×

মুক্তচিন্তা

শিশু ধর্ষণ-হত্যা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:২৩ পিএম

শিশুদের প্রতি নৃশংসতার ভয়াবহ ঘটনা কিছুদিন পরপরই আমাদের জানতে হচ্ছে। গত শনিবার রাজধানীর গেন্ডারিয়ায় দুই বছরের একটি কন্যাশিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবরে প্রকাশ, রাজধানীর গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডে একটি টিনশেড বস্তিতে মা-বাবা ও তিন বোনের সঙ্গে থাকত শিশু আয়েশা।

প্রতিদিন সকালে আয়েশার মা-বাবা কাজে যান। এই সময় সামনে গলিতে খেলে বেড়াতো শিশুটি। অন্যান্য দিনের মতো গত শনিবারও বিকেলে খেলতে বের হয় আয়েশা। সন্ধ্যার দিকে টিনশেড বস্তির পাশের চারতলা বাড়ির সামনে আয়েশার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়

আয়েশার পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা নাহিদ (৪৫) শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। পরে নাহিদ তিনতলা থেকে শিশুটিকে নিচে ফেলে হত্যা করেছে। নিহত শিশুর বাবা মামলা করলে এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে আসামি নাহিদকে সোমবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

স্কুলে, পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে বা এর বাইরেও শিশুদের অমানবিক নৃশংসতার শিকার হতে হচ্ছে। শিশু নির্যাতন, শিশু ধর্ষণ, শিশু হত্যার ঘটনা প্রায়ই পত্রিকায় দেখছি আমরা। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে শিশু নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

শিশুর প্রতি এই সহিংসতা প্রতিরোধে সমাজও যথেষ্ট মাত্রায় সচেতন নয়। বলার অপেক্ষা রখে না শিশু ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন, শিশু হত্যার এই প্রবণতার জন্য মূলত আমাদের নৈতিক ও মানবিক অধঃপতন দায়ী। এই সামাজিক অবক্ষয়ের শুরু অনেক আগে থেকেই।

এক সময় সামাজিক যে বন্ধন ও মূল্যবোধ ছিল, তা এখন অন্তর্হিতপ্রায়। শুধু ধর্ষণ নয়, সব ধরনের অন্যায়, অবিচার, অনাচারের বিরুদ্ধেই সামাজিক সংহতি প্রয়োজন। পুলিশের কোনো কোনো সদস্যের গাফিলতি, অসাধুতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।

তবে মানুষ একতাবদ্ধ ও প্রতিবাদমুখর হলে প্রশাসনও যে তার দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করতে বাধ্য হয় তার বড় উদাহরণ আয়েশা হত্যা ও ধর্ষণ মামলা। এর আগে শিশু রাজন ও রাকিব হত্যা মামলায় অপরাধীদের সর্বোচ্চ দন্ড দেয়া হয়েছে। আমরা গেন্ডারিয়ার শিশু আয়েশার ধর্ষকেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চাই।

শিশুর প্রতি যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে সব অভিভাবককে রুখে দাঁড়াতে হবে, হায়েনাদের নৃশংসতা বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কোমলমতি শিশুদের আপন মহিমায় বেড়ে ওঠার সুযোগ দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব, এই দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক হতে হবে।

রাষ্ট্র কর্তৃক শিশুদের বেঁচে থাকা এবং বিকাশের ক্ষেত্রে সর্বাত্মক নিশ্চয়তা বিধানের উল্লেখ করা হয়েছে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ৬ ধারায়। রাষ্ট্রকে তার অঙ্গীকার পূরণে সচেষ্ট থাকতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App