হাসি মুখে বাড়ি ফিরল তোফা ও তহুরা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:১৮ পিএম
জন্মের পর দুই বছর দুই মাস বয়সী তোফা ও তহুরার বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। ওরা প্রথম এখানে এসেছিল আট দিন বয়সে। হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাহনূর ইসলামের অধীনে ভর্তির পর থেকে জোড়া লাগা যমজ শিশু তোফা ও তহুরাকে চিকিৎসার জন্য প্রায়ই আসতে হয় এখানে। চিকিৎসা শেষে দুই সন্তানকে নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফেরেন মা সাহিদা বেগম। চিকিৎসার জন্য চলতি বছরের ১১ জুলাই হাসপাতালে ভর্তি হয় তোফা ও তহুরা। প্রায় চার মাস চিকিৎসা শেষে মার সঙ্গে গতকাল সোমবার হাসি মুখে গাইবান্ধার বাড়িতে ফিরেছে এই দুই শিশু। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের বাগানে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজের ব্যবস্থা করে দেয় রাজু মিয়াকে। সেই জন্য দুই মেয়ের সঙ্গে এবার তার বাড়ি ফেরা হচ্ছে না। গত বছরের পহেলা আগস্ট ঢামেক হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের ২০ থেকে ২২ জন অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক চিকিৎসক ৯ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার চালান তোফা-তহুরার শরীরে। দুজনের পেটে অস্ত্রোপচার করে পায়খানার রাস্তা তৈরি ও আলাদা করা, আলাদা পায়খানা ও মাসিকের রাস্তা তৈরি, পেটের পায়খানার রাস্তা বন্ধ করাসহ এ পর্যন্ত মোট চারটি অস্ত্রোপচার করার পর এখন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ।
হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের কাছে খুবই প্রিয় তোফা ও তহুরা। তারা হাসপাতালে এলেও চিকিৎসকরা যেমন তাদের খুব আদর যত্নে রাখেন তেমনি চিকিৎসা শেষে যখন বাড়ি যায় তখনো এই দুই শিশুকে বিদায়ও দেন হাসি মুখে। গতকালও এর ব্যতয় ঘটেনি। চিকিৎসকরাতো বটেই হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিনও তোফা ও তহুরার বিদায়ের সময় গ্রুপ ফটোসেশনে অংশ নিয়েছেন।
সাহিদা বেগম জানান, মেয়েদের নিয়ে একাই বাড়ি ফিরছেন তিনি। তোফা ও তহুরার চিকিৎসার জন্য আগামী বছরের (২০১৯ সাল) ১৬ জানুয়ারি আবার হাসপাতালে আসতে হবে। দুই মেয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন সাহিদা।
তোফা ও তহুরা যেভাবে জোড়া লাগানো ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পাইগোপেগাস’। বাংলাদেশে ‘পাইগোপেগাস’ শিশু আলাদা করার ঘটনা এটি প্রথম।