তফসিল ঘোষণার তারিখ না পেছানোর দাবি

আগের সংবাদ

নিমন্ত্রণ তালিকা থেকে বাদ সাবেক প্রেমিকরা

পরের সংবাদ

মাহমুদউল্লাহর প্রেসক্রিপশন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০১৮ , ১:২১ অপরাহ্ণ আপডেট: নভেম্বর ৭, ২০১৮ , ১:২১ অপরাহ্ণ

ওয়ানডেতে দুর্দান্ত, এমনকি হালে টি-টোয়েন্টিতেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে টাইগাররা। কিন্তু সাদা পোশাকে একেবারেই হতশ্রী চিত্র বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে বছর দুই আগে ইংল্যান্ড বধের গল্প তো বেশ পুরনে। অস্ট্রেলিয়াকে গত বছর হারানোর গল্পও এখন অতীত। বরং গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে টেস্টে বাংলাদেশের দীনতা শুরু। যা কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না কোনোভাবেই। ব্যাটিং ব্যর্থতায় একের পর এক টেস্ট হারছে বাংলাদেশ। গত চার টেস্টের ৮ ইনিংসে অলআউট হতে হয়েছে ২০০’র নিচে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২৯৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন দ্বিতীয় সেশনের আগেই ভেঙে পড়ে। যাতে সিলেট টেস্টে ১৫১ রানে হার মানে স্বাগতিকরা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, আমরা হয়তো বেশ কয়েকটি ইনিংস, পাঁচ-ছয়টি (টানা আট) ইনিংসে রান করতে পারিনি। দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারিনি। বোলাররা যথেষ্ট ভালো বোলিং করেছে। প্রতিপক্ষকে অল্প রানে আটকে ফেলছে। ব্যাটসম্যানরা ভালো করছে না। ওয়ানডে ফরমেটে ভালো ছন্দে আছে। কিন্তু ওই ডিসিপ্লিন হয়তো আমরা টেস্ট ক্রিকেটে নিতে পারছি না। টেস্ট ক্রিকেট খেলতে যেমন মানসিকতা থাকা উচিত, আমরা সেই মানসিকতা দেখাতে পারছি না। উইকেট ভালো থাকার পরও ব্যাটসম্যানরা রান করতে পারছেন না।
তাহলে এর শেষ কোথায়? মাহমুদউল্লাহর প্রেসক্রিপশন টেস্টে আমাদের ব্যাটিংয়ে শৃঙ্খলার ইস্যুতে আরো একটু সচেতন হতে হবে। নিজেদের ওপর বিশ্বাস আরো একটু বাড়াতে হবে। এই ইস্যুগুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। কারণ বেশ কয়েকটি টেস্টে আমাদের ব্যাটিং খুব বাজে হয়েছে। এখন অবশ্যই একটা উপায় বের করতে হবে।
মাহমুদউল্লাহ প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্ব পান গত জানুয়ারিতে, সাকিব চোটে পড়ায়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে শুরুটা ভালো হলেও পরে আর সেটি ধরে রাখতে পারেননি। ঢাকা টেস্টে বাজেভাবে হেরেছেন। মাহমুদউল্লাহ অধিনায়ক হিসেবে সাফল্য পাননি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। মাহমুদউল্লাহর অধিনায়কত্বের ক্যারিশমাটিক কিছু দেখা গেল না এ সিলেট টেস্টেও। বেশির ভাগ সময় টিম ম্যানেজমেন্টের বেঁধে দেয়া ছক কিংবা পরিকল্পনা ভাবনায় রেখে এগিয়েছেন। নিজ থেকেই কিছু করা কিংবা কৌশলগত দিক দিয়ে ‘আউট অব দ্য বক্স’ চিন্তা করতে তাকে কমই দেখা গেছে। যেহেতু দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ, সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত হতে পারেন নিজের ব্যাটিং দিয়ে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে তিনি ব্যর্থ। এই টেস্টে করতে পেরেছেন ১৬ রান। এ বছরে ৮ ইনিংসে তার সংগ্রহ ৫৮ রান। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য বললেন, অধিনায়কত্বের চাপ তার ব্যাটিংয়ে পড়েনি।
৪০ টেস্টের ক্যারিয়ারে মাত্র একটাই সেঞ্চুরি। মাহমুদউল্লাহ আসলেই টেস্টের জন্য কিনা, এ নিয়েও প্রশ্ন আছে অনেকের। ক্যারিয়ারের শুরুতে মূলত আটে ব্যাটিং করলেও এখন নিয়মিত চার-পাঁচে ব্যাটিং করেন। এই ব্যাটিং পজিশনের একজনের ক্যারিয়ার গড় ত্রিশের নিচে হলে তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। সর্বশেষ ২৭ ইনিংসেই ফিফটি মাত্র তিনটি। এই সময়ে ব্যাটিং গড় অবশ্য খুব বেশি হেরফের হয়নি। ক্যারিয়ার গড় ২৯.১৬, গত ২৭ ইনিংসে সেটি ২৫.১৬। অর্থাৎ এই বাস্তবতা মানতে হবে, এটাই মাহমুদউল্লাহর টেস্ট-সামর্থ্য। গতকাল ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেন, এমন ব্যর্থতা অবশ্যই একটা চিন্তার বিষয়। আমাদের এটা খুব ভালোভাবে চিন্তা করতে হবে।
কারণ এভাবে ব্যাট করতে থাকলে মনে হয় না আমরা টেস্ট ক্রিকেটে কোনো অবস্থানে থাকব। মাহমুদউল্লাহ যোগ করে বলেন, এটা আমাদের ইমেজেরও ইস্যু। আমাদের অবশ্যই শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। অন্যথায়, এভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলার কোনো মানে হয় না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়