×

মুক্তচিন্তা

হাইকোর্টের আদেশ, নির্বাচন কমিশন পালন করুক

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:২০ পিএম

দুই বছর বা এর অধিক দণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তির নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। এমনকি নিম্ন আদালতের দেয়া ওই দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন থাকলেও আপিলকারী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মর্মে এক আদেশের পর্যবেক্ষণ দিয়েছে হাইকোর্ট। দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমানসহ পাঁচজনের বিচারিক আদালতের দেয়া দণ্ড ও সাজা স্থগিত চেয়ে আবেদন খারিজ করে আদালত ওই পর্যবেক্ষণ প্রদান করে। অপর চারজন হলেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, আব্দুল ওহাব ও ব্যারিস্টার এ কে এম ফখরুল ইসলাম। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম এই পর্যবেক্ষণ দেন। এ রায়ের ফলে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আর নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো অবকাশ থাকল না। এই রায়ের আলোকে খালেদা জিয়াও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। হাইকোর্টের আদেশের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আরো প্রায় ২০ নেতা আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রসঙ্গত দুর্নীতির মামলায় নিম্ন আদালতে দণ্ডিত হন ওই পাঁচ নেতা। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ওই দণ্ড স্থগিত চেয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারায় হাইকোর্টে আবেদন করেন তারা। এদের করা পৃথক ৫টি আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, আপিল হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মামলার বিচার কাজ অব্যাহত রাখারই অংশ। আর আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ সংবিধানে নেই, যতক্ষণ না পর্যন্ত আপিল আদালতে ওই সাজা বাতিল না হয়। আর সাজা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আপিলকারী ব্যক্তি দণ্ডিত হিসেবে চিহ্নিত হন। আর দণ্ডিত ব্যক্তি যতক্ষণ না উপযুক্ত আদালত থেকে খালাস না পান ততক্ষণ পর্যন্ত তার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। ফলে আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেয়া সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদের পরিপন্থী, এ ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন। দুর্নীতি বিষয়ে আমরা ওয়াকিবহাল। কাজেই কনভিকশন মাথায় নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া সংবিধানের পরিপন্থী। সংবিধানের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রাখতে হবে। সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নৈতিক স্খলনজনিত কারণে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং মুক্তি লাভের পর পাঁচ বছর সময় অতিবাহিত না হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচন করতে পারবেন না। যারা হাইকোর্টে আবেদন করেছেন তারা দণ্ডিত। দণ্ড থেকে এখনো মুক্তিলাভ করেননি এবং তাদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর সময় অতিবাহিত হয়নি। এমতাবস্থায় সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তারা নির্বাচন করতে পারেন না। আদালতের এ সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনেরও নেই। হাইকোর্টের এই আদেশ সবার ওপরই প্রযোজ্য হবে। হাইকোর্টের আদেশ নির্বাচন কমিশন যথাযথভাবে পালন করুক এমনই প্রত্যাশা থাকলো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App