×

বিনোদন

গঙ্গা-যমুনা উৎসবে ‘মেরাজ ফকিরের মা’ ও ‘বিষঘুম’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০১৮, ১১:২৬ এএম

গঙ্গা-যমুনা উৎসবে ‘মেরাজ ফকিরের মা’ ও ‘বিষঘুম’
বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও নাট্যদলের অংশগ্রহণে গতকাল শনিবার উদ্বোধন হলো গঙ্গা-যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসব। বিকেলে শিশু সংগঠন তাল কালচারাল একাডেমির পরিবেশনার মধ্য দিয়ে মুক্তমঞ্চে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর পথনাটক পরিবেশন করে গতি থিয়েটার। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, ঢাকা স্বরকল্পন। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে বহ্নিশিখা, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নটরাজ। একক আবৃত্তি পরিবেশন করে আশরাফুল আলম, রেজীনা ওয়ালী লীনা, ফয়জুল্লাহ সাঈদ। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন আরিফ রহমান ও নবনীতা জাঈদ চৌধুরী অনন্যা। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন এবং পরীক্ষণ থিয়েটারে ছিল নাট্য প্রদর্শনী। এর মধ্যে মূল মিলনায়তনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাট্যদল অনিক মঞ্চস্থ করে তাদের নাটক ‘বিষঘুম’ এবং পরীক্ষণ থিয়েটার হলে ঢাকার নাট্যদল থিয়েটার মঞ্চস্থ করে নাটক ‘মেরাজ ফকিরের মা’। অনিক নাট্যদলের ‘বিষঘুম’ নাটকটি রচনা করেছেন জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায় এবং নিদের্শনা দিয়েছেন অরূপ রায়। নাটকটির কাহিনীতে দেখা যায়, সত্য গল্পের চেয়ে বিস্ময়কর। কখনো ভয়ঙ্করও বটে। জীবন যখন মানুষকে কোনো এক ভয়ঙ্কর সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করায়, তার আঘাতে কারো জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে সত্য মেনে নিতে পারলে অন্ধকার পেরিয়ে দেখা দেয় আলোর দিশা। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন অরূপ রায়, অংশুমান দাশগুপ্ত, গৌতম সেনগুপ্ত, রূপক চন্দ্র, কৃষ্ণন্দু চক্রবর্তী, সৈকত মুখার্জি, সুচিত্রিতা ঘোষ, শুভ্রা বোস, পায়েল রায়, পিয়ালী চট্টোপাধ্যায় ও তপতী ভট্টাচার্য। অন্যদিকে থিয়েটারের ‘মেরাজ ফকিরের মা’ নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তার প্রয়াণের পরে নাটকটির নবনির্মাণ করেন সুদীপ চক্রবর্তী। ধর্মীয় অনুভূতিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এ নাটকের কাহিনী। এক মায়ের গর্ভে জন্ম নিয়ে একজন মানুষ বেড়ে উঠেছে একটি নামে। দীর্ঘ ৩৯ বছর পর আকস্মিকভাবে সে জানতে পারে তার গর্ভধারিণী মায়ের ধর্ম আর তার ধর্ম এক নয়। ধর্ম পরিচয়ে যে ফারাক রচিত হয় তা কি মা-ছেলের সম্পর্ককে ফারাক করে দিতে পারে? ধর্মের ভিন্নতার কারণে ছেলে কি অস্বীকার করতে পারে তার মাকে? এমনি সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা এবং মানবের স্বরূপ প্রকাশের চেষ্টা করা হয়েছে এ নাটকে। নাটকে মা আলো বিবির সন্তান মেরাজ ফকির ধর্ম ব্যবসায়ীদের একজন। সংসারের সবাইকে ধর্মীয় ভন্ডামির মধ্যে আবদ্ধ রাখতে সে বদ্ধপরিকর। এমনকি তার জন্মদাত্রী মাও এর বাইরে নয়। পলাশপুর গ্রামের গেদা ফকিরের সঙ্গে ধর্ম নিয়ে ব্যবসার ক্ষেত্রে চলতে থাকে বিবাদ। ধর্মকে পুঁজি করে, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে এক অন্ধকারে নিয়ে যেতে থাকে তারা। গেদা ফকিরের আস্তানায় মেয়ের খোঁজে হাজির হয় অসুস্থ ধীরেন্দ্রলাল। তার কাছ থেকে গেদা ফকির মেরাজ ফকিরের জন্ম পরিচয় জানতে পেরে এক সুযোগ নেয়। মেরাজ ফকিরের মা একজন হিন্দু ঘরের সন্তান। যাত্রা দলের মালিক ধীরেন্দ্রলালের মেয়ে আলোর সঙ্গে ৩৯ বছর আগে মুসলমান ধর্ম মতে বিয়ে হয় মেরাজের বাবা মোজাহেরের। একজন হিন্দুর ঘরের মেয়ের পেটে মেরাজের জন্ম জানতে পেরে সে মাকে খুন করতে যায়। কিন্তু বিবেকের তাড়নায় সম্ভব হয়ে ওঠে না। এভাবেই নাটকের কাহিনী আবর্তিত হয়। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, ত্রপা মজুমদার, মজিবর রহমান জুয়েল, তানজুম আরা পল্লী, মারুফ কবির, সাইফ জোয়ারদার, আবদুল কাদের, তোফা হোসেন প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App