×

শিক্ষা

সেশন ফি পরিশোধ ছাড়া মিলছে না বই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০১:০৫ পিএম

সেশন ফি পরিশোধ ছাড়া মিলছে না বই
রাঙ্গাবালী উপজেলায় সেশন ফি পরিশোধ ছাড়া বই দিচ্ছে না বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর সেশন ফির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা। ফলে মাধ্যমিক পর্যায় সরকারের বিনামূল্যে বই বিতরণ উৎসব পরিণত হয়েছে বিভিন্ন খাতের টাকা আদায়ের হাতিয়ারে। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে প্রকাশ্যে চলছে এমন সেশন বাণিজ্য। আর এদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা। আর এসব কারণে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত পায়নি বই। উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই চিত্র বিদ্যমান। এতে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষায় সাধারণ মানুষের উৎসাহ জোগাতে সরকারের মহতী উদ্যোগ। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অনিয়ম আর দুর্নীতির নানা তথ্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্টক দেখলেই বোঝা যায় কেন এখনো এক-তৃতীয়াংশ বই বিতরণ করা হয়নি। একেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একেক ধরনের সেশন ফি আদায় করা হচ্ছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সর্বনি¤œ ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত সেশন ফিসহ ভর্তি বাবদ নেয়া হচ্ছে। রাঙ্গাবালী উপজেলায় ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ১১টি মাদ্রাসার সব ক’টিতে একই চিত্র বিদ্যমান। কাচিয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছোটবাইশদিয়া ফজলুল করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চালিতাবুনিয়া নেছারিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, চরমোন্তাজ এ ছত্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খবর নিয়ে শিক্ষার্থীর এমন দুরবস্থার চিত্র পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর এমন বাধ্যবাধকতায় অভিভাবকরা ধার-দেনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দাবি করা অর্থ দিয়ে বই নিতে বাধ্য হচ্ছে। এখনো এক-তৃতীয়াংশের বেশি বই বিতরণ করা হয়নি। এমন দৃশ্য অধিকাংশ স্কুল মাদ্রাসার। কাচিয়াবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুনজুরুল আলম জানান, উপজেলার আওতায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে সেগুলোতে নিয়মানুযায়ী ভর্তি ফি বাবদ ১ হাজার ১০০ টাকা নেয়া যাবে, সে আলোকে মৌখিকভাবে ১ হাজার ১০০ টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়ার কথা বলেছি, তবে এত টাকা কেউ দেয়নি। ছোটবাইসদিয়া ফজলুল করিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, আমরা ৫০০ টাকা সেশন ফি বাবদ নেই, টাকার জন্য কারো বই আটকানো হয়নি। সেশন ফি ৭০০ টাকার সঙ্গে অন্য চার্জ নেয়া হচ্ছে জানালেও কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ১ হাজার থেকে বারোশ টাকা নিয়েছে। তবে রোষানলের ভয়ে এসব অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। তারা আক্ষেপ করে বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে সরকারি দলের একশ্রেণির নেতাকর্মী সভাপতি ও সদস্য হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। অথচ সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় কমিটির সদস্যদের কোনো ভূমিকা নেই। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকলেসুর রহমান বলেন, এগুলো টাকা আদায় করার কৌশল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার বলেন, এ রকম কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে নেই। এভাবে টাকা নেয়ার কোনো নিয়ম নেই। সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App