×

মুক্তচিন্তা

অভিযুক্তরা যেন ছাড় না পায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:১৭ পিএম

গতকাল ভোরের কাগজসহ কয়েকটি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসেই প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের ধরতে মাঠে নামবে দুদক। সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তালিকা ইতোমধ্যে তৈরি করা শুরু করেছে। এমনকি তাদের স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদেরও হিসাব নেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে দুদক।

মন্ত্রী-এমপিদের হলফনামাও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে, সেখানে অসঙ্গতি পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রভাবশালী এবং শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের ধরলেই দুর্নীতির চিত্র অনেকটা পাল্টে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয় প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের দমনে দুদক কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারবে? দুদকের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে আসবে এবং অনিয়ম-দুর্নীতি হ্রাস পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২১টি বিশেষ অঙ্গীকার ছিল। যার অন্যতম ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ। যেখানে বলা হয়, ‘দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও আইনের প্রয়োগ মুখ্য হলেও তা শুধু সরকারের দায় নয়, জনগণেরও দায় রয়েছে। ইতোমধ্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাবেদ চৌধুরী তার মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে জমা দিতে বলেছেন।

এভাবে আরো কিছু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নিয়ে কাজ করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এটা খুবই ইতিবাচক উদ্যোগ। দুদক বলছে, এখন বড় ধরনের দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির মুখোমুখি করে সরকারের পাশাপাশি নিজেদের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করতে চায় দুদক। অভিযান পরিচালনায় ইতোমধ্যে যুক্ত করা হয়েছে পুলিশের সশস্ত্র ইউনিট। গঠন করা হয়েছে চৌকস এনফোর্সমেন্ট টিম।

আমরা চাই, দুদক একটি মর্যাদাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুর্নীতি দমনে সুষ্ঠু ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করুক। এ ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সব পক্ষ আন্তরিক হলে দেশকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্ত করা কঠিন হতে পারে না। রাজনৈতিক অন্যায় ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে রক্তস্নাত এক লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যে দেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, সবাই চাইলে দুর্নীতির কলঙ্কও বিসর্জন দিতে সক্ষম।

দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তরা যেন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে পার পাওয়ার চেষ্টা না করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ দেশে সব সেক্টরেই দুর্নীতিবাজরা সংঘবদ্ধ এবং প্রভাবশালী। তাই দুদক কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এখানে ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার হয়ে কাজ হবে না। প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে লড়তে হলে দুদককেও প্রয়োজনীয় আত্মরক্ষার সক্ষমতা রাখতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে দুদকের পূর্ণাঙ্গ সক্ষমতা নিশ্চিত ও প্রতিষ্ঠিত করার বিকল্প নেই।

অন্যদিকে বিভিন্ন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি অর্থাৎ নিজেদের অপরাধে যুক্ত হওয়ার অভিযোগও ইতোমধ্যে দুদকের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়েছে। এর কোনোটাই কাক্সিক্ষত নয়। দুদক কর্মকর্তা যেন আইনানুগ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনাকাক্সিক্ষত বাধা, হামলা হুমকিতে না পড়েন সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App