×

পুরনো খবর

বিএনপিতে একক, আ.লীগে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩৫ পিএম

বিএনপিতে একক, আ.লীগে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী
মানিকগঞ্জ-৩ হচ্ছে জেলার সবচেয়ে বেশি আলোচিত আসন। সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও মানিকগঞ্জ পৌরসভা এবং সাটুরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের দীর্ঘদিন পর ২০০৮ সালে জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য পেয়েছে। মাঝখানে ১৯৯৭ সালে একবার উপনির্বাচনসহ ৮ বার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জয় পেয়েছেন ৬ বার এবং জাতীয় পার্টি জয়লাভ করেছে দুবার। গত সংসদ নির্বাচনে এ আসনে দ্বিতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বিজয়ী হন। তার সময়কালে মানিকগঞ্জে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, শহরে চার লেন , জজকোর্ট ভবন, কালীগঙ্গা ব্রিজসহ বেশ কিছু দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। এবারো এ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। তবে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে বাদ পড়া মূলধারার নেতাকর্মীরা তার জন্য একটি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বদরুল ইসলাম খান বাবলু, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক এফবিসিসিআই পরিচালক তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু, আমেরিকা প্রবাসী ড. রফিকুল ইসলামও মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে নিশ্চিত করেছেন। তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু ইতোমধ্যেই গণসংযোগের মাধ্যমে তরুণদের কাছে একজন ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। বয়স কম হওয়ায় অনেক নেতাকর্মী ইতস্তত বোধ করছেন। তবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দৌড়ে জাহিদ মালেক স্বপনের কঠিন প্রতিদ্ব›দ্বী হলেন ড. রফিকুল ইসলাম খান। তিনিই সাড়া জাগিয়েছেন বেশি। এরই মধ্যে ড. রফিক একজন নিঃস্বার্থ জনদরদি হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন শুধু সাধারণ মানুষের মধ্যেই নয়, তার এলাকার নেতাকর্মীদের মধ্যেও। বিএনপি থেকে এ আসনে দলের সভাপতি আফরোজা খান রীতাই মনোনয়ন পাবেন বলে সবাই ধরে নিয়েছেন। তার বাবা বিএনপির উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত হারুনর রশিদ খান মুন্নুর দলে অবদান এবং তার ব্যক্তিগত ক্লিন ইমেজের কারণে তিনি জেলার তিনটি আসনেই মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আরো রয়েছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি এডভোকেট জামিলুর রশিদ খান ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। এরা দুজনই মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অনেকে মনে করেন, যদি রীতাকে অন্য আসনে দেয়া হয় তবে আতাউর রহমান আতা এ আসনে হবেন একজন শক্তিশালী প্রার্থী। এদিকে জেলা জাসদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন খানও দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। ১৪ দল জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলেও তিনি এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আরো নতুন প্রার্থী যোগ হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রচুর সমর্থন রয়েছে। সুধী সমাজ ও নেতারা মনে করেন, যদি দুদলই নমিনেশনে ভুল করে তবে তার মাসুল গুনতে হবে। সবারই ধারণা, দুদলের নেতারা নিশ্চয়ই গভীর মনোযোগ সহকারে মানিকগঞ্জের ঘটনা প্রবাহের দিকে নজর রাখছেন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, মানিকগঞ্জের ৩টি নির্বাচনী আসনে নমিনেশনের জন্য সব দলের প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে যাচ্ছে। ঢাকার কাছের একটা জেলা হিসেবে মানিকগঞ্জের দিকে নজর রাখছেন সবাই। মানিকগঞ্জকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে দেখা হতো একসময়। বিগত নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় যদিও বর্তমানে বিএনপি থেকে কোনো সংসদ সদস্য নেই, তবুও রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মানিকগঞ্জে বিএনপির ভালো অবস্থানের কথা স্বীকার করেন। একসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মানিকগঞ্জ জেলার তিনটি আসনেই পর পর দুবার দখলে থাকায় তৃণমূল পর্যায়ে গোছানো আওয়ামী লীগ রয়েছে এখন ফুরফুরে মেজাজে। বিশেষ করে বর্তমান সরকারের আমলে তিনটি আসনেই হয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন। অপরদিকে নেতৃত্বের কোন্দলে এখনো অগোছালো জেলা বিএনপি। আর নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে এই সংকট আরো বাড়বে বলেই মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App