×

জাতীয়

সরকারের পাঁচ অগ্রাধিকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯, ১১:৪১ এএম

সরকারের পাঁচ অগ্রাধিকার

ফাইল ছবি

নতুন বছর। নতুন সরকার। নতুন পরিকল্পনা। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। নতুন আঙ্গিকে দায়িত্ব নেয়ার পরই আগামী ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা তৈরিতে ব্যস্ত সরকারের নীতিনির্ধারকরা। আর এই পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার পাবে- সুশাসন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার। সরকারের একাধিক মন্ত্রী ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন করাই সরকারের মূল দায়িত্ব। দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশকে আগামী দিনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রথম ও প্রধান পদক্ষেপ হবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা। পাশাপাশি ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত করাই হবে সরকারের প্রথম ১০০ দিনের অগ্রাধিকার। এ ব্যাপারে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, উন্নয়ন প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। এ উন্নয়ন কখনোই থামবে না। জানা গেছে, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নিতে পাঁচটি খাতকে অগ্রাধিকার দেবে নতুন সরকার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার থাকছে দারিদ্র্য দূরীকরণ। এ ছাড়া আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, বিনিয়োগ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মেগা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য সরকার বছরের শুরু থেকেই অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করবে। জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভোরের কাগজকে বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দারিদ্র্য দূরীকরণের বিকল্প নেই। শেখ হাসিনা দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস এন্ড বিজনেস রিসার্চের (সিইবিআর) বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে বিশ্বের ৪১তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। এ তালিকায় বাংলাদেশ গত এক বছরে দুই ধাপ এগিয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে ৩৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার দারিদ্র্যবিমোচন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানো, বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবে। নিজের মন্ত্রণালয়কে নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, দায়িত্বের প্রথম ১০০ দিনে তিনটি চ্যালেঞ্জকে প্রাধান্য দেব। এর মধ্যে ফাইল নিষ্পত্তির গতি বাড়ানোকেই প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি। এরপর প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করা। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হিসেবে পরিবীক্ষণ ও তদারকি জোরদার করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইশতেহারেই বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। এ ব্যাপারে তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, আওয়ামী লীগের ইশতেহার মূলত দেশের আগামী দিনের উন্নয়নের ইশতেহার। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা, সুশাসন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন চলমান প্রক্রিয়া। সরকার ১০০ দিনে এসব ক্ষেত্রে আরো মনোযোগ দেবে। নিজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এবার টার্গেট পুষ্টিমান অর্জনের। পুষ্টিমান বাড়ানোর দিকেই সরকার বিশেষ গুরুত্ব দেবে। আগামী প্রজন্ম যেন পুষ্টিহীনতায় না ভোগে এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়া সরকারের চ্যালেঞ্জ। এ কারণে নতুন সরকার গঠনের পরই এই বিষয়ে মনোযোগ দেবে সরকার। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, তিন মাসের মধ্যে প্ল্যানিং করতে হবে। আমি এবার জ্বালানিতে বেশি সময় দেব। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল। কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। এবারো এর ব্যতিক্রম হবে না। এ ব্যাপারে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, শেখ হাসিনার সরকার সবসময়ই সুশাসনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। বর্তমান সরকারও এসব বিষয়ে প্রাধান্য দেবে। নিজের মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ৫ বছরে আমার মন্ত্রণালয়ে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি বিভাগ ভালো চলছে। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্তৃপক্ষ, কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ঐকমত্যের মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিকল্পনা তৈরি করব। আমার কাজ পুরো বাংলাদেশ নিয়েই। সারা বছর নৌ চলাচল অব্যাহত রাখার জন্য নদী খনন, পলি অপসারণ, নদী শাসন কাজগুলোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে। সরকার চাইলে আগামী ১০০ দিনের মধ্যে এসব খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যাপারে জানিপপ চেয়ারম্যান ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, সুশাসন নিশ্চিত করাই হবে সরকারের প্রথম দায়িত্ব। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চারটি অগ্রাধিকার বিষয়- মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য সদ্য বিদায়ী সরকারের চলমান কাজের সঙ্গে সমন্বয় করাই অন্যতম দায়িত্ব। ডক্টর কলিমউল্লাহ বলেন, সরকার চাইলে ১০০ দিনে এই চ্যালেঞ্জ নিতে পারে। কারণ এসব ধারাবাহিক কাজ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App