৎপাদনে ফলন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৮ লাখ ৬০ হাজার টন। লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত ৫ হাজার ৭১৪ টন আলু উৎপাদন হয়েছে। মোট আলু উৎপাদন হয়েছে ৯ লাখ ৭৮ হাজার ২৮০ টন। জেলার ১৩টি উপজেলার ১০২টি ইউনিয়ন এবং ৯টি পৌরসভায় বছরে আলুর চাহিদা প্রায় ৫ লাখ টন। অতিরিক্ত উৎপাদিত ৪ লাখ ৭৮ হাজার টন আলু জেলার বাইরে সরবরাহ করা হচ্ছে। আলু চাষিরা জানান, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। এ ছাড়া জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থানীয় মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে আলু বিক্রি করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ীরা। আলু চাষি মাহাতাব হোসেন বলেন, হঠাৎ বাজারে আলুর দাম কমে যাওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। গত কয়েক দিন আগেও প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) আলু প্রকার ভেদে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা বস্তা বিক্রি হয়েছে। এখন আলু বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা বস্তা। আলু চাষি দুলাল হোসেন বলেন, দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এখনো আলু তোলা শেষ হয়নি, সব আলু তোলার পর বোঝা যাবে লাভ-ক্ষতি। অনেক আলু চাষি তাদের জমি থেকে সরাসরি মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় তেমন একটা লাভ করতে পারছেন না। আলু চাষি আইনুল হক বলেন, এক বিঘা জমিতে ২০ বস্তা (৪০ মণ) আলু উৎপাদন হয়। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২০ হাজার টাকার উপর। আর ২০ বস্তা আলু বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ৮-১০ হাজার টাকা লাভ করা কঠিন হয়ে পড়ে। মধ্যস্বত্বভোগী আলু ব্যবসায়ী মোমিনুল বলেন, আমরা কৃষকের জমি থেকে কম দামে আলু কিনে ভ্যানে করে নদীতে নিয়ে ধুয়ে বস্তায় ভরি। তারপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। এখানে শ্রমিকদের খরচ দিয়েও মোটামুটি ভালোই লাভ হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App