×

জাতীয়

প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৫২ পিএম

প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন

বাংলাদেশ সরকার

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সাত হাজার ৪১৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর উত্তরায় ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৭৩টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অনুপস্থিতিতে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসনে আমুর সভাপতিত্বে বৈঠকে ক্রয় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা সুলতানা অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। অতিরিক্ত সচিব বলেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতাধীন ‘উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ‘বিওসি’ ব্লকে ১৬-তলা বিশিষ্ট (১টি বেইসমেন্টসহ) ১০৪টি ভবনে ৮৭৩৬টি ফ্ল্যাট (৫২টি ভবনের নীট ১২৫০ বর্গফুট আয়তনের ৪৩৮টি ফ্ল্যাট এবং ৫২টি ভবনে নীট ৮৫০ বর্গফুট আয়তনের ৪৩৮৮টি ফ্ল্যাট) ‘জিটুজি’ ভিত্তিতে মালয়েশিয়া সরকারের কারিগরি ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ডিজাইন বিল্ড ট্রান্সফার পদ্ধতিতে নির্মাণের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৫০৯৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। তিনি বলেন, বৈঠকে শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (এসএফসিএল) এর সাধারণ ঠিকাদার মেসার্স কমপ্ল্যান্ট, চায়নার সঙ্গে ডিপিএম এ সীমিত আকারে ৩০ জন চাইনিজ বিশেষজ্ঞ জনবল সরবরাহের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এক বৎসর মেয়াদে চাইনিজ বিশেষজ্ঞ জনবল সরবরাহের জন্য অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেইন্যান্স অ্যাসিসট্যান্স সার্ভিস ফেস-৩ চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। বৈঠকে ‘সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদ্যমান রানওয়ে ও টেক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩৮৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মেসার্স হাল্লা অ্যান্ড মেসার্স মীর আক্তার কোম্পানি লিমিটেড। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সরকারের যৌথভাবে বাস্তবায়নকারী (৮০%-২০%) প্রটোকল নৌরুটের আওতায় ‘ডেভেলপমেন্ট অব ফেয়ারওয়ে ফ্রম সিরাজগঞ্জ-দিয়োখোয়া স্ট্রেচ অব ইন্ডো-বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড প্রটোকল রুট ফর সেভেন ইয়ার্স’ শীর্ষক কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মেমার্স, ধরিত্রী বঙ্গ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ২২৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অতিরিক্ত সচিব বলেন, বৈঠকে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ এর আওতায় রূপকল্প-১ ড্রিলিং প্রজেক্ট এর অধীনে শ্রীকাইল পূর্ব-১ এক্সপ্লোরেশন ওয়েল কার্যক্রমের জন্য গ্রুপ-১: ক্যাসিং এবং গ্রুপ-৩: ওয়েলহেড এবং এক্সমাস ট্রি ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে সাত কোটি ৬৯ লাখ টাকা। বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘শতভাগ পল্লি বিদ্যুতাযন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাকেজের আওতায় কন্ডাকটর, ইনস্যুলেটেড ৬০০ ভোল্ট এবং ১১ কেভি ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৮২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। মেসার্স বিএনটি কবল লিমিটেড এসব পণ্য সরবরাহ করবে। অতিরিক্ত সচিব বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘শতভাগ পল্লি বিদ্যুতায়ন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ (ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ)’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি প্যাজের চারটি লটে ৬৯ হাজার ৬৫৬টি ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ক্রয়ের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৩৯৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এছাড়াও ৩০১ কোটি ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের আরো তিনটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ৫টি ক্রয় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ক্রয় প্রস্তাবে ব্যয় হবে ৪৪৬ কোটি টাকা। বৈঠকে অপর দুটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক স্ব-অর্থে বাস্তবায়নাধীন ‘উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে ব্যয় কমেছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০০ কোটি ৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ব্যয় কমে হবে ১৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। একই প্রকল্পের অপর একটি প্যাকেজে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৯৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৯৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। বৈঠকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৩টি বাফার সার গুদাম তৈরির একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সেনাকল্যাণ সংস্থা। এতে ব্যয় হবে ৪২১ কোটি টাকা। এর আগে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত সচিব নাসিমা সুলতানা। এর মধ্যে ‘ঢাকা-বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি পিপিপি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এছাড়ও ‘ঢাকা রেলওয়ে সেটশন মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি পিপিপি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App