×

জাতীয়

হঠাৎ কেন সংলাপ?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:৪৩ এএম

হঠাৎ কেন সংলাপ?

শেখ হাসিনা

গণভবনে রাজনৈতিক দলগুলোকে শিগগিরই চা চক্রে আমন্ত্রণ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই চা চক্র নিছকই চায়ের নিমন্ত্রণ নয়, বরং নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক সংলাপ হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। একাদশ নির্বাচনকে ঘিরে বিরোধী শিবির বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিদ্যমান ক্ষোভ প্রশমনের এক মোক্ষম দাওয়াই হতে পারে এই সংলাপ। সেই সঙ্গে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংসদে ফেরার আহ্বান জানাতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। তারা জানান, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে যাত্রা শুরু করা নতুন সরকার ইতোমধ্যেই বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সমর্থন পেয়েছে। বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট জোট যতই নির্বাচন বাতিলের দাবি করুক না কেন এসব আর ধোপে টিকবে না। নির্বাচনকে ঘিরে বড় ধরনের কোনো আন্দোলন করার ক্ষমতাও তাদের নেই। অন্যদিকে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরামের দুই প্রতিনিধি সংসদে যেতে ইচ্ছুক। সবমিলিয়ে বিএনপি অনেকটাই একঘরে। এ অবস্থায় ড. কামাল হোসেনও যতই লোক দেখানো জাতীয় সংলাপের কথা বলেন না কেন, তার ডাকে কেউ আর সাড়া দেবে না। বরং তাদের কারো কোনো দাবিকে আমলে না নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার নিজেই সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে ফের সবাইকে চমকে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধীদের সঙ্গে আবারো সংলাপে বসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে সংলাপে অংশ নেয়াদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানানো হবে। গতকাল রবিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভায় সমকালীন রাজনীতির নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। এ সময় প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, এর আগে গণভবনে যারা সংলাপে অংশ নিয়েছেন, তাদের সঙ্গে আবারো আলোচনায় বসতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংলাপের আলোচ্যসূচি নিয়ে বিস্তারিত না জানালেও ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংসদে যোগ দেয়ার বিষয়ে কথা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় সেতুমন্ত্রী বলেন, ঐক্যফ্রন্ট-যুক্তফ্রন্টসহ ৭৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গণভবনে সংলাপ হয়েছিল। এখন নির্বাচন শেষ হয়েছে। আমাদের নেত্রী গতকাল (শনিবার) আমাদের সঙ্গে ওয়ার্কিং কমিটি ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ বৈঠকে বলেছেন, যাদের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে তাদের আমন্ত্রণ করবেন, আহ্বান করবেন, নিমন্ত্রণ করবেন। আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, সংলাপে ড. কামাল হোসেনসহ বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট জোটের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সংসদে যাওয়ার আহ্বান জানানো হবে। সেই সঙ্গে মন্ত্রিত্ব বঞ্চিত ১৪ দলীয় জোট নেতাদের সঙ্গেও কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এমন নজিরবিহীন উদ্যোগে সবার ক্ষোভ প্রশমিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানতে চাইলে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ভোরের কাগজকে বলেন, ঠিক সংলাপ নয়। চা চক্রের আমন্ত্রণ জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপ করেছে, তারা এবারো আমন্ত্রণ পাবে। তবে আগের সংলাপে দেয়া প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন নির্বাচনে ছিল না দাবি করে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সুব্রত চৌধুরী সংলাপে যোগ দেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক আভাস দিয়ে বলেন, সংসদে যোগদান নয়; সংলাপ হতে পারে পুনর্নির্বাচন ইস্যুতে। আর টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান জানান, এ বিষয়ে তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে মাত্র আটটি আসন পাওয়া ঐক্যফ্রন্ট শপথ না নেয়ার ঘোষণা দিয়ে অবিলম্বে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানায়। আর ড. কামাল হোসেন জোটের পক্ষ থেকে জাতীয় সংলাপ করার ঘোষণা দেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App