×

জাতীয়

শ্রীনগরে সড়ক উন্নয়নে অনিয়মের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০৪:৩৫ পিএম

শ্রীনগরে সড়ক উন্নয়নে অনিয়মের অভিযোগ
শ্রীনগরে এলজিইডির অর্থায়নে প্রাইম কোড ছাড়াই প্রায় কোটি টাকার কার্পেটিং রাস্তার কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কাজ শেষের দিনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাইজপাড়া বাজার পর্যন্ত ১৫৫ মিটার দৈর্ঘ ও ৩ মিটার পস্থ এ রাস্তাটির কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে যেনতেন ভাবে। এসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঠিকাদারের লোকজন ইউনিয়ন পরিষদের পূর্ব দিকের রাস্তায় প্রাইম কোডের কাজ শুরু করে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজটি পায় আদিব ট্রেডার্স। এ কাজের তদারকি কর্মকর্তা ছিলেন শ্রীনগর উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মমিন। দেখা যায় দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার সামনেই ধুলাবালি মিশ্রিত নিম্নমানের নূরী পাথরের সাথে ইউ,এ,ই ব্রান্ডের বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ করা হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, কার্পেটিংয়ের পূর্বে নিয়মানুযায়ী রাস্তার উপর প্রাইম কোড করার বিধান থাকলেও তা মান হয়নি। আই ওয়াস হিসেবে এজিনের দুপাশে ২ ইঞ্চি পরিমান কেরোশিন ও বিটুমিনের প্রলেপ দেয়া হলেও পুরো রাস্তা ফাকা রেখেই কার্পেটিং করা হয়েছে। এলাকার সচেতন মহল জানান, তদারকি কর্মকর্তা অধিকাংশ সময় রাস্তা কাজ থেকে দুরবর্তী স্থানে অবস্থান নেয়ায় ঠিকাদার যেনতেন ভাবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। নাম প্রকাশে অনুচ্ছিুক একজন প্রকৌশলী বলেন, প্রাইম কোড ছাড়া কার্পেটিং হলে রাস্তার স্থায়ীত্ব কম হয়। এমনকি অনেক সময় কার্পেটিং বলটে উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্থানীয় ইউসুফ আলী বলেন, এরাস্তা দিয়ে সব সময় আমাদের যাতায়েত। রাস্তার কাজটি ভাল হলে এলাকাবাসী বহুদিন এর সুফল ভোগ করবে। মুন্নি বেগম বলেন, রাস্তার কাজ খারাপ হলে সরকারী টাকা জলে যাবে দুর্ভোগ পোহাতে হবে জনগণের। ইউপি সদস্য আউয়াল ও ফারুক ঢালী বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধি ঠিকই কিন্তু অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে কোন কথাই বলা যায়না। আপনারা সাংবাদিক এসমস্ত অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরলে জনগণ উপকৃত হবে। রাস্তার কাজের অনিয়মের বিষয়ে আদিব ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী মোঃ হানিফ বেপারী বলেন, রাস্তার কাজ নিয়ম অনুযায়ীই করা হচ্ছে। ধুলাবালি মিশ্রিত নিম্নমানের পাথর ও প্রাইম কোড ছাড়া কিভাবে কার্পেটিং করা হচ্ছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন যেভাবে কাজ ধরা আছে সেভাবেই করা হচ্ছে। তদারকি কর্মকর্তা সহকারী প্রোকৌশলী মোঃ মমিন বলেন, সবই ঠিক আছে তবে কার্পেটিংয়ের উপকরন নিয়ে রাস্তায় ট্রলি চলাচল করায় প্রাইম কোড উঠে গেছে। কাজ চলাকালীন সময়ে দুরে অবস্থান করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে বিটুমিন মেশানো হচ্ছে তা দেখছি। রাস্তার চুক্তিমূল্য ও বিটুমিনের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ও রাস্তার দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রকোশলীর বক্তব্যেও গড়মিল পাওয়া যায়। চুক্তিমূল্যের বিষয়ে ঠিকাদার ৯৬ লাখ টাকা স্বীকার করলেও উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন ৫০-৬০ লাখ টাকা হতে পারে। দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রকৌশলী মোঃ মমিন বলেন, ফাইল না দেখে বলা যাবেনা। বিটুমিনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, এটা যেকোন দেশের হলেই চলে। পেনিটেশন গ্রেড নিয়েও রয়েছে পরস্পর বিরোধি বক্তব্য। উপজেলা প্রকৌশলী বলেন এই কাজের জন্য ৮০-১০০ পেনিটেশন গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার হয়েছে। পক্ষান্তরে দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী বলেন ৬০-৭০ পেনিটেশন গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। সূত্রমতে যানাযায় সাংবাদিকরা এসব তথ্য সংগ্রহ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার ও মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, কাজের অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ও তদারকি দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রোকৌশলীর সাথে কথা বলবো। কাজের অনিয়ম পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App