×

জাতীয়

বছর শুরুর দিনেই গণধর্ষণের ঘটনায় নিন্দার ঝড়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০২:১৩ পিএম

বছর শুরুর দিনেই গণধর্ষণের ঘটনায় নিন্দার ঝড়
নতুন বছরের শুরুতেই একদল পাষণ্ডের হাতে গণধর্ষণের শিকার হলেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী এক নারী। গুরুতর আহত অবস্থায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী জানান, ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতের দিকে ১০ থেকে ১২ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে বেড়া কেটে তার বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এরপর তারা তার সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক স্বামী ও চারটি সন্তানকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এরপর তাকে বাইরে নিয়ে গণধর্ষণ করে। ওই নারীর স্বামী ও সন্তানদের কান্নাকাটি শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাদের উদ্ধার করেন। নির্বাচনে ভোট দেয়া নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে তিনি গণধর্ষণের শিকার হন বলে জানান ওই নারী। এ ঘটনায় বছরের প্রথম দিনই দেশ জুড়ে ওঠে নিন্দার ঝড়। ঘটনার প্রতিবাদ জানান নারী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এদিকে পরিসংখ্যান বলছে, বিদায়ী ২০১৮ সালে দৈনিক গড়ে ১১ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন প্রায় ৩ জন। ২০১৭ সালে ১৪ জনের বেশি নারী নির্যাতনের এবং ৩ জনের বেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৩ ও দুই জনের বেশি। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই পাওয়া যায়। এ ছাড়া মাসওয়ারি তথ্য মতে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এর সংখ্যা যথাক্রমে ৪৩১ ও ৮৯। ২০১৭ সালে ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটেছিল আগস্ট মাসে। ওই মাসে ১২৮ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়। আর জুলাই মাসে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বেশি। ৫৪৪ জন নারী জুলাই মাসে নির্যাতনের শিকার হয়। দেশে পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীর সুরক্ষা না থাকায় নারী নির্যাতন বাড়ছে বলে মনে করেন নারী ও মানবাধিকার কর্মীরা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার মূলে রয়েছে পিতৃতন্ত্র ও বৈষম্যমূলক আইন। আইনের প্রচার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকতে হবে এবং বিচার বিভাগকে জেন্ডার সেনসেটিভ হতে হবে। সারা দেশে সংঘটিত নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ব্যক্তি ও নাগরিক সমাজকে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান তিনি। বছরের শুরুতেই গণধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে আয়শা খানম বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই। মানবাধিকার কর্মী ও জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সাবেক নির্বাহী পরিচালক এডভোকেট সালমা আলী বলেন, দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার বন্ধে আইন আছে। কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও, পরিস্থিতি বিশ্লেষণে, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার দৃশ্যমান কোনো পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং বিচারহীনতার কারণে নির্যাতনের ভয়াবহতা ও নৃশংসতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App