×

পুরনো খবর

নাক ডাকার কারণ ও বন্ধ করার উপায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০১৮, ০৪:১৫ পিএম

নাক ডাকার কারণ ও বন্ধ করার উপায়
নাক ডাকা মোটেও আরামদায়ক কোন বিষয় নয়। নাক ডাকা সমস্যায় অনেকে ভোগেন। মাঝবয়সী ও বয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি হয়। চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে অল্পবিস্তর নাক ডাকা তেমন ক্ষতিকারক নয়। বিকট শব্দে নাক ডাকা যা বন্ধ দরজা দিয়েও পাশের ঘর থেকে শোনা যায়, তা সব বয়সেই অস্বস্তিকর। নাক ডাকার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে একটু জানলেই সহজেই বশে আসতে পারে বিরক্তিকর এই বিষয়টি। নাক ডাকার কারণ ঘুমনোর সময় নাক ও গলা দিয়ে ঠিকমতো শ্বাস বেরতে না পারলে গলা ও নাকের আশপাশের টিস্যুগুলো কাঁপতে থাকে। ফলে গর্জন বেরিয়ে আসে ক্ষণে ক্ষণে। চলুন দেখে নেয়া যাক কি কি কারণে নাক ডাকার শব্দ হয়। ওজন বেশি হলে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট টিস্যু জমে গেলে ও পেশি দুর্বল হলে নাক ডাকা শুরু করতে পারেন কেউ কেউ। বয়স বাড়লে বয়সের সাথে নাক ডাকার সম্পর্ক আছে। যত বয়স বাড়ে কণ্ঠনালী সরু হতে থাকে। ফলে নাক ডাকা শুরু হয়। শারীরিক গঠন শারীরিক গঠনের কারণে মহিলাদের থেকে পুরুষরা বেশি নাক ডাকে। সাধারণত মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের শ্বাসনালী সরু হয়। আর এই জন্যেই পুরুষ মানুষের নাক ডাকার সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। নাক ও সাইনাসের সমস্যা নাকে পলিপ থাকলে বা সাইনাসের সমস্যা থাকলে নাক ডাকা শুরু হতে পারে। মদ্যপান, ধূমপান ও নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খেলে নিয়মিত মদ্যপান, ধূমপান ও ঘুমের ওষুধ খেলে নাক ডাকা শুরু হয়। এর কারণ, পেশিগুলো অতিরিক্ত মাত্রায় ছেড়ে যায়। ঘুমের ধরন লম্বা টান টান হয়ে শুলেও নাক ডাকে অনেকে। গলার কাছে পেশিগুলো টেনে থাকে না। আলগা হয়ে যায়। ফলে, গলা থেকে নিশ্বাস বেরতে অসুবিধে হয়। কাজের চাপের কারণে অফিসের অনেক কাজ। এতটাই কাজ যে রাতে ঠিকমতো ঘুমও আসে না। যতটুকু ঘুম হয় পুরো সময়টাই নাক ডাকা চলতে থাকে। নাক ডাকা বন্ধের উপায় শোয়ার ভঙ্গি বদলান কাত হয়ে ঘুমালে নাক ডাকার সমস্যা কমে যেতে পারে। চিত হয়ে ঘুমালে গলার গলার পেশি শিথিল থাকে তাই নাক ডাকার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই যাদের চিত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস তারা কাত হয়ে ঘুমিয়ে দেখতে পারেন নাক ডাকার পরিমাণ কমে যায় কিনা। ধূমপান ছাড়তে হবে ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করতে হবে। ধূমপানের ফলে শরীরের অক্সিজেন ব্যবহারের ক্ষমতা হ্রাস পায়। যার জন্যে বাতাস বের হবার পথ সংকুচিত হয়ে যায়। এই কারণে অনেকেই নাক ডাকতে পারেন। মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন পাকস্থলিতে বেশি মাত্রায় এ্যাসিডিটির সাথে নাক ডাকার সম্পর্ক আছে। মসলাযুক্ত খাবার বেশি খেলে এ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। তাই কম মসলার খাবার খেয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন নাক ডাকার পরিমাণ কমে কিনা। অতিরিক্ত ওজন কমান যাদের ওজন বেশি তাদের উচিৎ ওজন কমানো। বেশি ওজনের কারণে গলার পথ সরু হয়ে যেতে পারে। যার ফলে শ্বাস নেবার সময় ঘর্ষণের কারণে শব্দ হয়। তাই যাদের ওজন বেশি শরীর স্থূল তাদের ওজন কমানোর উচিত। শরীরচর্চা নিয়মিত শরীরচর্চায় রক্তের চলাচল ও হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বাড়ায়। আর এতে করে ঘুমও ভালো হয়। এই কারণে নাক ডাকা কমাতে হলে প্রতিদিন শরীরচর্চার অভ্যাস করা জরুরি। বিছানা পরিষ্কার রাখুন ঘরে বিছানায় বেশি ধুলাবালি থাকলে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা হয় অনেকের। নাকের নালিতে ধুলা সংক্রমিত হয়ে নাকের পেশি ফুলে উঠতে পারে। এ কারণে নাক ডাকার শব্দ হতে পারে। তাই বিছানা ও ঘর ভালো মত পরিষ্কার রাখা দরকার। জৈবিক কারণ খুঁজুন নাকের নালিতে পুরু নরম প্রলেপ থাকা, অন্য কোনো কারণে নাকের নালি আংশিক সংকুচিত থাকা এবং জিহ্বার পেছনে বায়ুপথ সংকুচিত থাকা এই তিনটি জৈবিক কারণ নাক ডাকার উৎস হতে পারে। ঠিক কোনটি নাক ডাকার কারণ তা জানার জন্যে একজন নাক-কান-গলারোগ বিশেষজ্ঞ দেখিয়ে পরামর্শ নিন। দুশ্চিন্তা কমান অতিরিক্ত কাজের চাপ কমাতে হবে। ঘুমাতে যাবার সময় দুশ্চিন্তা কমিয়ে ফেলতে হবে। এতে ভালো কাজ দিতে পারে। তাই শোয়ার আগে এমন কিছু করুন যেন সব ধরণের দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে সুন্দর একটা ঘুম দিতে পারেন। নাক না গলা জেনে নিন আপনি নাক দিয়ে শব্দটা করছেন, নাকি গলা দিয়ে—সেটা আগে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। অনেকের ক্ষেত্রে আবার দুটাই একসঙ্গে হতে পারে। তবে নাক বা গলার যেকোনো একটায় সমস্যা থাকলে নিশ্চিন্তে আপনি নাকের ড্রপ বা গলার স্প্রে—যেকোনো একটা বাদ দিয়ে দিতে পারেন। স্থায়ী সমাধান যদি এই নাক ডাকার শব্দের কারণে খুব বেশি ঝামেলার দেখা দেয় বা মাত্রা ছাড়া হয় তাহলে আপনার উচিত এটার স্থায়ী সমাধানের পথে হাঁটা। একজন নাক-কান-গলারোগ বিশেষজ্ঞ সার্জনের কাছে যান। এখন অনেক আধুনিক চিকিৎসা দিয়ে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। লেজার রশ্মির মাধ্যমে নাকের ও জিহ্বার পেছনের শ্বাসনালির সংকুচিত অবস্থা দূর করা যায়। এই অপারেশন খুব বেশি সময়সাপেক্ষও নয়। তবে তা করতে অবশ্যই দক্ষ অস্ত্রোপচার বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App