×

অর্থনীতি

রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট আদায় বেড়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০২:২৮ পিএম

রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট আদায় বেড়েছে
গত কয়েক বছর ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের আশপাশে থাকলেও চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বেড়েছে চার শতাংশেরও কম। আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক তিনটি খাতের মাধ্যমে মূলত সরকারের রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে। গত কয়েক মাস ধরে সার্বিকভাবে রাজস্ব আদায়ে গতি মন্থরতা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এর মধ্যে ভ্যাট আদায়ে প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে কম। চলতি অর্থবছর ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। সূত্র জানায়, এর মধ্যে গত পাঁচ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয় প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আলোচ্য সময়ে আদায় হয়েছে ৩১ হাজার কোটি টাকার চেয়ে সামান্য বেশি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার প্রায় এক-চতুর্থাংশই আদায় হয়নি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায়ে গতি কিছুটা কম থাকে। এ ছাড়া আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায়ে খুব বেশি কড়াকড়ি করা হচ্ছে না। এটি ভ্যাট আদায়ে কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু আদায় এত কম হারে বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না তারাও। অবশ্য এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স¤প্রতি সরকার কয়েকটি খাতে বড় আকারের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ভ্যাট আদায়ে। সরকার স¤প্রতি এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ছাড় দিয়েছে। এনবিআর হিসাব করে দেখেছে, পুরো বছরে এ খাতের সম্ভাব্য আদায় থেকে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার ভ্যাট আদায় কমে যাবে। অন্যদিকে নির্বাচনী বছর হওয়ায় এর বাইরেও কিছু জনসম্পৃক্ত খাতে ভ্যাট ছাড় দেয়া হয়েছে। বিশেষত ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ভ্যাট ছাড় দেয়ায় মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে আদায় কমে যাবে প্রায় ৭২০ কোটি টাকা। ইন্টারনেট সেবার ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও গ্রাহক পর্যায়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ সুবিধা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরে সরকারি সিদ্ধান্তের কারণে আরো কিছু খাত থেকেও রাজস্ব আদায় কাক্সিক্ষত হারে বাড়বে না। ভ্যাটের ৬০ শতাংশের বেশি আদায় হয় ১৭৫টি বড় কোম্পানির কাছ থেকে। এসব ভ্যাট আদায় করে বৃহৎ করদাতা ইউনিট বা এলটিইউ-ভ্যাট অফিস। এর মধ্যে তামাকজাত কোম্পানি ছাড়াও গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, মোবাইল ফোন কোম্পানি, ব্যাংক, বিমা, ওষুধ, তারকা মানের হোটেল, সিমেন্ট, কোমল পানীয়, পাদুকাসহ আরো কয়েকটি খাতের কোম্পানি রয়েছে। এনবিআরের আদায়কৃত ভ্যাটের ৬০ শতাংশের ওপরে আসে এসব কোম্পানির কাছ থেকে। আবার আলোচ্য খাতগুলোর মধ্যে মোটা দাগে ভ্যাট আদায় হয় মূলত তামাকজাত কোম্পানি, গ্যাস খাত, মোবাইল ফোন খাত থেকে। এলটিইউ-ভ্যাট অফিসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, চলতি অর্থবছর মাত্রাতিরিক্ত আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বেশকিছু খাতে সরকারি সিদ্ধান্তে ছাড় দেয়ায় তা ভ্যাট আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে নানামুখী চেষ্টায় আমরা আদায় বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী মাসগুলোতে আদায় বাড়বে। তবে এনবিআরের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, গত বছর প্রথম পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিসংখ্যান কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল। এ কারণে চলতি বছর প্রবৃদ্ধির প্রকৃত চিত্র দেখা যাচ্ছে না। অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধির প্রকৃত চিত্র বুঝা যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App