×

জাতীয়

সখীপুর-বাসাইল আসনে কে হচ্ছেন সংসদ সদস্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০২ পিএম

সখীপুর-বাসাইল আসনে কে হচ্ছেন সংসদ সদস্য
সখীপুর আর বাসাইল উপজেলার মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন কে হচ্ছেন এ আসনের সংসদ সদস্য? রাজনীতিতে নবীণ কুড়ি সিদ্দিকী নাকি প্রবীণ নেতা জোয়াহেরুল ইসলাম। তারা দুজনই এবার প্রথম প্রার্থী হলেন। বয়সে একেবারেই নবীন। এলএলবি পাস করে ব্যারিস্টারি পড়ছেন। কখনই রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। তবে বাবার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতেন। এইটুকু অভিজ্ঞতা নিয়েই এবারের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর বড় মেয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কুড়ি সিদ্দিকী। এবারে তার প্রচারণায় পাশে থাকছেন বাবা আর মা নাসরিন কাদের সিদ্দিকী। সব ধরনের সভা সমাবেশে বাবা, মা ছাড়াও দলের নেতাকর্মী আছেন। জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে আবিভর্‚ত হয়েছেন প্রাচ্যের আলীগড় হিসেবে খ্যাত করটিয়ার সা’দত বিশ^বিদ্যালয় কলেজের দুবারের ভিপি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের)। তার পেছনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন সখীপুর ও বাসাইল দুই উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। জাতীয় পার্টির কাজী আশরাফ সিদ্দিকীও নিয়মিত গণসংযোগ করছেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চায় আসনটি ধরে রাখতে। আর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আসনটি পুনরুদ্ধারে মরিয়া। আসনটি মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কাদের সিদ্দিকী (বীরউত্তম) প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়ায় তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন। পরে সংসদ থেকেও পদত্যাগ করেন। শূন্য আসনে উপনির্বাচন দেয়া হলে তিনি তাতে অংশ নেন। বহুল আলোচিত-সমালোচিত সে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে তাকে পরাজিত করা হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শওকত মোমেন শাহজাহানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপরে ২০০১ সালের নির্বাচনে কাদের সিদ্দিকী তার প্রতিষ্ঠিত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা জোয়াহেরুল ইসলাম জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক এবং করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের দু’বার ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ছাত্র রাজনীতি শেষে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তৃনমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এবং জনপ্রতিনিধিরা দলমত নির্বিশেষে তার দিকে অবস্থান নিয়েছেন। বিগত তিন বছর টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যার বিচারের দাবিতে গড়ে উঠা সন্ত্রাস বিরোধী আন্দোলনে জীবনের ঝুকি নিয়ে নেতৃত্ব দেয়ায় পুরো জেলাতেই তার ভাবমূর্তি উজ্জল। তার এই সাহসী নেতৃত্ব নির্বাচনী এলাকার মানুষের মাঝে তাকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তুলেছে। টাঙ্গাইলের সখীপুর ও বাসাইল উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়ন নিয়ে টাঙ্গাইল-৮ সংসদীয় আসন। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী অধ্যক্ষ হুমায়ুন খালিদ। ১৯৭৯ সালে বিএনপির প্রার্থী মোর্শেদ আলী খান পন্নী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির টিকিটে মোর্শেদ আলী খান পন্নী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে নির্বাচিত বিএনপির প্রার্থী হন হুমায়ুন খান পন্নী। ১৯৯৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমে§দ আযম খান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে শওকত মোমেন শাহজাহান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৪ সালে বিজয়ী হওয়ায় দু’সপ্তাহের মধ্যেই শওকত মোমেন শাহজাহানের মৃত্যু হয়। শুন্য আসনে উপনির্বাচনে তার ছেলে অনুপম শাহজাহান জয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে টাঙ্গাইল ছাত্রলীগকে সুসংঘঠিত করেছি। বিরোধী দলে থাকাকালে পাঁচবার কারাবরণসহ অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। দলীয় সভাপতি তথা প্রধানমন্ত্রীর ইমেজকে কাজে লাগিয়েই বাসাইল-সখীপুরের সংগঠনকে ব্যাপকভাবে শক্তিশালি করতে পেরেছি। বাসাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী অলিদ ইসলাম ও বাসাইল পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আব্দুর রহিম আহমেদ বলেন, বাসাইল উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সকল ইউপি চেয়ারম্যানরা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ভিপি জোয়াহেরের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। একমাত্র তিনিই এ আসনে বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় এনে দিতে পারবেন। কুড়ি সিদ্দিকী বলেন, আমি রাজনীতিতে জুনিয়র হলেও আমার বাবার একটি বিশাল রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি সাধারণ মানুষের। তারা আমাকে কাছে টেনে নিয়েছে। তাদের সমর্থন পেলে আমি অবশ্যই জয়ী হবো। কাজী আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৮। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৬৮হাজার ২৪৪ এবং নারী এক লাখ ৭৮ হাজার ৯৪জন। ১২২টি কেন্দ্রে কক্ষ সংখ্যা ৭৬৭টি। এর মধ্যে স্থায়ী ৬৪৭, অস্থায়ী ১২০।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App