×

মুক্তচিন্তা

মোটরসাইকেল চালকদের থামাবে কে?

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৩৭ পিএম

ফুটপাতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করতে নতুন করে উদ্যোগ নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। ফুটপাতের মাঝখানে লোহার পাইপ কিংবা বাঁশ পুঁতে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই যেন কাজ হচ্ছে না। ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত মোটরসাইকেল এবং বাহনটির যত্রতত্র ও বেপরোয়া চলাচল ঠেকাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি এই ব্যাপারে গণসচেতনতাও বাড়াতে হবে।

মোটরসাইকেলের চালকরা রাজধানীর বিশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরো চরমে নিয়ে যাচ্ছেন। মোটরসাইকেল চালকদের জন্য যেন কোনো আইন নেই। অনেক ক্ষেত্রে তারা সিগন্যাল তো দূরের কথা ভিআইপি সিগন্যালও মানেন না। আর রাজধানীর অধিকাংশ সড়কের ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানো যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে পথচারীরা কতটা অসহায় তা সহজেই অনুমেয়। মহানগর পুলিশ প্রশাসন ও বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর সড়কগুলোতে যে পরিমাণ যানবাহন চলাচল করার ব্যবস্থা রয়েছে এর ১০ গুণ বেশি যানবাহন চলে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ফুটপাত আবার দখল। এই দুর্ভোগের পাশাপাশি রাজধানীতে মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে আবিভর্‚ত হয়েছে মোটরসাইকেল। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নগরীতে অনেকটা বেপরোয়া গতিতে চলছেন মোটরসাইকেল চালকরা। ফুটপাতে মোটর বাইক চলাচল করায় প্রায়ই ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে নানা আলোচনার এক পর্যায়ে ২০১২ সালে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। আদালত রায় দেন, কোনো অবস্থায়ই পায়ে হাঁটার পথে মোটরবাইক চলবে না। এ আদেশের পরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। প্রথমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। পরে অ্যাকশন-মামলা। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। রাস্তায় জ্যাম হলেই ফুটপাতে মোটরসাইকেল চলতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পুলিশ প্রসাশনও পিছিয়ে নেই। ফুটপাতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করতে নতুন করে উদ্যোগ নেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। ফুটপাতের মাঝখানে লোহার পাইপ কিংবা বাঁশ পুঁতে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই যেন কাজ হচ্ছে না।

মেগাসিটি ঢাকায় প্রতিনিয়ত মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। এতে তীব্র যানজটে দিশাহারা নগরবাসী। জানা গেছে, বর্তমানে ৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল রাজধানীর সড়কে চলছে। প্রতি বছরই এই সংখ্যা বাড়ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বছরে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার নতুন মোটরসাইকেল সড়কে নামছে। দিন যত যাচ্ছে, রাজধানীর সড়কে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ততই বাড়ছে। মোটরসাইকেল একটি ঝুঁকিপূর্ণ বাহন এটি বিভিন্ন গবেষণায়ও উঠে এসেছে। চার চাকার বাহনের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ গুণ বেশি। গত ১৫ দিনে রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হন। চিত্রটি বলে দিচ্ছে ঢাকার রাস্তায় মানুষ কতটা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। মোটরযান অধ্যাদেশ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যাক্ট অনুসারেও রাস্তায় বা জনগণের চলার জায়গায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যায় না। আপাতত এই আইন ও হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত মোটরসাইকেল এবং বাহনটির যত্রতত্র ও বেপরোয়া চলাচল ঠেকাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি এই ব্যাপারে গণসচেতনতাও বাড়াতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App