×

জাতীয়

ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ড.টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর ইন্তেকাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৫৮ এএম

ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ড.টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর ইন্তেকাল
গাইবান্ধা-৩(পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর)আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী, সাবেক মন্ত্রী(এরশাদ আমলে), ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের মাইক্রো-বাইলোজি বিভাগের সাবেক ডিন, গবেষক, শিক্ষাবিদ, ছয় বারের সাবেক সংসদ সদস্য, জাতীয়নেতা ড.টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাত ২.২০ টার সময় ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।(ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন)। মৃতকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বৎসর। গাইবান্ধা-৩(পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর)আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী ও ছয় বারের সাবেক সংসদ সদস্য ড.টি.আই.এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।(ইন্না নিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহী রাজিউন)।মৃত্যুকালে তার বয়য় হয়েছিল ৮৪ বৎসর। গাইবান্ধার কৃতি সন্তান ড.টি.আই.এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে পর্যায়ক্রমে ৬ (ছয়) বার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশে তিনিই একমাত্র সাংসদ যিনি কেবলমাত্র বিরতিহীনভাবে গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্লাপুর-পলাশবাড়ী) আসন হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ডিন হিসেবে থাকাকালীন তিনি হাঁস-মুরগীর সংক্রামক মরণব্যাধি "রাণীক্ষেত" রোগ নিরসনে নতুন ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে রাণীক্ষেত রোগের প্রকোপ কমে গেছে। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলায় তার পিতার নামে আহসান উদ্দিন চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। গাইবান্ধা আদর্শ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। হরিণাথপুরে ড. ফজলে রাব্বি দাখিলী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, ব্রীজ-কালভার্ট ও স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির প্রভূতি নির্মাণ-পূণ:নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগসহ নি:স্ব গরীবদের সাহায্য প্রদান, গৃহহীনকে গৃহ নির্মাণে ঢেউটিন প্রদান, শীতবস্ত্র দানসহ জনকল্যাণমূলক কাজ করার সাধ্য মতো চেষ্টা করছেন। জনসেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ "জাতীয় ব্যক্তিত্ব স্মৃতি পরিষদ" কর্তৃক ২০০৫ সালে সাবেক মূখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার স্মৃতিপদক লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের মুখপাত্র হিসেবে বিভিন্ন সময়ে ইরাক, ইরান, সিরিয়া, জর্ডান, মিশর, ওমান, সৌদি আরাবিয়া, জার্মানি, অস্ট্রোলিয়া, কানাডা, আলজেরিয়া এবং আমেরিকাতে পার্লামেন্টে ডেলিগেট হিসেবে গমন করেন। পারিবারি জীবনে তিনি ৩ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের জনক। বাংলাদেশের উত্তর জনপদের বলিষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সমাজসেবক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. টি.আই.এম ফজলে রাব্বী চৌধুরী ১৯৩৪ সালে ১ অক্টোবর গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার তালুকজামিরা গ্রামে এক মুসলিক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। ১৯৫৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এ্যানিম্যাল হ্যাজব্যনটিতে ২য় স্থান অধিকার করে বি.এস.সি (অনার্স) ডিগ্রী লাভ করেন ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। ১৯৬০ সালে আমেরিকা সরকারের বৃত্তি নিয়ে ১৯৬৩ সালে টেকসাস এন্ড এস হতে এম.এস.সি এবং ১৯৬৫ সালে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহে এ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে এসোসিয়েট প্রয়েসর হিসেবে এবং ১৯৬৯ সালে প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীকালে ১৯৭১ সালে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। এছাড়াও ডীন, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬ সালে ইংল্যান্ডের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি উলফসন কলেজের ফেলো নির্বাচিত হন। ড. রাব্বী একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ১৯৮৪ সালে তিনি তৎকালীন প্রেসিযেন্ট এইচ.এম এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপাতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ছিলেন। পরবর্তী সময় তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রী, ত্রাণ ও পূনর্বাসন মন্ত্রী ও সংস্থাপন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. ফজলে রাব্বী ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ এর দায়িত্ব পালন করেন। সভাপতি সরকারি প্রতিশ্রুতি কমিটি, কৃষি বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ড. টি আই এম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর মরদেহ আজ রাতে তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার তালুকজামিরা গ্রামে নেওয়া হবে। আগামীকাল শুক্রবার বিকাল ৩টায় তালুকজামিরা হাইস্কুল মাঠে জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App