×

পুরনো খবর

আ.লীগে প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা, বিএনপিতে পিন্টুর স্ত্রী কল্পনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০১৮, ০৫:৪০ পিএম

আ.লীগে প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা, বিএনপিতে পিন্টুর স্ত্রী কল্পনা
আ.লীগে প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা, বিএনপিতে পিন্টুর স্ত্রী কল্পনা
রাজধানীর লালবাগ ও চকবাজার থানা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭ আসন। পুরান ঢাকার এই আসনটি ঘিরে রয়েছে নানা আলোচনা-পর্যালোচনা। বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন হাজি সেলিমের কাছে পরাজিত হন। বিএনপি দলগতভাবে ওই নির্বাচন বর্জন করে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী? এ নিয়ে এলাকায় রয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কারণ বর্তমান সংসদ সদস্য হাজি সেলিম বিগত ২ বছর ধরে বাকপ্রতিবন্ধী। এবার নির্বাচনে তার অংশ নেয়া অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে হাজি সেলিম নির্বাচনে অংশ না নিলেও তার ছেলে সোলায়মান সেলিম প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এই যদি হয় অবস্থা, সে ক্ষেত্রে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও হাজি সেলিমের মধ্যেকার দ্ব›দ্ব থেকেই যাবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। যার প্রভাব আগামী নির্বাচনেও পড়তে পারে। এ ছাড়া আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে মাঠে নেমেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা ও শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদ ঢাকা মহানগরীর উপদেষ্টা নাজমুল হক। তিনি বাংলাদেশ পেট্রোল ওনার্স এসোসিয়েশনেরও প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া রয়েছেন- ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ আকতার হোসেন ও ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবেক ছাত্রনেতা হাসিবুর রহমান মানিক। মহাজোট থেকে এ আসনটিতে মনোনয়ন চান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজি সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন। আর বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়ন চান সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কমটির সহসম্পাদক প্রয়াত নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহযুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, পিন্টুর ভাই নাসিমউদ্দিন আহমেদ রিন্টু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম রাসেল, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি সাবেক কমিশনার মোশারফ হোসেন খোকন, মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি মীর আশরাফ আলী আজম ও ছাত্রদল নেতা সুইট। নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে জালাল-সেলিম দ্বন্দ্বে : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে হাজি সেলিম ও মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্ব›দ্ব আরো বেড়েছে। জালাল গ্রুপ ও হাজি সেলিম গ্রুপ নামের দুটি পৃথক বলয়ে অবস্থান নেয়া এ দুই নেতার সমর্থক ও নেতাকর্মীদের বিরোধও থেমে নেই। এ ছাড়া হাজি সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জমি ও বাড়ি দখলসহ নানা অভিযোগ করে আসছেন মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গ্রæপের অনুসারীরা। আর মোস্তফা জালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ- সাধারণ মানুষের সঙ্গে তার খুব একটা সখ্য নেই। অনুসারীদের নিয়েই এলাকায় বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করেন তিনি। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তার দূরত্ব রয়েছে। ফলে এলাকাবাসী মনে করছেন, এবার নির্বাচনে সেলিম-জালালের দ্ব›দ্ব বিরাজমান থাকলে দুজনের যিনিই মনোনয়ন পান না কেন, তার পক্ষে বিজয়ী হয়ে আসা কঠিন হবে। তাই এলাকাবাসীর চাওয়া, দুই প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর বিরোধ কমানো। নইলে বিকল্প কাউকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে চাইছেন তারা। সে ক্ষেত্রে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন কবির, ব্যবসায়ী নাজমুল হক, আকতার হোসেন ও হাসিবুর রহমান মানিক আলোচনায় আছেন। পুরান ঢাকার আদি বাসিন্দা হিসেবে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ঢাকা-৭ এর প্রতিটি এলাকায় তার পোস্টার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সমানতালে প্রচার-প্রচারণাও চালিয়ে আসছেন তিনি। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আসছি। ২৪ বছর ধরে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। ২৩ বছর কাউন্সিলর থাকার সুবাদে জনগণের সেবা করে আসছি। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, আরো বৃহত্তর পরিসরে তাদের নেতৃত্ব দেন তিনি। দলের মনোনয়ন পেলে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবেন বলেও তার বিশ্বাস। এবার তৃণমূল নেতাকর্মীরাও প্রার্থী হিসেবে আমাকেই চান। প্রার্থী হিসেবে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য তিনি। ব্যবসায়ী নেতা নাজমুল হক দীর্ঘদিন ধরে নৌকার মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন। নিজ অর্থায়নে এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গেও সম্পৃক্ত তিনি। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-২ আসন থেকে দল থেকে তাকে মনোননের সুপারিশ করলেও ওই এলাকার বাসিন্দা না হওয়ায় তিনি মনোনয়ন নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে জানান। গতকাল ভোরের কাগজকে এই মনোনয়ন প্রত্যাশী জানান, লালবাগ-চকবাজার আমার নিজ এলাকা। আমি আদি ঢাকাইয়া। এ এলাকার মানুষ এবার পরিবর্তন চায়। তারা নতুন কাউকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চায়। সে ক্ষেত্রে আমি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমি শতভাগ বিশ্বস করি, আওয়ামী লীগ থেকে আমি মনোনয়ন পাব। কারণ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আকতার হোসেন বলেন, বিগত দিনের এমপিদের মাধ্যমে এলাকার মানুষের প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি। মানুষ এখন নতুন, জনপ্রিয় ও গতিশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন চাইছে। এই বিবেচনায় তাকেই দলীয় প্রার্থী করা হবে বলে আশাবাদী তিনি। হাসিবুর রহমান মানিক বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে শুরু করে বর্তমান পর্যায়ে আমি এসেছি। জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ও তৃণমূল জরিপ বিবেচনায় আনা হলে আমিই দলীয় মনোনয়ন পাব। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজি সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করলে দল এবং মহাজোটগতভাবে করলে মহাজোটের মনোনয়ন চাইবেন তিনি। তাকে প্রার্থী করা হলে জিতেও আসতে পারবেন বলে তিনি শতভাগ নিশ্চিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App