×

জাতীয়

ফারমার্স ব্যাংকের এমডিসহ সাতজনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৬:৩৫ পিএম

ফারমার্স ব্যাংকের এমডিসহ সাতজনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
ফারমার্স ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এম শামীমসহ সাতজন ঊর্ধ্বতন ব্যাংক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা স্থানান্তরের সঙ্গে ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির সম্পৃক্ততা রয়েছে, এমন অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এম শামীম, এক্সিকিউটিভ অফিসার উম্মে সালমা সুলতানা, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট শফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, প্রাক্তন ম্যানেজার অপারেশন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. লুতফুল হক, প্রাক্তন হেড অব বিজনেস ও সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট গাজী সালাউদ্দিন, প্রাক্তন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়। বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেনের সই করা চিঠি বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন), স্পেশাল ব্রাঞ্চ বরাবর পাঠানো হয়েছে। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুদক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরেছে, ওই ব্যাংক কর্মকর্তারা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই অনুসন্ধান কর্মকর্তা তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত প্রাক্তন এমডি কে এম শামীমসহ ছয় কর্মকর্তাকে সাড়ে ৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। এর আগে গত ৬ মে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুই ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন চন্দ্র সাহাকে এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবে ৪ কোটি টাকা স্থানান্তরের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ওই দিন তাদের সঙ্গে আসা তাদের দুই আইনজীবী সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, এস কে সিনহাকে তার বাড়ি বিক্রির ৪ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। আইনজীবীরা হলেন- আফাজ মাহমুদ রুবেল এবং নাজমুল আলম। আইনজীবীরা বলেন, এস কে সিনহার উত্তরার ৬ তলা বাড়িটি ৫ কাঠা জমির ওপর ছিল। এ বাড়িটি ২০১৬ সালের শুরু দিকে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা শান্ত্রি রায় ৬ কোটি টাকায় কেনেন। এ সময় বায়না দলিলকালে তিনি ২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছিলেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য নিরঞ্জন ও শাহজাহানের সহযোগিতা নেন। নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা শান্ত্রি রায়ের স্বামী রনজিতের চাচা। শাহজাহান রনজিতের বন্ধু। তারা বলেন, বাড়ি কিনতে বাকি ৪ কোটি টাকা ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে নিরঞ্জন ও শাহজাহান ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা ঋণ নেন। ঋণ পরিশোধে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে শান্ত্রি রায় জামিনদার হন। জামিনদার হিসেবে টাঙ্গাইল ও ঢাকার আশপাশের বেশকিছু জমি বন্ধক রাখেন শান্ত্রি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের মে মাসে জমির বায়না দলিল হয় এবং ওই বছরের ৮ নভেম্বর দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এস কে সিনহা সোনালী ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার মাধ্যমে ৪ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। পে-অর্ডারের পরে ২৪ নভেম্বর হস্তান্তর দলিলের মাধ্যমে বাড়িটি শান্ত্রি রায়কে বুঝিয়ে দেন। দুদক সূত্র আরো জানা যায়, ২০১৬ সালে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ২ কোটি টাকা করে মোট ৪ কোটি টাকা শাহজাহান ও নিরঞ্জন ঋণ নেন। একই বছরের ১৬ নভেম্বর সেই অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ওই ব্যক্তির ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তর করেন। ওই বিষয়ে সম্প্রতি দুদকে আসা এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তা যাচাই-বাছাই শেষে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App