×

জাতীয়

রাঙ্গুনিয়ায় আমন ক্ষেতে বন্যহাতির তাণ্ডব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০৪:১৬ পিএম

রাঙ্গুনিয়ায় আমন ক্ষেতে বন্যহাতির তাণ্ডব
রাঙ্গুনিয়ায় গত এক সপ্তাহ ধরে পাকা আমন ক্ষেতে বন্যহাতির তাণ্ডবে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হাতিরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে সন্ধ্যার পর থেকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার ৪টি ইউনিয়নে বিভিন্ন বিলে হানা দিয়ে ৩০ একরের ওপরে আমনের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বন বিভাগ ও এলাকাবাসী দলবদ্ধ হয়ে রাত জেগে পাহারা, বৈদ্যুতিক বাতি জ্বেলে আলো ছড়ানো, ঢাকঢোল, পটকা ফাটিয়ে ও ফাঁকা গুলি চালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন। জানা যায়, রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের নারিশ্চা বিটের আওতায় পদুয়া, শিলক, কোদালা ও সরফভাটা ইউনিয়নের শত শত একর জমিতে আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। পাকা ধানের ঘ্রাণে ছুঁটে আসছে বনের হাতি। ১০-১৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। সাপরেজা, পদুয়া হরিহর, সরফভাটার বরখোলা পাড়া, কোদালা চা বাগান, শিলকের তৈলাভাঙ্গা বিল, খুরুশিয়া বিল ও পদুয়া মাতব্বর বাড়ি এলাকায় শত শত একর আমন ক্ষেতে প্রায় ৭০-৮০টি বন্যহাতি ৪-৫টি দলে বিভক্ত হয়ে প্রতি রাতে হানা দিচ্ছে। হাতির তাণ্ডব থেকে ক্ষেতের পাকা ধান রক্ষা করতে রাতে কৃষকের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। সাপরেজা পাড়ার করিম মেম্বারের বাড়ি এলাকায় শুক্রবার রাতে বন্যহাতির দল হানা দেয়। নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা মো. আব্দুল মন্নান ও পোমরা বিট কর্মকর্তা মো. ইউনুছের নেতৃত্বে বন কর্মচারীরা ফাঁকা গুলি চালিয়ে হাতি তাড়ান। নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা মো. আব্দুল মন্নান বলেন, কৃষকদের মাঝে বন্যহাতির আতঙ্ক চলছে। রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি বিলের কৃষকরা ক্ষেতের ফসল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। হাতির তাণ্ডব থেকে ক্ষেতের ফসল রক্ষার জন্য কৃষকরা পালা বদল করে পাহারা দিচ্ছেন। এলাকাবাসীর পাশাপাশি বন বিভাগের নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাতি তাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন। পদুয়া হরিহর গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ করিম বলেন, প্রতি মৌসুমে ধানক্ষেতে বন্যহাতির উৎপাত চলে। বনাঞ্চলে খাদ্য সংকট থাকায় বনের হাতি লোকালয় ও ধানক্ষেতে ছুটে আসছে। বেপরোয়া বন্যহাতি ক্ষেতের পাকা ধান খেয়ে এবং পায়ে পিষিয়ে সাবাড় করে। চলতি আমন ক্ষেতে ২০ একরের বেশি ধানক্ষেত নষ্ট হয়েছে। বনপ্রহরী ইসমাইল হোসেন, বনমালী মো. হুমায়ন কবীর ও বাগান মালী মো. সেলিম জানান, হাতির পাল ১৫-২০টি করে বিভক্ত হয়ে ৪টি ইউনিয়নে বিভিন্ন বিলে পৃথকভাবে হানা দেয়। এ কারণে বন বিভাগের লোকজন হাতি তাড়ানোর কাজে হিমশিম খাচ্ছেন। পদুয়া ও সরফভাটা বরখোলা পাড়ার কৃষকরা জানান, ক্ষেতের ফসল রক্ষার জন্য বন বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে অনেকাংশে ক্ষতি কম হয়েছে। আরো দুই সপ্তাহ ধানক্ষেত পাহারা দিতে পারলে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহ্লাদ চন্দ্র রায় বলেন, ধানক্ষেত রক্ষায় বন বিভাগের লোকজন কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীর সহযোগিতা নিয়ে বন্যহাতির পালকে লোকালয় থেকে ধোপাছড়ি বনাঞ্চলের দিকে তাড়ানোর চেষ্টা করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App