সরকারের কাছে প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ জানুয়ারি ২০১৯, ০৮:৩১ পিএম
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। এই বিপুল জয়ের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের কাঁধে বড় দায়িত্বও অর্পিত হয়েছে। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, তা দেশের মানুষকে আরো বেশি আস্থাশীল করেছে।
ইশতেহারে বিশেষ করে গ্রামগুলোতে শহরের সুবিধা পৌঁছে দেয়া, তরুণদের কর্মসংস্থান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, তা সাধারণ মানুষ গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করেছে। এই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুব্যবস্থাপনা, বিশেষত জবাবদিহি নিশ্চিত করাই হবে নতুন সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিটি পদক্ষেপে দায়িত্বশীল ভূমিকাই হবে প্রত্যাশিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১০-এর ঘরে নিতে চান তিনি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ উপহার দেয়ার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনের আগে প্রকাশিত ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতেহারের শুরুতেই ২১ বিশেষ অঙ্গীকার ঘোষণা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হচ্ছে প্রথমত, সুশাসনকে শক্তিশালী করা, দ্বিতীয়ত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ এবং তৃতীয়ত, উন্নয়নের ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য দূর করা।
সরকারের গত মেয়াদে গুম, হয়রানিমূলক মামলা এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বাড়াবাড়ির বিষয়টি নিয়ে অনেক সময় প্রশ্ন উঠেছে। প্রত্যাশা থাকবে, এই মেয়াদে এ বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না এবং সুশাসন আরো শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে সড়ক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, অন্তর্ভুক্তি ও সমতা নিশ্চিত করা হবে। যদি অন্তর্ভুক্তি ও সমতা নিশ্চিত করতে হয়, তাহলে নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। সমঝোতা, সহিষ্ণুতা এবং পরমত শ্রদ্ধার নতুন রাজনৈতিক ধারার প্রতি মনোযোগী হতে হবে।
বিশেষভাবে আমরা দেখতে চাইব, প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দিক থেকে সব ধরনের সহযোগিতা লাভের জন্য সরকার যেন আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। সর্বোপরি গত ১০ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও বিস্তৃতি সফলভাবে এগিয়ে নিতে হবে। দেশের সব মানুষের কাছেই উন্নয়নের সুফল যেন পৌঁছে যায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের মানুষ নতুন এক প্রত্যাশায় শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেছে। কাজেই তার সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করা। একই সঙ্গে বিরোধী দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে গণতন্ত্রচর্চা বাড়াতে হবে এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা চাই, উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকুক। সংকীর্ণ ও দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের কল্যাণ চিন্তায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ায় একমত হোন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মহল। নতুন বছরে নতুন সরকারের হাতে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাবে, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।