×

জাতীয়

রাজধানীতে সপ্তাহ ধরে তীব্র গ্যাস সংকট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৪৩ এএম

রাজধানীতে সপ্তাহ ধরে তীব্র গ্যাস সংকট
রাজধানীবাসী আবারো তীব্র গ্যাস সংকটে ভুগছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে গ্যাসের তীব্র সংকটের কারণে নগরীর অনেক এলাকাতেই এখন আর চুলা জ্বলছে না। দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস সংকট চললেও গভীর রাতে কিছু সময়ের জন্য গ্যাস পাওয়া যেত। কিন্তু গত সাত দিন ধরে নগরীর অনেক জায়গায় চায়ের পানি গরম করার জন্যও সামান্য গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। ভুক্তভোগীদের টেলিফোনে তিতাস গ্যাসের অভিযোগ কেন্দ্রের কর্মকর্তারাও এখন অতিষ্ঠ। তারাও সংকটের কারণ বলতে পারছেন না। তবে তিতাসের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালীতে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) প্রকল্পের টেকনিক্যাল যন্ত্রাংশে ত্রুটির কারণে চাহিদার তুলনায় কম গ্যাস সরবরাহ হওয়ার কারণে রাজধানীতেও তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। সরবরাহ বাড়লেই সংকট কেটে যাবে। তবে সংকট কাটতে কত দিন লাগবে তা এখনই বলা সম্ভব না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিতাসের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, কক্সবাজারের মহেশখালীতে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) প্রকল্পের যন্ত্রাংশে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে। যন্ত্রাংশে সমস্যার কারণে সরবরাহ করতে পারছে না। এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে গড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করত। রাজধানীতে ১ হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গাসের চাহিদা রয়েছে। পাওয়া যেত দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। প্রকল্পের সমস্যার কারণে এখন সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণেই সংকট কিছুটা প্রকট হয়েছে। কর্মকর্তারা আরো জানান, রাজধানীতে কমবেশি গ্যাস সংকট আছেই। শীত জমে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সংকট আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্যাস সংকটের কারণে রাজধানীর পশ্চিম ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, রায়েরবাজার, কামরাঙ্গীরচর, মিরপুর, পাইকপাড়া, আজিমপুর, ঝিগাতলা, ডেমরা, শনিরআখড়া, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় গত ৩-৪ দিন ধরে গ্যাসের লাইনে গ্যাস সরবরাহ একেবারেই বন্ধ রয়েছে। এর আগে লাইনে গ্যাস থাকলেও তা না থাকার মতোই ছিল। এসব এলাকার বাসিন্দারা গ্যাস না পেয়ে বার বার তিতাস গ্যাসের অফিসে ফোন করে অভিযোগ করছেন। তারা গ্যাস না থাকার কারণ জানতে চেষ্টা করছেন। কিন্তু তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও কোনো সদুত্তর পাননি। অগত্যা ভুক্তভোগীরা এখন বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিতাস গ্যাসের অভিযোগ কেন্দ্রের কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনিও গ্যাস না থাকার কারণ সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি। তিনি জানান, নগরীর বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে শত শত অভিযোগ আসছে। আমরা এসব অভিযোগের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করছি। তবে কি কারণে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে তা আমরা জানি না। কবে নাগাদ অবস্থার উন্নতি হবে তাও আমরা জানি না। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আরমানুর রেজা ভূঁইয়া জানান, গত কয়েক দিন থেকে রাজধানীতে গ্যাসের কিছুটা সংকট চলছে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম থাকায় জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের সরবরাহ আগের চেয়ে অনেক কম। সরবরাহ কম থাকায় অনেক জায়গায় সমস্যা হচ্ছে। আগে আরপিজিসিএল জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করত। এখন কম করছে। হাজারীবাগের বাসিন্দা আমিনা বেগম জানান, গত ৪-৫ দিন ধরে তাদের এলাকায় বাসাবাড়িতে রান্না বন্ধ রয়েছে। খাবার কিনে এনে খেতে হচ্ছে। ওই এলাকার সব বাড়িতেই একই অবস্থা। সংকট শুধু বাসাবাড়িতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এর প্রভাব রাজধানীর জীবনযাত্রায়ও প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার কিনেছেন। যারা কিনতে পারেননি তারা হোটেলের খাবার কিনে খাচ্ছেন। আজিমপুর, কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বসবাসরত তার কয়েকজন স্বজনের বাসাতেও গত কয়েক দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ নেই বলে অভিযোগ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App