‘বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন স্বাধীন দেশ, তার কন্যা দিয়েছেন অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার বাংলাদেশ। এ দেশের প্রাণ তুমি, সবার আপন তুমি। বিশ্বজুড়ে তোমার তুলনা। তুমি বদলে যাওয়া বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ঠিকানা। সাধারণে অসাধারণ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ এভাবেই গানে, ছন্দে, বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী, চিকিৎসক, শিক্ষার্থী প্রতিনিধিসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ সময় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে গান এবং তথ্যচিত্র পরিবেশন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রধানমন্ত্রীকে ‘ধন্যবাদ’ জানান। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন মজুমদার, জহির উদ্দিন জালাল (বিচ্ছু জালাল), স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী, বুলবুল মহলানবীশ, অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান, মাসুম আজিজ, কেরামত মাওলা, মান্নান হিরা, নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, অভিনেত্রী লাকি ইনাম, অরুণা বিশ্বাস, পপি, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সমাজের সর্বস্তরের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গ। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বঙ্গবন্ধু কখনো আমাদের ধন্যবাদের জন্য বসে থাকেননি। জাতির পিতা বলতেন,এ দেশের মানুষ আমার কাছে প্রথম প্রাধান্য পাবে, আমার পরিবার আমার কাছে দ্বিতীয়। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত করেছিলেন। ’৪৭ থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সর্বত্রই আমরা বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়চেতা নেতৃত্ব দেখতে পাই। এজন্য তোমাকে ‘একটি ধন্যবাদ’ দিতে চাই জাতির পিতা। জাতির জনক তুমি ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ’ নামটি আমাদের উপহার দিয়েছ, তাই তোমাকে ধন্যবাদ। স্বাধীনতার পরে দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর দক্ষ নেতৃত্বের জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। তারানা হালিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করেছেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার করে আমাদের কলঙ্ক থেকে মুক্ত করেছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছেন সে জন্য আপনাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। আমরা বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে পারিনি, আমরা যেন তার কন্যাকে রক্ষা করতে পারি। আমরা যেন তারা কন্যার পাশে থাকতে পারি, এটিই হোক আমাদের ব্রত। ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে গিয়ে বলেন, আমরা শেখ হাসিনাকে তিনভাবে জানি। একজন শেখ হাসিনা হচ্ছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি, আর একজন ছিলেন বাংলাদেশে বিরোধী দলের নেত্রী। আর একজন শেখ হাসিনা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মৃতিচারণ করে ভোরের কাগজ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবসময় সাংবাদিকদের খবর নিতেন, তাদের পরিবারের খবর রাখতেন। কোনো সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো কাজে গেলে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে জানতে চান ‘তিনি খেয়ে এসেছেন কিনা’। এ জন্য আমরা সাংবাদিক সমাজ প্রধানমন্ত্রীকে ভালোবাসি। বাংলাদেশের ১৩ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, ৭ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে এবং ৪ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রের এই ব্যাপক উন্নয়নের জন্য আমরা আপনাকে ভালোবাসি। এক হাজার ১২টি পত্রিকা বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত হয়, ঢাকা শহর থেকে দৈনিক প্রকাশিত হয় ২৭২টি পত্রিকা। বর্তমানে ৩০টি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচারে আছে। এটা আপনার জন্যই সম্ভব প্রধানমন্ত্রী, আমরা এই বাংলাদেশ উপহার দেয়ার জন্য আপনাকে ভালোবাসি এবং ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রী। শ্যামল দত্ত বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা চলছিল। তখন নামে ছিল বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ তখন চলে গেছে অনেক দূরে। জয়বাংলা তখন নেই, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ দখল করে নিয়েছে পুরো দেশ। পাকিস্তানি ধারায় তখন দেশ চলছিল। সেই দেশকে পাল্টে দেয়ার জন্য আমরা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী দলমত নির্বিশেষে শিল্পীদের পাশে দাঁড়ান, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে কোনো শিল্পী বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। এটা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর প্রধান গুণ। বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করলে আমার নিজের ছায়াকে অস্বীকার করতে হয়। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের বুকে গেঁথে আছেন, তাকে মারা যাবে না। অভিনেতা মাসুম আজিজ বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর থেকে জগদ্দল পাথর নামিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ।